বাঁশের চিকে ঘরেরসাজ

পর্দার বদলে বাঁশের চিক অন্দরে ৈশল্পিক একটা আবহ তৈরি করে। ছবি: নকশা, কৃতজ্ঞতা: জাকির হোসেন
পর্দার বদলে বাঁশের চিক অন্দরে ৈশল্পিক একটা আবহ তৈরি করে। ছবি: নকশা, কৃতজ্ঞতা: জাকির হোসেন

এই গরমে বাইরে থাকলে তো কথাই নেই, বাড়ির ভেতরেও যেন আগুনের হলকা। সে কারণেই বাড়িতে সবাই চান কিছুটা প্রশান্তি আর শীতল আমেজ। শীতল বা ঠান্ডা ভাব আনার জন্য বাড়ির ভেতরে জানালা কিংবা বারান্দায় পর্দার পাশাপাশি ব্যবহার করতে পারেন বাঁশের চিক। এটি রোদের তাপ বাড়িতে ঢুকতে বাধা দেবে কিন্তু বাতাস চলাচলে বাধা দেবে না। বাঁশের চিক ব্যবহারে বাড়ি শীতল তো হবেই, পাশাপাশি বাড়বে অন্দরের সৌন্দর্য।

স্থাপত্যবিষয়ক প্রতিষ্ঠান মেটামরফিকের স্থপতি ফারাহ মৌমিতা বলেন, বাড়িতে প্রকৃতির ছোঁয়া মানেই প্রশান্তি। বাঁশের চিক যেহেতু প্রাকৃতিক উপাদান দিয়ে তৈরি, তাই স্বাভাবিকভাবেই এটি ব্যবহারে বাড়িতে শীতল ভাব আসে। যে কারণে চোখে ও মনে স্নিগ্ধতা অনুভব হবে।

মৌমিতা আরও জানালেন, বাড়িতে জানালার পর্দা প্রায় মেঝে পর্যন্ত ঝোলানো হয়, কিন্তু চিক জানালার দৈর্ঘ্য অনুযায়ী টাঙাতে হয়। চিক প্রস্থের দিক দিয়ে খুব বেশি চওড়া না ব্যবহার করাই ভালো। এতে ওঠাতে-নামাতে অসুবিধা হতে পারে। জানালার আয়তন যতটুকু চিক সাধারণত ততটুকুই হয়ে থাকে। আর বাঁশের চিকের আরেকটি সুবিধা হলো, সব ধরনের বাড়ির ডিজাইন বা স্টাইলের সঙ্গে সহজেই মানিয়ে যায়।

বাঁশের চিক ব্যবহারের পেছনে একটি বড় কারণ হলো, এটি বেশ দীর্ঘস্থায়ী, সহজে নষ্ট হয় না। আরও স্থায়ী ও আকর্ষণীয় করতে ন্যাচারাল কালার অথবা বিভিন্ন রং দিয়ে নকশাও করা যায়। যাঁদের বারান্দায় অতিরিক্ত রোদ আসে, তাঁরা ঘন বুননের চিক ব্যবহার করতে পারেন। আবার চিকের পেছন দিকে মোটা হালকা রঙের কাপড় সেলাই করেও ব্যবহার করা যায়। বসার ঘরে ভিন্নতা ও আভিজাত্য এনে দিতে চিকের নিচের দিকে বা সাইডে লেস কিংবা পাড় বসিয়ে দেওয়া যায়। আবার ঘরের ভেতর পার্টিশন হিসেবেও ফোলডেড চিক ব্যবহার করা যায়।

যত্ন-আত্তি

বাঁশের চিক সহজে নষ্ট হয় না। পরিষ্কার করাও খুব কঠিন নয়। প্রতিদিন ঘর পরিষ্কার করার সময় ঝেড়ে নিলেই হবে। আর বেশি ময়লা হলে সাবান পানিতে ভিজিয়ে ধুয়ে শুকিয়ে নিতে হবে। বাঁশের চিক বৃষ্টি বা পানিতে ভিজলে নষ্ট হয় না। তবে পানির দাগ পড়ে গেলে ভেজা কাপড় দিয়ে মুছে নিলেই হয়।

কোথায় পাওয়া যাবে

রাজধানীর বনানী ১১ নম্বর সড়ক, ধানমন্ডি ৮ নম্বর সড়কের ব্রিজের আশপাশে, মিরপুর রোডের মৃৎশিল্পের দোকানগুলোসহ বিভিন্ন স্থানে এগুলো পাওয়া যায়।

দরদাম

সাধারণত প্রতি বর্গফুট ১৫০ টাকা থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে। তবে সুতার গুণগত মানের ওপর নির্ভর করে এবং নকশার ওপর ভিত্তি করে দামের পরিবর্তন হতে পারে।