মিশনারিজ অব চ্যারিটির বিরুদ্ধে শিশু বিক্রির অভিযোগ

১৯৫০ সালে মাদার তেরেসা মিশনারিজ অব চ্যারিটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ছবি: রয়টার্স
১৯৫০ সালে মাদার তেরেসা মিশনারিজ অব চ্যারিটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ছবি: রয়টার্স

ভারতে মাদার তেরেসা প্রতিষ্ঠিত মিশনারিজ অব চ্যারিটি পরিচালিত সব শিশু পরিচর্যাকেন্দ্রে (চাইল্ড কেয়ার হোম) অনুসন্ধান চালানোর নির্দেশ দিয়েছে দেশটির সরকার। দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ঝাড়খন্ডের রাজধানী রাঁচিতে দাতব্য প্রতিষ্ঠানটির একটি কেন্দ্রের অন্তত পাঁচটি শিশুকে হাজার হাজার ডলারের বিনিয়ময়ে বিক্রির অভিযোগে পুলিশ চলতি মাসের প্রথম দিকে ওই কেন্দ্রের এক নান ও এক কর্মীকে গ্রেপ্তারের পর এই নির্দেশনা এল।

রাঁচির ওই শিশু পরিচর্যাকেন্দ্র থেকে একটি সদ্যোজাত শিশু নিখোঁজের ঘটনা স্থানীয় সমাজকল্যাণ কর্তৃপক্ষ পুলিশকে জানালে এই কেলেঙ্কারি ফাঁস হয়ে যায়। অবিবাহিত ও দুর্দশাগ্রস্ত নারী ও তাঁদের সদ্যোজাত সন্তানদের বিনা মূল্যে পরিচর্যা করা হয় এসব কেন্দ্রে।

ভারতের নারী ও শিশুকল্যাণ বিভাগ গতকাল মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জানায়, দেশে মিশনারিজ অব চ্যারিটির মাধ্যমে পরিচালিত সব শিশুযত্ন কেন্দ্র তাৎক্ষণিক পরিদর্শন করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ভারতের কেন্দ্রীয় নারী ও শিশু উন্নয়নমন্ত্রী মানেকা গান্ধী গতকাল সোমবার রাতে এক বিবৃতিতে বলেন, মিশনারিজ অব চ্যারিটি পরিচালিত দেশের সব শিশু পরিচর্যাকেন্দ্রে অনতিবিলম্বে অনুসন্ধান চালাতে সব রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সব শিশু পরিচর্যা প্রতিষ্ঠানকে আগামী মাসের মধ্যে নিবন্ধিত হতে হবে এবং কেন্দ্রীয় দত্তক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যুক্ত হতে হবে বলেও জানান মানেকা।

গত ডিসেম্বরে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট দেশের সব শিশু পরিচর্যা প্রতিষ্ঠানের নিবন্ধন বাধ্যতামূলক করা এবং এতিমখানাগুলো কেন্দ্রীয় দত্তক পদ্ধতির আওতায় আনার নির্দেশ দেন।

চ্যারিটির পক্ষ থেকে শিশু বিক্রির খবরকে ‘দুঃখজনক’ বলে অভিহিত করা হয়। মিশনারিজ অব চ্যারিটির কর্মী সুনিতা কুমার বিবিসিকে বলেন, ‘এমন যাতে আর না হয়, সে জন্য প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

সরকারের তথ্যমতে, আদালতের আদেশের পর কেন্দ্রীয় দত্তক সংস্থান কর্তৃপক্ষের (সিএআরএ) সঙ্গে সংযুক্ত হয়েছে ২ হাজার ৩০০টি শিশু পরিচর্যা প্রতিষ্ঠান। চার হাজার প্রতিষ্ঠান সংযুক্তির অপেক্ষায় রয়েছে।

শিশু নিখোঁজের ঘটনা প্রকাশের পর মিশনারিজ অব চ্যারিটি জানিয়েছিল, ঝাড়খন্ডের ঘটনাটি তারা অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে তদন্ত করে দেখবে এবং এ রকম ঘটনা যাতে না ঘটে, তা নিশ্চিত করা হবে। শান্তিতে নোবেলজয়ী মাদার তেরেসা ১৯৪৬ সালে এই চ্যারিটি প্রতিষ্ঠা করেন।

দরিদ্র ও আর্ত মানুষেরা সেবায় সারা জীবন কাজ করে যাওয়া নোবেলজয়ী মাদার তেরেসা ১৯৯৭ সালে মারা যান। ১৯৫০ সালে তিনি মিশনারিজ অব চ্যারিটি প্রতিষ্ঠা করেন। এই প্রতিষ্ঠানটির সদর দপ্তর পশ্চিমবঙ্গের কলকাতায়। প্রতিষ্ঠানটি এতিমখানা ও স্কুল পরিচালনা করে। পাশাপাশি কুষ্ঠ রোগীদের সেবা দেয় এবং গৃহহীন শিশুদের আশ্রয় দিয়ে থাকে।