কিশোরেরা বাড়ি যাবে বৃহস্পতিবার

থাইল্যান্ডের থাম লুয়াং গুহা থেকে উদ্ধার হওয়া কিশোরেরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ছবি: রয়টার্স
থাইল্যান্ডের থাম লুয়াং গুহা থেকে উদ্ধার হওয়া কিশোরেরা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ছবি: রয়টার্স

থাইল্যান্ডের থাম লুয়াং গুহা থেকে উদ্ধার হওয়া ১২ কিশোর ও তাদের কোচ আগামী বৃহস্পতিবার হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাবেন। দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী পিয়াসাকোল সাকোলসাত্তায়াটর্ন শনিবার এ কথা জানান।

বার্তা সংস্থা রয়টার্স ও এএফপির খবরে বলা হয়, ১২ কিশোর ও তাদের কোচ বৃহস্পতিবার হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেলেও তাদের চিকিৎসা এখনই শেষ হচ্ছে না। কারণ এরপরও তাদের মানসিকভাবে পুরোপুরি সুস্থ করে তোলার জন্য এ-সংক্রান্ত চিকিৎসার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। এই দলটির প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে, এই প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে বেঁচে থাকার যে গল্প-এ নিয়ে তারা যেন গণমাধ্যমের সঙ্গে আপাতত কথা না বলে।

জন্মদিন উদ্যাপনের জন্য ‘ওয়াইল্ড বোরস’ ফুটবল দলের সদস্য এই ১২ কিশোর ও তাদের কোচ গত ২৩ জুন দেশটির চিয়াং রাই প্রদেশের থাম লুয়াং গুহায় যায়। পরে বৃষ্টি থেকে সৃষ্ট বন্যার কারণে তারা ওই গুহায় আটকা পড়ে। এরপর ২ জুলাই তাদের সন্ধান মেলে। ৮ জুলাই উদ্ধার অভিযান শুরু হয়। প্রথম দিন বের করে আনা হয় চার কিশোরকে। এরপর ৯ জুলাই আরও চারজন। শেষ দিন, ১০ জুলাই কোচ ও বাকি চার কিশোরকে বের করে আনা হয়।

কিশোরদের বর্তমান অবস্থা প্রসঙ্গে পিয়াসাকোল সাকোলসাত্তায়াটর্ন শনিবার বলেন, ওই দলের ১৩ জনই শারীরিকভাবে সুস্থ আছে। তাদের মানসিক অবস্থাও ভালো। বৃহস্পতিবার তারা সবাই হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাবে। মন্ত্রী বলেন, ওই কিশোর ও তাদের অভিভাবকদের প্রতি উপদেশ হলো, তারা বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সময় কাটাবে। গণমাধ্যমের সঙ্গে কোনো কথা বলবে না। কারণ, এতে করে ‘পোস্টট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার’ লক্ষণ দেখা দিতে পারে।

কিশোরেরা ইতিমধ্যে বর্ধিত চাপের মুখে পড়তে শুরু করেছে। ফুটবল দলকে উদ্ধারে থাই নেভি সিলের ডুবুরি দলের প্রধান নিজেদের শ্রেষ্ঠ হিসেবে গড়ে তুলতে বালকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। দেশের মঙ্গলে শক্তি হয়ে ওঠার কথাও বলেছেন। কিশোরদের উদ্ধার অভিযান নিয়ে বৈশ্বিক মনোযোগ ও বহুদেশীয় উদ্ধার তৎপরতা স্মরণীয় করে রাখতে ওই এলাকায় একটি জাদুঘর স্থাপনের পরিকল্পনা করেছে থাই কর্তৃপক্ষ।

লন্ডনের কিংস কলেজের ইনস্টিটিউট অব সাইকিয়াট্রিক, সাইকোলজি ও নিউরোসায়েন্সের চিকিৎসক আন্দ্রিয়া দানিসি বলেন, ‘অতি উৎসাহ ও চাপ সত্ত্বেও কিশোরদের যতটা সম্ভব স্বাভাবিক জীবনযাপনের সুযোগ দেওয়া প্রয়োজন। কিশোরদের স্বাভাবিক জীবন, তাদের দৈনন্দিন কাজে ফিরে যাওয়া প্রয়োজন।’

এদিকে বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, শনিবার সংবাদ সম্মেলনে ওই কিশোরদের একটি ভিডিও দেখানো হয়। ওই দলের ১৪ বছর বয়সী এক সদস্য নোতে বলে, ‘আমার শরীর এখন ভালো। আমাদের বাঁচানোর জন্য ধন্যবাদ।’ মন্ত্রী বলেছেন, উদ্ধার করা ওই কিশোরদের মধ্যে কয়েকজনের নিউমোনিয়া ছিল। তারা সেরে উঠছে।