কলকাতায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস

প্রচণ্ড গরমে রাস্তার পাশের ট্যাপ থেকে পানি পান করছেন এক ব্যক্তি। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি
প্রচণ্ড গরমে রাস্তার পাশের ট্যাপ থেকে পানি পান করছেন এক ব্যক্তি। ছবি: ভাস্কর মুখার্জি

তীব্র দাবদাহে জ্বলছে কলকাতা। বৃষ্টি নেই। প্রচণ্ড গরমে জীবন হাঁসফাঁস। পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় গতকাল সোমবার ঘোষণা দিয়েছেন, ২০ থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত রাজ্যের সব সরকারি বিদ্যালয়ে গ্রীষ্মের ছুটি বাড়ানো হয়েছে। একই সঙ্গে বেসরকারি বিদ্যালয়ের প্রতিও ছুটি বাড়ানোর আহ্বান জানানো হয়েছে। কলকাতায় বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এখন গ্রীষ্মের ছুটি চলছে।

গতকাল কলকাতার তাপমাত্রা ছিল সর্বোচ্চ ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের চেয়ে ৭ ডিগ্রি বেশি। গত ১০ বছরের মধ্যে জুনে এটাই সর্বোচ্চ তাপমাত্রার রেকর্ড। কলকাতার আবহাওয়া দপ্তর বলেছে, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কলকাতায় বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা নেই।

কেন্দ্রীয় আবহাওয়া বিভাগের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল (পূর্বাঞ্চল) সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, এখনো বর্ষা দুর্বল অবস্থায় রয়েছে। সাগর থেকে পুবালি হাওয়ার বদলে উত্তর ও মধ্য ভারত থেকে গরম হাওয়া ঢুকছে গাঙ্গেয় বঙ্গে। এতে শুরু হয়েছে তীব্র তাপপ্রবাহ বা দাবদাহ। এই তাপপ্রবাহ অবশ্য অন্ধ্র প্রদেশ, বিহার, ওডিশা, ঝাড়খন্ড ও গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গেও চলছে। এই তাপপ্রবাহের ছোঁয়া লেগেছে কলকাতাসহ বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, বীরভূম, পূর্ব বর্ধমান ও পশ্চিম বর্ধমানে।

গতকাল বাঁকুড়ায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪২ দশমিক ৪ ডিগ্রি, বর্ধমানে ৪১ দশমিক ৮, পুরুলিয়ায় ৪০ দশমিক ৭ এবং দমদমে ছিল ৪০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের চেয়ে ৫ ডিগ্রি বেশি।

এদিকে তীব্র দাবদাহে কলকাতার লোকজন চরম কষ্টের শিকার হয়েছে। বিশেষ করে গ্রামীণ এলাকায়। গ্রামীণ কলকাতার বহু মানুষের গৃহে শীতাতপ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা না থাকায় প্রচণ্ড গরমে হাঁসফাঁস করছে। শিশুরা সবচেয়ে বেশি ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। গরমজনিত নানা রোগের পাশাপাশি খাবারে রুচি নেই শিশুদের। গতকাল রাতে কলকাতার গ্রামগুলোয় বহু মা ঘরের বাইরে দাওয়ায় শিশুদের নিয়ে রাত কাটিয়েছেন।

আজ মঙ্গলবার সকালে এক মা জানান, গরমে সারা রাত তাঁর দেড় বছরের শিশু কান্নাকাটি করেছে। কিছুই খায়নি। মাঝরাত পর্যন্ত বাড়ির দাওয়ায় শিশুকে কোলে নিয়ে কাটিয়েছেন। শুধু কলকাতা নয়, পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণের বিভিন্ন জেলারও একই ছবি ছিল গতকাল। বৃষ্টি হয়নি। প্রচণ্ড দাবদাহে জ্বলেছে বিভিন্ন গ্রাম। সেখানে বৈদ্যুতিক পাখাতেও মানানো যায়নি প্রচণ্ড গরমকে।