নতুন পর্দায় ভিন্ন ঘর

ঘরের আসবাবের সঙ্গে মিলিয়ে পর্দা বেছে নিতে হবে। কৃতজ্ঞতা: মেহেরুন ফারজানা, ছবি: খালেদ সরকার
ঘরের আসবাবের সঙ্গে মিলিয়ে পর্দা বেছে নিতে হবে। কৃতজ্ঞতা: মেহেরুন ফারজানা, ছবি: খালেদ সরকার

নতুন সাজপোশাক শুধু নয়, ঈদের দিন বাড়িটাকেও নতুনভাবে সাজাতে চান অনেকে। আর এতে উৎসবের আনন্দ চলে আসে ষোলো আনা। আসবাবে সব সময় নতুন কিছু হয়তো যোগ করা যায় না, তবে ঘর সাজানোর অনুষঙ্গে নতুনত্ব আনা যায়। অন্দরসজ্জায় উৎসবের আমেজ আনতে পর্দার জুড়ি নেই। রং, নকশায় নতুন পর্দা পুরোনো ঘরকে উজ্জ্বল করে তুলতে পারে।
আর্কভিজ লিমিটেডের প্রধান স্থপতি মেহেরুন ফারজানা জানালেন, পর্দাটা অবশ্যই হতে হবে ঘরের দেয়ালের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে। দেয়ালের রং যদি হালকা হয়, তবে বিপরীত ও উজ্জ্বল রঙের পর্দা ভালো লাগবে। যাঁদের বাড়ির আসবাব আকারে বড় এবং ভারী নকশার—তাঁদের ঘরে জমকালো কাজ করা পর্দা ব্যবহার না করাই ভালো। এ ক্ষেত্রে বেছে নিতে পারেন হালকা নকশার এক রঙা বা নেটের পর্দা। যে জানালা দিয়ে বেশি রোদ আসে, সে জানালায় ঝুলিয়ে দিন গাঢ় রঙের পর্দা। গাঢ় রঙের পর্দা বাড়তি গরম থেকে বাঁচাবে। আবার একই সঙ্গে পর্দার রং জ্বলে যাওয়ার আশঙ্কাও কমে আসবে। বসার ঘরে হলুদ, কমলা বা মেরুনের মতো উজ্জ্বল রঙের পর্দা, শিশুদের ঘরে কার্টুন অথবা ফুলেল ছাপের পর্দা লাগাতে পারেন। শোবার ঘরে হালকা রঙের ভারী কাপড়ের পর্দা ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

ঘরের আসবাবের সঙ্গে মিলিয়ে পর্দা বেছে নিতে হবে। কৃতজ্ঞতা: মেহেরুন ফারজানা, ছবি: খালেদ সরকার
ঘরের আসবাবের সঙ্গে মিলিয়ে পর্দা বেছে নিতে হবে। কৃতজ্ঞতা: মেহেরুন ফারজানা, ছবি: খালেদ সরকার

উৎসবের আবহ আনতে পর্দার রেইলটির কথাও ভাবতে হবে। বাজারে বাহারি নকশা ও নানা রঙের রেইলের কমতি নেই। অবশ্যই পর্দা এবং ঘরের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে কিনতে হবে। এ ছাড়া পর্দা বেঁধে রাখতে টারসেল ব্যবহার করা যেতে পারে। ছোট ছোট নতুন সংযোজনগুলোই ঘরের রং, নকশা বদলে দেবে।
আইলেট (কুঁচির মতো মোটা ভাঁজ করা এবং ওপরে রিং দেওয়া) দেওয়া পর্দা এখন বেশ জনপ্রিয়। বাড়িতে বাঙালিয়ানার ছাপ রাখতে সুতি বা খাদি কাপড়ের ওপর দেশি মোটিফের নকশা করা পর্দাও বেছে নিচ্ছেন অনেকে।

আইলেট দেওয়া পর্দা
আইলেট দেওয়া পর্দা

পাশাপাশি ব্লকপ্রিন্ট, জামদানি নকশার ছাপ অথবা নকশিকাঁথার কাজ করা পর্দা মিলবে বিভিন্ন ফ্যাশন হাউসে। মিরপুর রোকেয়া সরণির রিয়াদ ফেব্রিকস থেকে মো. আজহার জানান, পেলমেট (পর্দার ওপরে ঝালর দেওয়া) দেওয়া পর্দা ব্যবহার কিছুটা অসুবিধা হওয়ায় এখন আইলেট দেওয়া পর্দার দিকে ক্রেতারা বেশি ঝুঁকছেন। বর্তমানে সুতি, জ্যাকেট কাপড় ও এম্বোস কাপড়ের পর্দার চাহিদা বেশি। এ ছাড়া নেট আর টিস্যু কাপড়ের পর্দা সব সময়ই জনপ্রিয়। বিক্রেতারা মনে করছেন, সামনেও এর জনপ্রিয়তা থাকবে।

পর্দা বেঁধে রাখতে টারসেলের ব্যবহার
পর্দা বেঁধে রাখতে টারসেলের ব্যবহার

দরদাম
রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোড, রোকেয়া সরণি, গুলশান, নিউমার্কেটসহ অনেক মার্কেটে পর্দার দোকান রয়েছে। কাপড়ভেদে পর্দা প্রতি পিস ৮০০ থেকে শুরু করে ২ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। গজ হিসেবে কিনতে চাইলে গজপ্রতি ৪০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা পড়বে। টারসেলের দাম পড়বে ৩০০ থেকে ১ হাজার, টারসেল স্ট্যান্ডের দাম ৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা। এ ছাড়া আড়ং, কে ক্রাফট, অঞ্জন’সসহ অন্যান্য ফ্যাশন হাউসেও পর্দা পাওয়া যায়। সুতি অথবা খাদি কাপড়ের এসব পর্দায় ব্লক, বাটিক অথবা হাতের কাজ করা থাকে। এগুলোর দাম পড়বে ৯০০ থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা প্রতিটি।