জার্মানিতে লকডাউনে শিথিলতা, তবে বাড়ছে মেয়াদ

জার্মানির মানচিত্র
জার্মানির মানচিত্র

জার্মানিতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে চার সপ্তাহ ধরে বিদ্যমান লকডাউনের সময় আগামী ৩ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। প্রথমে জার্মানিতে এই লকডাউন ব্যবস্থা ক্রমান্বয়ে চারটি ধাপে শিথিল করার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। আপাতত কিছু ক্ষেত্রে লকডাউনের শিথিলতা এনে আগামী ৪ মে থেকে লকডাউন তুলে নেওয়ার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে।

বুধবার জার্মানির চ্যান্সেলার অ্যাঙ্গেলা ম্যার্কেল ও ১৬ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা কয়েক ঘণ্টা ধরে ভিডিও আলোচনার পর লকডাউন ব্যবস্থার কিছুটা শিথিলতা নিয়ে কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

জার্মানিতে স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আগামী ৩ মে পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। তবে স্কুলগুলোর মাধ্যমিক শ্রেণীর পরীক্ষাগুলি অনুষ্ঠিত হবে। আপাতত আগামী ২০ এপ্রিল সোমবার থেকে গাড়ি, সাইকেল, টায়ার, আসবাবপত্র, টেলিফোন বইয়ের দোকানগুলো খোলা যাবে। ছোট ছোট ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান, যেগুলো ৮০০ বর্গমিটারের বড় নয়, এই রকম প্রতিষ্ঠানগুলোও ওইদিন থেকে খোলা যাবে। 

তবে সুইমিংপুল, শরীরচর্চাকেন্দ্র, সেলুন, যাদুঘর, চিড়িয়াখানা, বোটানিকেল গার্ডেন, বুন্দেশলিগা টুর্নামেন্ট, কনসার্ট, ধর্মশালা, ধর্মীয় অনুষ্ঠান ও যেকোনো বড় অনুষ্ঠান আগামী আগস্ট মাস পর্যন্ত বন্ধই থাকবে।

সর্বসাধারনের চলাফেরাতে ন্যুনতম দেড় মিটার দূরত্ব ও দুজনের বেশি চলাফেরার বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা বিরাজমান থাকবে। বাস, ট্রাম, ট্রেন বা সাধারণ যাতায়াত মাধ্যমগুলোতে জনসাধারণকে মাস্ক পরার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। সবাইকে আপাতত আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে যাতায়াত ও যেকোনো ভ্রমণে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

বৃদ্ধাশ্রম, নার্সিংহোম, প্রতিবন্ধী মানুষদের থাকার জায়গাগুলোতে করোনাভাইরাসের সংক্রমণের বিষয়ে বিশেষ সতর্কতার কথা বলা হয়েছে।

জার্মানির চ্যান্সেলর অফিস থেকে জানানো হয়েছে, এই মুহূর্তে জার্মানিতে প্রতি সপ্তাহে সাড়ে ছয় লাখ মানুষের করোনাভাইরাসের সংক্রমণ পরীক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে। জার্মানির যে কোনো স্থানে করোনাভাইরাসের আক্রান্তদের জন্য কোথাও লোকবল প্রয়োজন হলে, সেক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় লোকবলের ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানানো হয়।

চ্যান্সেলার অফিস থেকে আরও বলা হয়, করোনাভাইরাসের সংক্রমণের প্রতিষেধক আবিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত জনজীবনে স্বাভাবিক অবস্থা কতদিনে ফিরে আসবে তা এই মুহূর্তে সঠিক করে বলা যাবে না।

জার্মানির সংক্রমণ রোগ বিষয়ের গবেষণা কেন্দ্র রবার্ট কক ইনস্টিটিউটের সভাপতি প্রফেসর লোথার ভিলার জার্মানিজুড়ে একসঙ্গে লকডাউন ব্যবস্থা তুলে নেওয়ার বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করেছিলেন। গত চার সপ্তাহ থেকে জার্মানিজুড়ে ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত লোকডাউনের ঘোষণা ছিল।

বুধবার, ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত জার্মানিতে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৩৩ হাজার ২০৯ জন। সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৭২ হাজার ৬০০ জন। এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৩ হাজার ৫৯২।