নওয়াজ অসুস্থ, হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ

নওয়াজ শরিফ। রয়টার্স ফাইল ছবি
নওয়াজ শরিফ। রয়টার্স ফাইল ছবি

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী কারাবন্দী নওয়াজ শরিফ গতকাল রোববার অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তিনি হৃদ্‌রোগ ও কিডনির সমস্যায় ভুগছেন। চিকিৎসকেরা তাঁকে হাসপাতালে পাঠানোর পরামর্শ দিয়েছেন।

পাকিস্তানের জবাবদিহি আদালত ৬ জুলাই অ্যাভেনফিল্ড দুর্নীতি মামলায় নওয়াজকে ১০ বছরের সাজা দেন। একই মামলায় নওয়াজের মেয়ে মরিয়ম নওয়াজকে সাত বছর ও তাঁর স্বামী ক্যাপ্টেন (অব.) সফদারকে এক বছর কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। কারাদণ্ডাদেশের পাশাপাশি নওয়াজকে ৮০ লাখ ব্রিটিশ পাউন্ড ও মরিয়মকে ২০ লাখ ব্রিটিশ পাউন্ড জরিমানা করা হয়েছে। তিনজনই এখন আদিয়ালা কারাগারে। নওয়াজের স্ত্রী কুলসুম লন্ডনে চিকিৎসাধীন।

কারা প্রশাসনের এক কর্মকর্তা ডনকে বলেন, অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল আজহার কাইনির নেতৃত্বে চিকিৎসকদের একটি দল আদিয়ালা কারাগারে গেছে। সেখানে নওয়াজ শরিফের স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর তারা জানিয়েছে, তাঁকে দ্রুত চিকিৎসা দিতে হাসপাতালে পাঠানো দরকার। চিকিৎসক দলের এ পরামর্শপত্র পাঞ্জাব স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে।

রাওয়ালপিন্ডি ইনস্টিটিউট অব কার্ডিওলজির নির্বাহী কর্মকর্তা এবং আর্মড ফোর্সেস ইনস্টিটিউট অব কার্ডিওলজির সাবেক কমান্ড্যান্ট জেনারেল আজহার কাইনি ছিলেন সাবেক প্রেসিডেন্ট অবসরপ্রাপ্ত জেনারেল পারভেজ মোশাররফের ব্যক্তিগত চিকিৎসক।

চিকিৎসক দলের বরাত দিয়ে ওই কারা কর্মকর্তা জানান, পানিশূন্যতার কারণে নওয়াজের হৃৎস্পন্দন অস্বাভাবিক। তাঁর রক্তে যে মাত্রায় ইউরিয়া পাওয়া গেছে, এতে মনে হচ্ছে, তিনি কিডনির সমস্যায় ভুগছেন।

জেলা সদর দপ্তরের হাসপাতালে একটি চিকিৎসক দল একই কারাগারে থাকা নওয়াজের জামাতা মোহাম্মদ সফদারের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করেছে। তিনি কান ও গলার সংক্রমণে ভুগছেন।

২০১৬ সালে পানামা পেপারসে লন্ডনের অভিজাত এলাকা পার্ক লেনে অ্যাভেনফিল্ড হাউসে নওয়াজ শরিফের চারটি বিলাসবহুল ফ্ল্যাট থাকার তথ্য ফাঁস হয়। আদালতের জিজ্ঞাসার জবাবে এ ব্যাপারে সন্তোষজনক কোনো জবাব দিতে পারেননি নওয়াজ। তিনি বলেছিলেন, কাতারের এক বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান তাঁর বাবার কাছ থেকে নেওয়া ঋণের পরিবর্তে তাঁর পরিবারকে ওই চারটি ফ্ল্যাট দিয়েছে। তাঁর এই অস্পষ্ট জবাবের সমর্থনে কাতারের যুবরাজের চিঠিও এসেছিল, যদিও সেটাকে ‘কৌতুক’ বলে ব্যঙ্গ করেছিলেন প্রধান বিরোধী দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) নেতা সাবেক ক্রিকেট তারকা ইমরান খান।

পানামা পেপারস কেলেঙ্কারিতে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে যেতে হয় নওয়াজ শরিফকে। দেশের সর্বোচ্চ আদালত তাঁকে অযোগ্য ঘোষণা করেন। আদালত তাঁকে রাষ্ট্রীয় যেকোনো পদে আজীবন নিষিদ্ধ ঘোষণা করেন। পরে আদালতের রায়ে দলীয় প্রধানের পদও ছাড়তে হয় নওয়াজকে।

১৬ জুলাই নওয়াজ, মরিয়ম ও সফদারের পক্ষে ইসলামবাদ হাইকোর্টে সাতটি পৃথক আপিল আবেদন করা হয়। এর মধ্যে শুধু নওয়াজের পক্ষে তিনটি আবেদন করা হয়েছে। এ ছাড়া মরিয়ম ও সফদারের পক্ষে দুটি করে চারটি আবেদন করা হয়েছে।