ভারতে করোনা সংক্রমণ হু হু করে বাড়ছে

ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে করোনায় আক্রান্ত মৃত এক ব্যক্তির প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন পরিবারের সদস্যরা। ছবি: রয়টার্স
ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লিতে করোনায় আক্রান্ত মৃত এক ব্যক্তির প্রতি শেষ শ্রদ্ধা জানাচ্ছেন পরিবারের সদস্যরা। ছবি: রয়টার্স

ভারতে যে হারে সংক্রমণ বাড়ছে তাতে আগামী ১০ দিনে আরও এক লাখ মানুষ করোনা আক্রান্ত হবেন বলে আশঙ্কা। গত ২৪ ঘণ্টায় সংক্রমণ অতীতের সব রেকর্ড ছাপিয়ে গেছে। আক্রান্ত হয়েছেন ৯ হাজার ৩০৪ জন। কোভিড আক্রান্ত মোট রোগীর সংখ্যা এই মুহূর্তে ২ লাখ ১৬ হাজার ৯১৯।

ভারতে রোগীর সংখ্যা ১ লাখ হতে সময় নিয়েছিল ১১০ দিন। পরবর্তী ১ লাখ সংক্রমিত হয় মাত্র ১৫ দিনে। কিন্তু রোগ ছড়ানোর এখন যা গতি, তাতে ২ থেকে ৩ লাখে পৌঁছাতে সময় লাগতে পারে ১০ দিনের মতো। এই দ্রুতগামী সংক্রমণ সরকারের দুশ্চিন্তা বাড়িয়েছে। কারণ, নিষেধাজ্ঞার বহর দিন দিন কমানো হচ্ছে।

মৃত্যুর সংখ্যাও রীতিমতো উদ্বেগের। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাব অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ২৬০ জন। মোট মৃত্যুর সংখ্যা ৬ হাজারের সীমা পেরিয়ে গেল। শুধু মহারাষ্ট্রেই মারা গেছেন আড়াই হাজারের বেশি মানুষ। গুজরাট দ্বিতীয় স্থানে (১ হাজার ১২২)। তৃতীয় স্থানে রাজধানী দিল্লি (৬০৬)।

মহারাষ্ট্রে সংক্রমণ কী করে ঠেকানো যাবে, তার কোনো হদিস পাওয়া যাচ্ছে না। ওই রাজ্যে রোগীর সংখ্যা ইতিমধ্যেই ৭৫ হাজার হতে চলেছে। সংক্রমণের দিক থেকে তামিলনাড়ু এর পরেই। রোগীর সংখ্যা ২৫ হাজার ৮৭২। তৃতীয় স্থানে দিল্লি (২৩ হাজার ৬৪৫)। তারপর গুজরাট (১৮ হাজার ১০০), রাজস্থান (৯ হাজার ৬৫২), উত্তর প্রদেশ (৮ হাজার ৭২৯)।

ভারতে কোনো কোনো রাজ্যে এলাকাভিত্তিক গোষ্ঠী সংক্রমণ হচ্ছে কি না, জানতে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিকেল রিসার্চ (আইসিএমআর) সক্রিয়। মহারাষ্ট্রের ধারাবিসহ কিছু কিছু এলাকায় আইসিএমআরের নির্দেশ অনুযায়ী ক্লাস্টারভিত্তিক রক্তের নমুনা সংগ্রহ শুরু হয়েছে। এ জন্য রাজ্যে রাজ্যে এলাকা বিভাজন ও চিহ্নিত হয়েছে। যেমন পশ্চিমবঙ্গে চিহ্নিত হয়েছে পূর্ব মেদিনীপুরের ১০টি ক্লাস্টার।

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের আশঙ্কা, পরিযায়ী শ্রমিকদের ঘরে ফেরা, দূরপাল্লার বিশেষ ট্রেন চালানো ও বিমান চলাচলের সিদ্ধান্ত করোনার প্রকোপ আরও বাড়িয়ে দেবে। পরিযায়ী শ্রমিক মারফত গ্রামাঞ্চলেও তা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। উত্তর প্রদেশ ও হরিয়ানার সঙ্গে রাজধানী দিল্লির সীমান্ত আগামী সোমবার পর্যন্ত সিল করা রয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট এই তিন রাজ্য সরকারকে বলেছে, এক সপ্তাহের মধ্যে তিন রাজ্যের মধ্যে চলাচলের বিষয়টির সুরাহা করতে হবে। দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেসের ১৯ জন ডাক্তার ও ৩৮ জন নার্স করোনা আক্রান্ত। দিল্লি সরকারের নির্দেশ, ভিন রাজ্য থেকে যাঁরাই ট্রেন, বাস ও বিমানে রাজধানীতে আসবেন, সবাইকে বাধ্যতামূলকভাবে ৭ দিন নিজ গৃহে কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে।