চেন্নাইয়ে ১১ বছরের শিশুকে ছয় মাস ধরে ধর্ষণের অভিযোগে ১৭ ব্যক্তি গ্রেপ্তার

ভারতের অন্যতম আধুনিক শহর চেন্নাইতে এক লোমহর্ষক ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগ উঠেছে, সেখানকার কিলপিউক জেলাতে ১১ বছরের এক বধির শিশুকে ছয় মাস ধরে ১৭ জন ব্যক্তি ধর্ষণ করেন। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বয়স ২০ বছর থেকে ৬৬ বছর। তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

এ নিয়ে ভারতের গণমাধ্যমের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমও প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তবে কোনো কোনো গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ ঘটনার সঙ্গে ১৭ জন নয়, অন্তত ২২ জন জড়িত।

১১ বছর বয়সী ওই শিশু তার নিজ ভবনেই ধর্ষণের শিকার হয়। অভিযুক্ত ব্যক্তিদের মধ্যে বেশির ভাগই ওই ভবনে বিভিন্ন পদে কর্মরত ছিলেন। এঁদের মধ্যে লিফট অপারেটর, কেয়ারটেকার, নিরাপত্তাকর্মী, পানি ও গ্যাস-সংযোগের কাজ করা মিস্ত্রি রয়েছেন।

কিলপিউকের পুলিশ কমিশনার এ কে বিশ্বনাথন বলেন, প্রথম যে ব্যক্তি ওই শিশুকে ধর্ষণ করেন, তিনি ছিলেন ভবনটির ৬৬ বছর বয়সী লিফট অপারেটর।

বিশ্বনাথ বলেন, অভিযুক্ত ব্যক্তিরা ঘুম পাড়ানোর ইনজেকশন দিয়ে বা মাদকজাতীয় কিছু খাইয়ে শিশুটিকে ধর্ষণ করতেন। অন্য কোনো স্থানে নয়, নিজ ভবনের নিচতলায় জেনারেটর রুম, ওয়াশ রুম বা অন্য কোনো তলার খালি রুমে তাকে ধর্ষণ করা হতো। শিশুটি যাতে এ ঘটনা কাউকে না বলে, সে জন্য ধর্ষণের ভিডিও করে তা দিয়ে ভয় দেখানো হতো।

শিশুটি স্কুল থেকে ফেরার সময় বাসার ফটক থেকে তাকে পাকড়াও করতেন অভিযুক্ত ব্যক্তিরা। তার মা ভাবতেন, মেয়ে স্কুলে খেলাধুলা করার কারণে বাসায় ফিরতে দেরি করছে। শিশুটির বাবা পেশাগত কারণে খুব সকালে বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়তেন। ফিরতেন দেরিতে। অন্যদিকে শিশুটির বড় বোন চেন্নাইয়ের বাইরে অন্য শহরে থেকে লেখাপড়া করছেন।

কিলপিউক পুলিশের উপকমিশনার এস রাজেন্দ্র বলেন, শিশুটি প্রথম গত রোববার তার মাকে বিষয়টি খুলে বলে। এরপর মা পুলিশকে জানান। জানুয়ারির মাঝামাঝি থেকে চলতি মাস পর্যন্ত এ ঘটনা ঘটে আসছে। চলতি সপ্তাহে শিশুটি পেটে যন্ত্রণা অনুভব করতে থাকে। মূলত এ কারণে ঘটনা প্রকাশ পায়। দ্রুত অভিযুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করা হয়।

গতকাল মঙ্গলবার অভিযুক্ত ১৭ ব্যক্তিকে আদালতে তোলা হয়। কিন্তু কোনো আইনজীবীই অভিযুক্ত ব্যক্তিদের পক্ষে আদালতে দাঁড়াননি।

আদালত চত্বরে প্রায় ৫০ জন আইনজীবী অভিযুক্ত ব্যক্তিদের ওপর চড়াও হন। তাঁদের মারধর করেন। পরে পুলিশ অভিযুক্ত ব্যক্তিদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়। তথ্যসূত্র: টিওআই, এনডিটিভি, সিএনএন, হিন্দুস্তান টাইমস।