সন্তানদের কাছে পেতে অধীর অপেক্ষায় মা-বাবা

বিপজ্জনক অন্ধকার গুহা নয়, যেন মৃত্যুকূপ থেকে নতুন জীবন নিয়ে ফিরেছে থাইল্যান্ডের ১২ কিশোর ফুটবলার। নিবিড় পর্যবেক্ষণে তাদের চিকিৎসা চলছে দেশটির চিয়াং রাই প্রাচানুকরহ হাসপাতালে। জটিল কোনো স্বাস্থ্যগত সমস্যা না থাকলেও উদ্বেগ রয়েছে। চিকিৎসকেরা বলেছেন, আরও এক সপ্তাহ তাদের চিকিৎসা চলবে। নানা ধরনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। ‘নবজীবন’ পাওয়া কিশোরদের কাছে পেতে, জড়িয়ে ধরে আদর করতে অধীর আগ্রহে রয়েছেন তাদের মা-বাবা।
গত ২৩ জুন ‘ওয়াইল্ড বোয়ারস’ নামের ফুটবল দলের ১২ কিশোর ও তাদের ২৫ বছর বয়সী সহকারী কোচ থাইল্যান্ডের চিয়াং রাই প্রদেশের থাম লুয়াং গুহায় আটকা পড়েন। উদ্ধারের পর কিশোরদের শারীরিক অবস্থা দেখাতেই গত বুধবার প্রথম ভিডিও প্রকাশ করে থাই সরকার।
কিশোরদের একজনের বাবা আদিসাক অংসাকচান বলেন, ‘প্রথম দেখায় আমি তাকে জড়িয়ে ধরে আদর করতে চেয়েছিলাম। সব মা-বাবারই একই অনুভূতি। আমি আমার সন্তানকে মুখোমুখি দেখতে চাই এবং আদর করতে চাই।’
এই উদ্ধার অভিযান নিয়ে মুখ খুলতে শুরু করেছেন উদ্ধারকাজে অংশ নেওয়া ডুবুরিরা। উদ্ধার করে কিশোরদের চিয়াং রাইয়ের একটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যেতে হেলিকপ্টারে ওঠানোর আগ মুহূর্তে তাদের কিছু উপদেশ দিয়েছেন থাই নেভি সিলের একটি ডুবুরি শাখার প্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল আপাকর্ন ইউকংকাউই। তিনি বলেন, ‘নিজেদের শ্রেষ্ঠ হিসেবে গড়ে তোলো। ভালো মানুষ হও। দেশের মঙ্গলে শক্তি হয়ে ওঠো।’

কোচ ও তিন কিশোর রাষ্ট্রহীন
গুহা থেকে উদ্ধার হওয়া ফুটবল দলের সহকারী কোচ এক্কাপল চানতায়ং (২৫) ও তিন কিশোর রাষ্ট্রহীন। ওই কোচের একজন আত্মীয় জানিয়েছেন, এক্কাপল খুবই খেলাপ্রিয়। নির্জন গুহায় তিনি যেভাবে কিশোরদের আগলে রেখেছিলেন, তা স্মরণীয়। তিনি আশা করেন, এক্কাপল থাই নাগরিকত্ব পাবেন।
এক্কাপল ‘তাই লু’ নামের এক সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সদস্য। এই সম্প্রদায়ের সদস্যরা থাইল্যান্ড, চীন, মিয়ানমার ও লাউসের কিছু অঞ্চলে অস্থায়ীভাবে বসবাস করে থাকেন। এই সম্প্রদায় রাষ্ট্রহীন।
থাইল্যান্ডের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী উইনাত সিসুক বলেন, ওয়াইল্ড বোয়ারসের সহকারী কোচ এক্কাপল ও তিন কিশোরের নাগরিকত্ব নেই। তারা যদি নাগরিকত্ব পাওয়ার যোগ্য হয়, তাহলে সেটা দেওয়া হবে।