অস্ট্রেলিয়ার প্রথম মুসলিম নারী সিনেটর মেহরিন

মেহরিন ফারুকি। ছবিটি তাঁর টুইটার থেকে নেওয়া
মেহরিন ফারুকি। ছবিটি তাঁর টুইটার থেকে নেওয়া

অস্ট্রেলিয়ায় প্রথমবারের মতো মুসলিম নারী সিনেটর হলেন মেহরিন ফারুকি। আজ বুধবার তাঁকে সিনেটের একটি শূন্য পদে মনোনয়ন দেওয়া হয়। সিনেটর নির্বাচিত হওয়ার আগে তিনি নিউ সাউথ ওয়েলস থেকে গ্রিন পার্টির সাংসদ ছিলেন। ২০১৩ সালে তিনি সাংসদ নির্বাচিত হন।

মেহরুন ফারুকি এমন এক সময় অস্ট্রেলিয়ার সিনেটর হলেন, যখন দেশটিতে অভিবাসী মুসলিমদের নিয়ে চরম বিতর্ক চলছে। পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত এই মুসলিম নারী পেশায় পরিবেশ প্রকৌশলী। তিনি নারীবাদী হিসেবেও বেশ পরিচিত।

মেহরুনকে সিনেটের শূন্য আসনে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। ওই আসনের সিনেটর ছিলেন গ্রিন পার্টির নেতা লি রিয়ানন। আগামী সপ্তাহে মেহরিন সিনেটর হিসেবে শপথ নেবেন।

অভিবাসী নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করা সিনেটর ফ্রেসার অ্যানিংয়ের কঠোর সমালোচনা করে আসছিলেন মেহরিন। সিনেটর হিসেবে মনোনয়ন পাওয়ার পর পার্লামেন্টে প্রথম তিনি বলেন, অ্যানিং লাখ লাখ অস্ট্রেলিয়ানের মুখে থুতু দিয়েছেন। ঘৃণা ও বর্ণবাদের বিষবাষ্প ছড়িয়েছেন।

মেহরিন বিবিসিকে বলেন, তাঁর কাজ হবে একটি ইতিবাচক অস্ট্রেলিয়া গড়ার পক্ষে, যেখানে ধর্ম-বর্ণের বিচিত্রতা থাকবে। তাঁর মতে, এই বৈচিত্র্যের মধ্য দিয়ে (তাঁর সিনেটর হওয়া) অস্ট্রেলিয়ার ভবিষ্যৎ আরও শক্তিশালী হতে যাচ্ছে।

গতকাল মঙ্গলবার অভিবাসন নীতি নিয়ে কথা বলেন দেশটির রক্ষণশীল দল ক্যাটার্স অস্ট্রেলিয়ান পার্টির (কেএপি) সিনেটর ফ্রেসার অ্যানিং। তিনি অভিবাসন বন্ধ করার জন্য ‘ফাইনাল সলুশন’ নীতির কথা বলেন। অ্যানিংয়ের মতে, মুসলিমদের অস্ট্রেলিয়ায় প্রবেশ সম্পূর্ণ বন্ধ করে দিতে হবে। এরপর থেকে তাঁর বক্তব্যের সমালোচনার ঝড় বইতে থাকে গোটা অস্ট্রেলিয়ায়। এমনকি দেশটির প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুলও ওই সিনেটরের প্রকাশ্যে সমালোচনা করেন। নবনির্বাচিত মুসলিম এই সিনেটরও প্রথম থেকেই অ্যানিংয়ের অভিবাসন সম্পর্কিত বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করে আসছেন। প্রতিবাদস্বরূপ তিনি নিজের টুইটার অ্যাকাউন্টে নিজের পরিচয়ের পাশে ‘আমি একজন অভিবাসী’ বলে উল্লেখ করেন। ‘ফাইনাল সলুশন’ বা চূড়ান্ত সমাধান হলো হিটলারের নাৎসি বাহিনীর একটি তত্ত্ব। এই তত্ত্ব ব্যবহার করে তারা ইহুদিদের ওপর ১৯৩৩ সাল থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত গণহত্যা (হলোকস্ট) চালিয়েছিল। যদিও কেএপি পার্টির প্রধান বব ক্যাটারের দাবি, তাঁর ওই সিনেটর ‘ফাইনাল সলুশন’ তত্ত্বের কথা জানেন না। ইতিহাস নিয়ে তাঁর পড়াশোনা কম। তিনি অ্যানিংকে বেশি বেশি ইতিহাসের বই পড়ারও পরামর্শ দেন।

তবে এত সমালোচনার পরও অ্যানিং তাঁর মন্তব্যে অনড়। তিনি এ বক্তব্যের জন্য ক্ষমা চাইবেন না বলেও বুধবার এক মন্তব্যে জানান।