ভারতের ঝাড়খন্ডে ৫ নারী মানবাধিকারকর্মীকে গণধর্ষণ

ভারতের পূর্বাঞ্চলের রাজ্য ঝাড়খন্ডে বন্দুকের মুখে পাঁচজন নারী মানবাধিকারকর্মীকে গণধর্ষণ করা হয়েছে। পুলিশ গতকাল শুক্রবার এ তথ্য জানিয়েছে।

সিবিএস ও এনডিটিভির খবরে বলা হয়, চারজন পুরুষ, দুজন নান ও ওই নারীরা গত মঙ্গলবার খুন্তি এলাকায় মানব পাচারের বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টির জন্য রাস্তায় প্রচার চালাচ্ছিলেন। এ সময় কমপক্ষে ছয়জন অস্ত্রধারী তাঁদের ওপর হামলা চালায়।

পুলিশ কর্মকর্তারা সিবিএস নিউজকে জানান, হামলাকারীরা পুরুষদের মারধর করে। এরপর পাঁচজন নারীকে জোর করে গাড়িতে তোলে। কাছাকাছি একটি বনে ওই নারীদের নিয়ে যাওয়া হয়। তিন ঘণ্টা ধরে তাঁদের ধর্ষণ করা হয় এবং পরে ছেড়ে দেওয়া হয়।

ঝাড়খন্ডের রাজধানী রাঁচির উপমহাপরিদর্শক হোমকার আমল ভানুকান্ত বলেন, গণধর্ষণের শিকার যাঁরা হয়েছেন, তাঁদের কাছ থেকে তাঁরা বিবৃতি নিয়েছেন। নির্যাতিত নারীরা পুলিশ কর্মকর্তাদের জানান, হামলাকারীরা মোবাইল ফোনে পুরো ঘটনার ভিডিও ধারণ করেছে। পুলিশের কাছে অভিযোগ করলে ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া হবে বলে তারা হুমকিও দিয়েছে।

পুলিশ সিবিএস নিউজকে জানায়, নারী মানবাধিকার দলের দুজন নান মানব পাচারের বিরুদ্ধে সচেতনতা সৃষ্টির কাজ করছিলেন। তবে হামলায় তাঁরা আহত হননি।

অনুমতি ছাড়া গ্রামে ঢুকে পড়ায় মানবাধিকারকর্মীদের ওপর হামলা চালানো হয়। ভারতের ওই রাজ্যে আদিবাসী-অধ্যুষিত গ্রামগুলোর মধ্যে কিছু দল রয়েছে। পাথালগাদি নামে পরিচিত এই দল অনুমতি ছাড়া বাইরের কাউকে গ্রামে ঢোকার অনুমতি দেয় না।

গতকালের এই ঘটনায় আজ শনিবার এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কেউ আটক হয়নি।

ভানুকান্ত সিবিএস নিউজকে জানান, তাঁরা সন্দেহভাজন কয়েকজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। তবে আটক করা ব্যক্তিরা পাথালগাদির সদস্য কি না, তা স্পষ্ট নয়। এ নিয়ে তদন্ত চলছে বলেও তিনি জানান।

পুলিশের সুপারিনটেনডেন্ট অশ্বিনী কুমার সিনহা সিবিএস নিউজকে জানান, এই জঘন্য অপরাধের পেছনে কারা থাকতে পারে, তা নিয়ে তদন্ত চলছে।

গণধর্ষণের শিকার নারীরা আশা কিরণ নামের বেসরকারি একটি সংস্থায় নিয়োজিত। স্থানীয় খ্রিষ্টান মিশনারি দল তাঁদের সমর্থন দেয়। আশা কিরণ ঝাড়খন্ডে খুবই সক্রিয়। ঝাড়খন্ডে ভারতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মানব পাচারের ঘটনা ঘটে। যৌনবৃত্তি ও জোরপূর্বক শ্রমিক হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার জন্য শতাধিক শিশু ও নারীকে ভারত থেকে পাচার করা হয়।

ভারতে নারীদের বিরুদ্ধে অনেক বেশি যৌন সহিংসতার ঘটনা ঘটে। সরকারি তথ্য অনুসারে গত বছর ৪০ হাজার ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। গত মাসে ঝাড়খন্ডে ধর্ষণের পর দুই কিশোরীকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়।