জুলুমের শাসন থেকে মুক্তি চায় পশ্চিমবঙ্গ: মোদি

নরেন্দ্র মোদি
নরেন্দ্র মোদি

পশ্চিমবঙ্গে মাত্র দুই ঘণ্টার সফরে এসে তৃণমূল কংগ্রেস সরকারকে তুলোধোনা করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মেদিনীপুর শহরে আয়োজিত কৃষকসমাবেশে সরকারের উদ্যোগের কথা জানানোর পাশাপাশি রাজ্যের অবস্থা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মোদি। তিনি বলেছেন, পশ্চিমবঙ্গ জুলুমের শাসন থেকে মুক্তি চায়। রাজ্যের মানুষ সেই সুযোগের অপেক্ষাতেই রয়েছে।

রাজ্যে সিন্ডিকেটের উপদ্রব সম্পর্কে মোদি বলেন, ‘রাজ্যে মা-মাটি-মানুষের নামে সিন্ডিকেট রাজ চলছে। সিন্ডিকেট রাজের নামে জোর করে গরিবের আয় ছিনিয়ে নেওয়া হচ্ছে।’

মোদি বলেন, ‘সিন্ডিকেট ছাড়া পশ্চিমবঙ্গে কিছু করা অসম্ভব। নতুন সংস্থা খুলতে হলে, ইট-বালু-সিমেন্ট কিনতে হলে, এমনকি কলেজে ভর্তি হতে হলে সিন্ডিকেটের কাছে যেতে হয়। ভোট ব্যাংকের জন্য সিন্ডিকেটকে ব্যবহার করা হচ্ছে। বিরোধীদের হত্যা করার জন্যও সিন্ডিকেটকে কাজে লাগানো হচ্ছে। বাম শাসনে যে হাল ছিল, বাংলার অবস্থা এখন তার চেয়েও খারাপ।’

আজ সোমবার স্থানীয় সময় দুপুর ১২টা নাগাদ প্রধানমন্ত্রীর বিমান কলাইকুন্ডা সামরিক বিমানবন্দরে নামে। সেখান থেকে তিনি হেলিকপ্টারে করে সভাস্থলে আসেন।

মেদিনীপুর শহরের কলেজ ময়দানে আয়োজিত এই সমাবেশে লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বাংলায় তার ভাষণ শুরু করেন।

রাস্তায় তৃণমূল কংগ্রেসের একটি সমাবেশের জন্য লাগানো হাতজোড় করে মমতার কাটআউট ও পোস্টার দেখে মোদি কৌতুকের সুরে বলেছেন, ‘আমাকে স্বাগত জানানোর জন্য মমতা দিদিকে অসংখ্য ধন্যবাদ।’

এ দিনের কৃষকসমাবেশে রাজ্য বিজেপির পক্ষ থেকে কৃষকদের উৎপাদিত ১৪ খরিফ ফসলের সহায়ক মূল দেড় গুণ বৃদ্ধির জন্য সংবর্ধনা জানানো হয়েছে। সমাবেশে আসার পথে বিপুল জনসমাগম দেখে মোদি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তিনি এদিনের সমাবেশে সরকার কৃষকদের কল্যাণে যেসব প্রকল্প হাতে নিয়েছে, তার কথা জানিয়েছেন।

মোদি আসলেই রাজনৈতিক প্রচার সেরে গিয়েছেন তাঁর ঝটিকা সফরে। আগামী লোকসভা নির্বাচনের জন্য রাজ্যে বিজেপির নেতা ও কর্মীদের উজ্জীবিতই করে গিয়েছেন।

মোদি বলেছেন, ‘পঞ্চায়েত নির্বাচনে একের পর এক দলিত কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। তা সত্ত্বেও আপনারা আশা ছাড়েননি, এটাই বাংলার ভবিষ্যতের লক্ষণ।’ এদিনের সভায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়, বিজেপির সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক রাহুল সিনহা ও রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ ভাষণ দিয়েছেন।

মোদির সভায় প্যান্ডেলের একাংশ ভেঙে আহত ৩০ 
মোদির সভাস্থলে প্যান্ডেল ভেঙে প্রায় ৩০ জন আহত হয়েছেন। এঁদের মধ্যে বেশ কয়েকজন নারী। প্রত্যক্ষদর্শী ব্যক্তিরা জানিয়েছেন, আরও বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার হাত থেকে মানুষ রক্ষা পেয়েছে। আহত ব্যক্তিদের সবাইকে স্থানীয় মেদিনীপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী ভাষণ দেওয়ার সময়ই এই দুর্ঘটনা ঘটে। প্রধানমন্ত্রী সবাইকে সতর্ক করে দেন। ভাষণ শেষে মোদি নিজে হাসপাতালে গিয়ে আহত ব্যক্তিদের খোঁজ নেন। এদিকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক টুইটে আহত ব্যক্তিদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন।