যে কারণে ভাইরাল ক্রোয়েশিয়া ফায়ার সার্ভিসের ভিডিও

ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া
ছবি: ফেসবুক থেকে নেওয়া

ভিডিওটি হইচই ফেলে দিয়েছে। মানুষ বিস্ময়ের সঙ্গে প্রশংসা করছে। ৭ জুলাই কোয়ার্টার ফাইনালে রাশিয়ার মুখোমুখি হয় ক্রোয়েশিয়া। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ৪৯ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা যায়—ক্রোয়েশিয়ার রাজধানী জাগরেবে নিজেদের স্টেশনে বসে খেলা দেখছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। এখানেই ঘটে বিস্ময়ের সেই ঘটনা।

এনডিটিভির খবরে বলা হয়েছে, ক্রোয়েশিয়ার রাজধানী জাগরেবে বসে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা রাশিয়ার সঙ্গে ক্রোয়েশিয়ার কোয়ার্টার ফাইনাল দেখছিলেন। খেলায় টান টান অবস্থা। মাত্র কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই খেলা শেষ হতে যাচ্ছে। নির্ধারিত সময় ও অতিরিক্ত সময় মিলে সে খেলাটি ২-২ তেই অমীমাংসিত থেকে যায়। গড়ায় টাইব্রেকারে। টাইব্রেকারের ফলাফল ৩-৩। বাকি একটি মাত্র শট। এ শটেই নির্ধারিত হবে কে যাচ্ছে সেমিফাইনালে; রাশিয়া না ক্রোয়েশিয়া। শেষ শটটি নেবেন ক্রোয়েশিয়ার ইভান রাকিতিচ। সবার চোখ তাঁর দিকে। ইভান রাকিতিচের সেই শটে স্বপ্নের সেমিফাইনালে চলে যায় ক্রোয়েশিয়া। কিন্তু ওই যে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা খেলা দেখছিলেন, তাঁদের কিন্তু সে জয়সূচক শটটি দেখা হয়নি। হয়তো তাঁরা পরে ভিডিওতে তা দেখেছেন।

ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার কারণ কী? কারণ আর কিছুই নয়—ঠিক যে সময় রাকিতিচ শট নিতে যাবেন, ঠিক তার কয়েক সেকেন্ড আগে স্টেশনে ফায়ার অ্যালার্ম বেজে ওঠে। সঙ্গে সঙ্গে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা চেয়ার ফেলে দৌড়ে যাঁর যাঁর ইউনিফর্ম পরে গাড়ি নিয়ে ছুটে যান আগুন লাগা স্থানের উদ্দেশ্যে। এখানেই বিস্ময়ের ব্যাপার! তাঁরা মাত্র কয়েক সেকেন্ড দেরি করলেই জয়ের আনন্দ নিয়ে কাজে যেতে হয়তো পারতেন। কিন্তু ক্রোয়েশিয়ার ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা বিশ্ববাসীকে বুঝিয়ে দিয়েছেন—কীভাবে দায়িত্ব পালন করতে হয়।

ভিডিওটিতে মোট ১০ জন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীকে খেলা দেখতে দেখা যায়। অ্যালার্ম বাজার সঙ্গে সঙ্গে নিয়ন্ত্রণকক্ষের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তি ছাড়া বাকি নয়জন ঝটপট ইউনিফর্ম পরে গাড়িতে উঠে পড়েন। ইউনিফর্ম পরতেও তাঁদের সময় লেগেছিল দু থেকে তিন সেকেন্ড। দেশটির ফায়ার সার্ভিস বিভাগ গত বুধবার ভিডিওটি তাদের ফেসবুক পেজে পোস্ট করেছে। এর পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়ে। এনডিটিভির খবরে বলা হয় ভিডিওটি শেয়ারের এক দিনের মধ্যেই প্রায় ৯ লাখ বার দেখা হয়।

তবে অনেকে মনে করছেন, এই ভিডিওটি জনসচেতনতা বৃদ্ধি করার জন্য করা হয়েছে। এর মূল বার্তা হলো উদ্‌যাপন যতই উন্মাদনাময় হোক না কেন—আপনাকে নিরাপত্তার বিষয়টি সব সময়ই সবার আগে মাথায় রাখতে হবে। আর দায়িত্বের বেলায় কোনো ছাড় নয়, সেই বার্তাও তারা দিয়ে দিল।