ইউরোপীয় ইউনিয়নকে চিঠি লিখলেন বরিস জনসন

বরিস জনসন
বরিস জনসন

‘ব্রেক্সিট বিষয়ে কোনো আলোচনা নয় বা চুক্তি ছাড়াই ব্রেক্সিট হবে’ এই মনোভাব নিয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এত দিন হম্বিতম্বি করেছেন। তবে সেই তিনি এখন আবার চিঠি লিখে ইইউর সঙ্গে আলোচনায় বসার আবদার করেছেন। আলোচনার আহ্বান ছাড়াও ব্রেক্সিট বিষয়ে তাঁর মতামত জানাতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বুধবার বার্লিনে জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল ও বৃহস্পতিবার প্যারিসে ফরাসি প্রধানমন্ত্রী এমানুয়েল মাখোঁর সঙ্গে আলোচনা করতে চান।

নতুন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর বরিস জনসন এই প্রথম ব্রেক্সিট বিষয়ে ইইউকে চিঠি লিখে বিষয়টি সুরাহার ব্যাপারে পদক্ষেপ নিলেন। ইউরোপীয় কাউন্সিলের সভাপতি ডোনাল্ড টুস্ককে লেখা চার পৃষ্ঠার চিঠিতে ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে ইইউভুক্ত দেশ আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে সীমান্ত উন্মুক্ত রাখার কৌশল বা ‘ব্যাকস্টপ’ ব্যবস্থা নিয়ে তাঁর দ্বিমতের কথা জানিয়েছেন।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর মূল আপত্তি আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে স্থল সীমান্তে তথাকথিত ‘ব্যাকস্টপ# 39’ ব্যবস্থা নিয়ে। ওই ব্যবস্থার আওতায় দুই পক্ষের মধ্যে স্থায়ী বোঝাপড়া না হওয়া পর্যন্ত ব্রিটেনের অংশ, উত্তর আয়ারল্যান্ড ও আয়ারল্যান্ডের মধ্যে শান্তি বজায় রাখা ও ব্রিটিশ যুক্তরাজ্যের ঐক্যের স্বার্থে সীমান্তে নিয়ন্ত্রণ এড়াতে ব্রিটেনকে ইইউয়ের শুল্ক কাঠামোর মধ্যে রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। এর ফলে ব্রিটেন অনির্দিষ্টকালের জন্য ইইউর অংশ হিসেবে থেকে যাবে বলে অনেকের আশঙ্কা।

ইতিপূর্বে সাবেক প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে দীর্ঘ আলোচনার পর ব্রেক্সিট মেনে নিলেও জনসন ব্যাকস্টপ–সংক্রান্ত বিষয়টি বাতিল করতে চান৷ ব্যাকস্টপের বিকল্প হিসেবে তিনি পাল্টা অন্য প্রস্তাবও দিয়েছেন। বিচ্ছেদ চুক্তির মধ্যে ব্যাকস্টপ বিষয়টি বাতিল করে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে ব্রিটেনের আগামীর সম্পর্ক স্থির করতে নতুন চুক্তির আওতায় আয়ারল্যান্ড সীমান্ত নিয়ে অন্য কোনো বিকল্প ব্যবস্থার কথা তিনি চিঠিতে লিখেছেন। দীর্ঘ আড়াই বছরের চেষ্টার পর গত বছরের নভেম্বরে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) সঙ্গে ব্রেক্সিট বিচ্ছেদ নিয়ে চুক্তি সম্পাদন করেন। তবে চুক্তিটি ব্রিটিশ পার্লামেন্টে অনুমোদিত না হওয়ায়, এই বছর ১০ এপ্রিল উভয় পক্ষের সম্মতিতে ইইউ থেকে যুক্তরাজ্যের বিচ্ছেদের সময়সীমা ৩১ অক্টোবর ২০১৯ সাল পর্যন্ত বর্ধিত করা হয়।

ব্রেক্সিট বিষয়ে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর চিঠির বিষয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেনি। তবে ইইউ নেতারা গত বছর নভেম্বর মাসে সম্পাদিত ব্রেক্সিট চুক্তির শর্তাবলির বাইরে তারা আলোচনা করতে প্রস্তুত নয় বলেই জানিয়ে এসেছেন। কড়া ব্রেক্সিটবাদী বরিস জনসনের হঠাৎ এহেন আচরণ ইউরোপীয় দেশগুলোর সংবাদমাধ্যমে নানা কৌতুকের জন্ম দিয়েছে।