ব্রেক্সিট প্রশ্নে ব্রিটিশ সরকারের প্রস্তাব বাতিল ইইউর

শুক্রবার ব্রাসেলসে ব্রেক্সিট নিয়ে কথা বলছেন ইইউর ব্রেক্সিট-বিষয়ক মুখ্য আলোচক মাইকেল বার্ণিয়ার। ছবি সংগৃহীত
শুক্রবার ব্রাসেলসে ব্রেক্সিট নিয়ে কথা বলছেন ইইউর ব্রেক্সিট-বিষয়ক মুখ্য আলোচক মাইকেল বার্ণিয়ার। ছবি সংগৃহীত

ব্রেক্সিট প্রশ্নে যুক্তরাজ্য সরকারের প্রস্তাব বাতিল করছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। শুক্রবার ব্রাসেলসে ইইউর ব্রেক্সিট-বিষয়ক মুখ্য আলোচক মাইকেল বার্ণিয়ার জানিয়েছেন, ব্রেক্সিটের পরও ইইউর সঙ্গে ব্রিটিশদের বাণিজ্য করার অভিপ্রায় গ্রহণযোগ্য নয়। এ বাণিজ্যবিষয়ক প্রস্তাব বাতিল হয়ে যাওয়ার পর হয়তো কোনো রকম চুক্তি ছাড়াই ব্রেক্সিট বলবৎ হবে।

ব্রেক্সিট প্রশ্নে কয়েক মাস ধরে নানা বিষয়ে আলোচনার পর এই প্রথম ইইউ তাদের মনোভাব ব্যক্ত করল। ব্রিটেনের ইইউ ছেড়ে যাওয়া বা ব্রেক্সিটের পরও ইইউ দেশভুক্ত দেশগুলোতে ব্যবসা-বাণিজ্য করার প্রস্তাবের ব্যাপারে মাইকেল বার্ণিয়ার জানান, ইইউর শুল্কমুক্ত অভ্যন্তরীণ বাজারে ব্রিটিশদের বাণিজ্যের সুযোগ দিলে শুল্কমুক্ত অভ্যন্তরীণ বাজারের ক্ষতি হবে।

এ মুহূর্তে ইইউ-ভুক্ত ২৮ দেশের মধ্য পণ্য আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে অবাধ শুল্কমুক্ত অভিন্ন বাজারব্যবস্থার প্রচলন রয়েছে।

ব্রেক্সিট দ্বন্দ্বে বেশ কিছুদিন ধরে ইইউ এবং ব্রিটিশ সরকারের মধ্যে নানা রকম মতদৈন্যতার পর গত সপ্তাহে ব্রিটিশের পক্ষ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়া নিয়ে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবের শ্বেতপত্র আসে। প্রস্তাবে শুল্কমুক্ত অভ্যন্তরীণ অভিন্ন বাজার থাকা এবং ইইউ সদস্য আইসল্যান্ডের সঙ্গে ব্রিটিশ সীমান্তবিষয়ক এবং ইইউ নাগরিকের ব্রিটেনে চাকরি বা অবস্থান ও পড়াশোনার ক্ষেত্রে কিছুটা শিথিল শর্তের কথা উল্লেখ রয়েছে।

শুক্রবার ব্রাসেলসে ইইউ সদস্য দেশগুলোর ইইউ বিষয়ক মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকের পর মাইকেল বার্ণিয়ার জানান, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে ব্রেক্সিট বিষয়ক শ্বেতপত্রে গঠনমূলক আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছেন। প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা বিষয়ে ঐকমত্য ছাড়াও বিচ্ছেদপ্রক্রিয়ার ৮০ শতাংশ আলোচনা সমাপ্ত হয়েছে। তবে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনার কোনো উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়নি। বার্ণিয়ার বলেন, সাধারণ অভ্যন্তরীণ বাজারের সুরক্ষা এবং কাস্টমস ইউনিয়ন প্রশ্নে ব্রিটিশদের ছাড় দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই এবং ইইউ সদস্য না থেকেও এ বাড়তি সুবিধাভোগ ইইউর মূল নীতির পরিপন্থী।

গত ৬ ফেব্রুয়ারি ইইউ পার্লামেন্টে সিদ্ধান্ত হয় যে, সদস্যদেশগুলোর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০১৯ সালের ২৯ মার্চের পর থেকে যুক্তরাজ্য ইইউ জোটে তাদের সব অধিকার হারাবে। তবে ২০২০ সালের শেষ পর্যন্ত পন্য আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে শুল্ক ইউনিয়ন ও একক বাজারব্যবস্থার সুবিধাদি নিতে পারবে।

ইইউ জোটের সঙ্গে বাকি বিশ্বের নানা দেশের মধ্য শিক্ষা, সংস্কৃতি, পরিবেশ ইত্যাদি নানা বিষয়ে ৭৫০টি চুক্তি রয়েছে। যার মধ্য অর্থনীতি ও বাণিজ্য বিষয়ের চুক্তি রয়েছে ৬৫টি, ইইউ ত্যাগের ফলে যুক্তরাজ্যকে এখন এ চুক্তিগুলো আবারও নতুন করে করতে হবে। অর্থনৈতিক ও বৈষয়িক বিষয়গুলো ছাড়াও ৪৪ বছর ইইউ জোটে থাকার পর যুক্তরাজ্যের এ জোট ত্যাগের বিষয়টি উভয় অংশের সিংহভাগ মানুষ ভালোভাবে নেয়নি।