নিহত ডুবুরির প্রতি থাই কিশোরদের শোক

গুনানের মৃত্যুর খবর শুনে কান্নায় ভেঙে পড়ে কিশোরেরা। ছবি: রয়টার্স
গুনানের মৃত্যুর খবর শুনে কান্নায় ভেঙে পড়ে কিশোরেরা। ছবি: রয়টার্স

থাইল্যান্ডের থাম লুয়াং গুহা থেকে উদ্ধার হওয়ার চার দিন পর ১২ কিশোর ও তাদের কোচকে থাই নৌবাহিনীর সাবেক ডুবুরি সামান গুনানের মৃত্যুর খবর দেওয়া হলো। এ খবর শুনে তারা কান্নায় ভেঙে পড়ে। এরপর তারা গুনানের প্রতি শোক প্রকাশ করে।

এই কিশোর দল তাদের ফুটবল কোচকে উদ্ধারে অন্য ডুবুরিদের সঙ্গে গিয়েছিলেন গুনান। ৬ জুলাই তিনি কিশোর দলকে অক্সিজেনের বোতল সরবরাহ করে ফেরার পথে নিজের অক্সিজেন ফুরিয়ে গেলে প্রাণ হারান। পাশে থাকা বন্ধুরা তাঁকে বাঁচাতে চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। ৯০ জন দেশি-বিদেশি ডুবির ও অসংখ্য স্বেচ্ছাসেবী এই উদ্ধার অভিযানে অংশ নিয়েছে।

গুনানের প্রতি শোক প্রকাশ করে এক মিনিট নীরবতা পালন করে কিশোরেরা। ছবি: রয়টার্স
গুনানের প্রতি শোক প্রকাশ করে এক মিনিট নীরবতা পালন করে কিশোরেরা। ছবি: রয়টার্স

জন্মদিন উদ্‌যাপনে ‘ওয়াইল্ড বোরস’ ফুটবল দলের সদস্য এই ১২ কিশোর ও তাদের কোচ গত ২৩ জুন দেশটির চিয়াং রাই প্রদেশের থাম লুয়াং গুহায় যায়। পরে বৃষ্টি থেকে সৃষ্ট বন্যার কারণে তারা ওই গুহায় আটকা পড়ে। এরপর ২ জুলাই তাদের সন্ধান মেলে। ৮ জুলাই উদ্ধার অভিযান শুরু হয়। প্রথম দিন বের করে আনা হয় চার কিশোরকে। এরপর ৯ জুলাই আরও চারজন। শেষ দিন ১০ জুলাই কোচ ও বাকি চার কিশোরকে বের করে আনা হয়।

এরপর থেকে তারা চিয়াং রাইয়ের চিয়াং রাই প্রাচানুক্রহ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। কিন্তু মানসিক ধকল নেওয়ার মতো ক্ষমতা নেই মনে করে চিকিৎসকেরা এত দিন তাদের গুনানের মৃত্যু খবর জানাননি। গত শনিবার চিকিৎসকেরা এই কিশোর দলকে মানসিকভাবে যথেষ্ট শক্ত মনে করার পর এ খবর জানান।

গুনানের এক স্কেচের আশপাশে বিভিন্ন শোকবার্তা লেখে কিশোরেরা। ছবি: রয়টার্স
গুনানের এক স্কেচের আশপাশে বিভিন্ন শোকবার্তা লেখে কিশোরেরা। ছবি: রয়টার্স

দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্থায়ী সচিব জেদসাদা চোকদামরংসুক বলেন, খবরটি শোনার পর সবার চোখ ভিজে যায়। তারা গুনানের একটি ছবিতে লিখে শোক প্রকাশ করে এবং এক মিনিট নীরবতা পালন করে।

কিশোরেরা গুনানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে এবং ভালো ছেলে হওয়ার প্রতিজ্ঞা করে।

আগামী বৃহস্পতিবার তারা হাসপাতাল ছাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। এখনো অনেকের অ্যান্টিবায়োটিক চলছে।

গুনানের ছবি হাতে কিশোর দল। ছবি: রয়টার্স
গুনানের ছবি হাতে কিশোর দল। ছবি: রয়টার্স

তাদের মধ্যে মানসিক কোনো সমস্যার লক্ষণ দেখা দেয় কি না, বিষয়টি পর্যবেক্ষণে রাখা হবে, যা এক মাসের মধ্যে স্পষ্ট হবে।

খুদে এই ফুটবলার দলটিকে বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনাল খেলা দেখার জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কিন্তু চিকিৎসার স্বার্থে তাদের যেতে দেওয়া হয়নি। এমনকি তারা সরাসরি খেলাটিও দেখতে পারেনি। রেকর্ড করা খেলাটি পরে তাদের দেখানো হবে।