শ্রীলঙ্কায় পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার বিষয়ে আদালতে চ্যালেঞ্জ

প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা। ছবি: এএফপি
প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা। ছবি: এএফপি

শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনার পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার ঘোষণার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ করেছে দেশটির প্রধান তিনটি রাজনৈতিক দল। আজ সোমবার এক পিটিশনে তারা ওই ঘোষণা বাতিল করে পার্লামেন্ট পুনর্বহালের আবেদন করেছে।

বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে জানানো হয়, পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনের অংশীদার দল তিনটি সর্বোচ্চ আদালতকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে রনিল বিক্রমাসিংহেকে বরখাস্ত করাকেও অবৈধ ঘোষণার আবেদন করেছে। গত ২৬ অক্টোবর সিরিসেনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে বিক্রমাসিংহেকে বরখাস্ত করে মাহিন্দা রাজাপক্ষেকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ঘোষণা করেন। এরপর থেকে সাংবিধানিক সংকটের মধ্যে পড়েছে দেশটি। আগামী ৫ জানুয়ারি দেশটিতে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।

মাহিন্দা রাজাপক্ষে। ছবি: এএফপি
মাহিন্দা রাজাপক্ষে। ছবি: এএফপি

এর আগে গতকাল রোববার বিক্রমাসিংহের দল ইউনাইটেড ন্যাশনাল পার্টি (ইউএনপি) প্রেসিডেন্টের এসব সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাবে বলে জানিয়েছিল। বিক্রমাসিংহের মন্ত্রিপরিষদের অর্থমন্ত্রী মঙ্গলা সামারাবিরা সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা আদালতে লড়াই করব, পার্লামেন্টে লড়াই করব এবং নির্বাচনে লড়াই করব।’ তিনি আরও বলেন, ‘২০১৫ সালে সিরিসেনাকে আমরা সমর্থন দিয়েছিলাম এই আশায় যে তিনি এ দেশের নেলসন ম্যান্ডেলা হবেন, কিন্তু তিনি নিজেকে “বিশ্বাসঘাতক” হিসেবে দেখিয়েছেন। তিনি ম্যান্ডেলা হওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে মুগাবে (জিম্বাবুয়ের সাবেক প্রেসিডেন্ট রবার্ট মুগাবে) হয়েছেন।’

শ্রীলঙ্কার সংবিধানের ১৯তম সংশোধনী অনুসারে, পার্লামেন্টে ভোটাভুটি ছাড়া প্রধানমন্ত্রীকে প্রেসিডেন্ট বরখাস্ত করতে পারবেন না। আর পার্লামেন্টে ভোট হলে বিক্রমাসিংহেকে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরানো যাবে না। কারণ, সিরিসেনার দল ইউনাইটেড পিপলস ফ্রিডম অ্যালায়েন্স (ইউপিএফএ) ও রাজাপক্ষের দল শ্রীলঙ্কা ফ্রিডম পার্টির মিলিত আসনের সংখ্যা ৯৫ এবং বিক্রমাসিংহের দল ইউএনপির আসনসংখ্যা ১০৬। সমর্থন বেশি থাকায় ভোটাভুটিতে বিক্রমাসিংহের পক্ষে ভোট বেশি পড়বে।

রনিল বিক্রমাসিংহে। ছবি: এএফপি
রনিল বিক্রমাসিংহে। ছবি: এএফপি

এর আগে ২০১৫ সালে দীর্ঘ সময় ধরে প্রেসিডেন্ট পদে থাকা রাজাপক্ষেকে হারিয়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন সিরিসেনা। ওই সময় সিরিসেনার জোটে ছিলেন বিক্রমাসিংহে। তবে সিরিসেনা ও বিক্রমাসিংহে জোটের মধ্যে নানা সময়েই মতবিরোধ দেখা দেয়। সবশেষ ভারতকে একটি বন্দর লিজ দেওয়ার ব্যাপারে সরকারের পরিকল্পনা নিয়ে এই দুজনের মধ্যে চরম মতবিরোধ দেখা দেয়।

সিরিসেনার পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। কলম্বোয় বিদেশি দূতাবাসগুলো সিরিসেনার এই পদক্ষেপকে অসাংবিধানিক বলে নিন্দা জানিয়েছে।