বার্লিনে আন্তর্জাতিক লিবিয়া সম্মেলন শুরু

বার্লিনে লিবিয়া সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রপ্রধান ও প্রতিনিধিরা। ছবি: রয়টার্স
বার্লিনে লিবিয়া সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী রাষ্ট্রপ্রধান ও প্রতিনিধিরা। ছবি: রয়টার্স

জার্মানির রাজধানী বনে আন্তর্জাতিক লিবিয়া সম্মেলন শুরু হয়েছে। এই সম্মেলনের প্রধান উদ্যোক্তা জার্মানির চ্যান্সেলর আঙ্গেলা ম্যার্কেল। রোববার শুরু হওয়া এই সম্মেলনে ১০টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধান, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রতিনিধিরা রয়েছেন।

বার্লিনের চ্যান্সেলর ভবনে অনুষ্ঠিত এই সম্মেলনের উদ্দেশ্য হলো লিবিয়ার বিবদমান পক্ষগুলোর মধ্যে দীর্ঘদিন থেকে যে হানাহানি ও গৃহযুদ্ধ চলেছে, তার অবসান ঘটানো। এ ছাড়া লিবিয়ায় সম্প্রতি গৃহীত যুদ্ধবিরতিকে সুসংহত করা ও বিবদমান পক্ষগুলোর মধ্যে যুদ্ধবিরতির বিষয়ে একমত হওয়া।

জার্মান সরকারের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, শীর্ষ লিবিয়া সম্মেলন আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হওয়ার আগেই চ্যান্সেলর ম্যার্কেল এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাইকো মাশ লিবিয়ার প্রধানমন্ত্রী ফয়েজ সররাজ এবং তাঁর বিরোধী পক্ষ জেনারেল খলিফা হাফতারের সঙ্গে দেখা করেছেন। অবশ্য এই আলোচনা বার্লিনে পৃথকভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে।

লিবিয়া সম্মেলনে তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও, ইতালির প্রধানমন্ত্রী জিউসেপ্প কন্টি, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন, জাতিসংঘের সেক্রেটারি জেনারেল আন্তোনিও গুতেরেসে যোগ দিচ্ছেন। যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, চীন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, ইতালি, মিসর, আলজেরিয়ার পাশাপাশি জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, আফ্রিকান ইউনিয়ন এবং আরব লিগের প্রতিনিধিরা এই সম্মেলনে প্রতিনিধিত্ব করেছেন।

বিভিন্ন দেশর রাষ্ট্রপ্রধান ও প্রতিনিধিরা মূল আলোচনার পাশাপাশি নিজেদের মধ্যে লিবিয়ার গৃহযুদ্ধ নিয়ে মতবিনিময় করছেন। ভ্লাদিমির পুতিন ও এরদোয়ান সম্মেলনের আগেই দ্বিপক্ষীয় আলোচনার জন্য বৈঠক করেছেন। দুজনই লিবিয়ায় যুদ্ধবিরতির গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছেন। এরদোয়ান লিবিয়ার জেনারেল খলিফা হাফতারকে অবিলম্বে গৃহযুদ্ধ বন্ধ করতে বলেছেন, যাতে করে রাজনৈতিক প্রক্রিয়া ও আলোচনা শুরু হতে পারে। এরদোয়ান হাফতারকে তাঁর আক্রমণাত্মক আচরণের অবসানের আহ্বান জানিয়েছেন। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী পম্পেও প্রাথমিক আলাপের জন্য তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেভলিয়েট কভুসোগলুর সঙ্গে দেখা করেছেন। যুদ্ধবিরতি চুক্তির পাশাপাশি পম্পেও লিবিয়ার গৃহযুদ্ধ থামাতে সেখানে একটি কার্যকর নজরদারির ব্যবস্থা নেওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন।

ইউরোপীয় ইউনিয়নর পররাষ্ট্র নীতিবিষয়ক প্রধান জোসেফ বোরেল লিবিয়ায় অস্ত্র নিষেধাজ্ঞার ওপর নজর রাখতে ইউরোপকে মূল ভূমিকা নিতে আহ্বান জানিয়েছেন। সম্মেলন শুরুর আগেই তিনি বলেন, এই শীর্ষ সম্মেলনের পরে সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন অত্যন্ত জরুরি।
লিবিয়া সম্মেলনের কারণে বার্লিনে প্রায় পাঁচ হাজার পুলিশ নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছে।