সরকার টিকিয়ে রাখতে অভিবাসন প্রশ্নে পিছু হঠলেন ম্যার্কেল

বার্লিনে গতকাল সোমবার ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়নের বৈঠক শেষে বেরিয়ে যাচ্ছেন জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা ম্যার্কেল। ছবি: এএফপি
বার্লিনে গতকাল সোমবার ক্রিশ্চিয়ান ডেমোক্রেটিক ইউনিয়নের বৈঠক শেষে বেরিয়ে যাচ্ছেন জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা ম্যার্কেল। ছবি: এএফপি

হাজার হাজার অভিবাসীকে জার্মানিতে স্বাগত জানিয়ে প্রশংসিত হয়েছিলেন দেশটির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল। তবে অভ্যন্তরীণ চাপে সরকার টিকিয়ে রাখতে অভিবাসীদের প্রতি সহানুভূতিশীল ম্যার্কেলকেও কঠোর হতে হলো। গতকাল সোমবার তিনি অভিবাসনপ্রত্যাশীদের জন্য সীমান্তে আশ্রয়শিবির তৈরি করতে রাজি হন। অস্ট্রিয়ার সঙ্গে সীমান্তে নজরদারিও বাড়ান।

আঙ্গেলা ম্যার্কেলের জন্য এটা একেবারেই বিপরীতমুখী অবস্থান। ক্ষমতাসীন জোটে থাকা রক্ষণশীলদের চাপের কারণে অভিবাসন বিষয়ে উদার অবস্থান থেকে সরে আসতে হলো তাঁকে।

রক্ষণশীলদের ধরে রাখতে ম্যার্কেলের এই ঘুরে দাঁড়ানোয় তাঁর রাজনৈতিক দুর্বলতা প্রকাশ পায়। জার্মান রাজনীতিতে জাতীয়তাবাদ ও অভিবাসনবিরোধী অবস্থান গুরুত্ব পাচ্ছে।

নিউইয়র্ক টাইমসের খবরে জানা যায়, জার্মানির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হর্স্ট জিহুফার নেতৃত্বে ম্যার্কেলের অভিবাসননীতির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ হয়। ম্যার্কেলের জোট ভেঙে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। এরপরই ম্যার্কেল এই অভিবাসননীতিতে সম্মত হন।

জিহুফা দাবি করেন, কাগজপত্র না থাকলে এবং ইউরোপের অন্য কোনো দেশে নিবন্ধন করে থাকলে সীমান্তেই অভিবাসীদের আটকে দেবে জার্মানি। সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ কার্যকরে গতকাল রাত পর্যন্ত বিরোধিতা করেন ম্যার্কেল। পরে সরকার টিকিয়ে রাখতে তিনি চুক্তি মেনে নেন।

ম্যার্কেলের জোটের তৃতীয় দল সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটস নতুন নীতিকে অনুমোদন দেয়। এই নীতি অনুসারে ট্রানজিট সেন্টার নামে নতুন আশ্রয়শিবির তৈরি করা হবে। নতুন আসা অভিবাসীদের এসব সেন্টারে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হবে। যাঁরা ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্য কোনো দেশে এরই মধ্যে আশ্রয়প্রার্থী হিসেবে আবেদন করেছেন, তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়া হবে।

২০১৫ সালের পর থেকে প্রতিবেশী দেশ এবং মধ্যপ্রাচ্য থেকে পালিয়ে আসা ১০ লাখ অভিবাসীকে আশ্রয় দিয়েছেন ম্যার্কেল। অভিবাসীদের খাবার, কাপড় দিয়ে সাহায্য করেন তিনি।

এই অভিবাসননীতির কারণে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও চাপে ফেলেন ম্যার্কেলকে। গত মাসে প্রতিরক্ষা খাতে কম বরাদ্দ দেওয়ায় ম্যার্কেল এবং ন্যাটোর মিত্র কয়েকটি দেশের সমালোচনা করেন ট্রাম্প।

গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে ম্যার্কেলের দল সবচেয়ে খারাপ করে। ছয়টি দলের সঙ্গে জোট করে সরকার গঠন করে ম্যার্কেলের দল।