জার্মানির শরণার্থী রাজনীতি নিয়ে টুইটারে ট্রাম্পের মিথ্যাচার

ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফাইল ছবি
ডোনাল্ড ট্রাম্প। ফাইল ছবি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জার্মানির শরণার্থী রাজনীতি নিয়ে হাস্যকর ও মিথ্যা টুইট করছেন। এমনটি দাবি করছে জার্মানির প্রেস এজেন্সি। তারা বলছে, সম্প্রতি অবৈধভাবে যুক্তরাষ্ট্রে আগত ব্যক্তিদের শিশুদের তাদের মা-বাবা থেকে বিচ্ছিন্ন করার নীতির পক্ষে যৌক্তিকতা তুলে ধরতেই জার্মানির শরণার্থী রাজনীতিকে উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেছেন। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জার্মানির রাজনীতি নিয়ে যে উক্তি করেছেন, তা সঠিক নয়।

সম্প্রতি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প, সিঙ্গাপুরে উত্তর কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট কিম জং-উনের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় জানিয়েছিলেন জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেলের সঙ্গে তাঁর ভালো সম্পর্ক রয়েছে। এই বক্তব্যের দুই সপ্তাহ পরেই তিনি সোমবার টুইট বার্তায় জানিয়েছেন, মার্কেলের ভুল শরণার্থী নীতির কারণেই জার্মানির সরকার সংকটে পড়েছে। ট্রাম্পের মতে অ্যাঙ্গেলা মার্কেলের শরণার্থী বিষয়ক সিদ্ধান্ত ভুল ছিল এতে করে জার্মানির জোট সরকার দুর্বল হয়ে পড়ছে এবং জার্মানির জনগণ তাদের নেতৃত্বের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন। জার্মানিতে অপরাধের হার আরও বৃদ্ধিসহ ইউরোপে লাখ লাখ শরণার্থী ও অভিবাসী শক্তি প্রয়োগ ও সহিংসতার সঙ্গে ইউরোপীয় সংস্কৃতি পরিবর্তনের চেষ্টা করছেন বলে তিনি টুইট বার্তায় জানিয়েছেন। অপর এক টুইটে তিনি জানিয়েছেন ইউরোপে অভিবাসীদের অবস্থানের ফলে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে আমরা আমাদের দেশে তা হতে দেব না।

জার্মানির প্রেস এজেন্সির বরাত দিয়ে ডের স্পিগেল পত্রিকা জানিয়েছে ইতিপূর্বে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাঁর নির্বাচনী প্রচারণার সময় ভবিষ্যৎ অভিবাসী নীতির প্রশ্নে মার্কেলের উদার শরণার্থী নীতির সমালোচনা করেছিলেন।

জার্মানির প্রেস এজেন্সি বলছে ভিন্ন কথা। তাদের বক্তব্য—বাস্তবতা হলো প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের টুইট করা তথ্যগুলো মিথ্যা ও বিভ্রান্তিমূলক। জার্মানিতে মার্কেলের শরণার্থী নীতির কারণে জার্মানরা তাঁর বিরুদ্ধাচারণ করেনি কিংবা জার্মানির তিন দলীয় জোটের মধ্যে কিছু মতান্তর থাকলেও, জোট সরকার ভেঙ্গে পড়ার মতো ঘটনা ঘটেনি। জার্মানিতে অপরাধ বিষয়ক এক পরিসংখ্যান নিয়ে গত মে মাসে জার্মানির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হস্ট সীহোফার জানিয়েছেন, জার্মানিতে অপরাধ প্রবণতা বৃদ্ধি পায়নি বরং ১৯৯২ সালের পর এই বছর সবচেয়ে কম অপরাধের ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া অপর এক পরিসংখ্যানে দেখানো হয়েছে জার্মানিতে এখনই নির্বাচন হলে চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল ৫০ শতাংশ ভোট পাবেন। মার্কেলের শরণার্থী বিষয়ক নীতিকে এখনো জার্মানির দুই তৃতীয়াংশ লোক সমর্থন করেন।

জার্মানির তিন দলীয় জোটের মধ্যে ছোট এবং রাজ্য ভিত্তিক শরিক দল খৃষ্টীয়ান সামাজিক ইউনিয়ন দলটি আগামী অক্টোবর মাসে বাভ্যরিয়া রাজ্যের, রাজ্য পার্লামেন্ট নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জার্মানির শরণার্থী নীতির পরিবর্তন চাইছে। রক্ষণশীল খৃষ্টীয়ান সামাজিক ইউনিয়ন দলটি জার্মানির সীমান্তে কোনো শরণার্থী আসার আগে অন্য কোনো দেশে ওই শরণার্থী নিবন্ধিত করে থাকলে তাদের সীমান্ত থেকে ফেরত পাঠানোর কথা বলছে। চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল এই বিষয়টি, এ মাসের শেষে অন্য ইউরোপীয় দেশগুলোর সঙ্গে বসে যৌথভাবে সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে চান।