পরিপাটি বিছানা

বিছানার ওপরে আলাদা করে বেডকভার রাখতে পারেন
বিছানার ওপরে আলাদা করে বেডকভার রাখতে পারেন

দিনের তিন ভাগের এক ভাগ সময় কাটে ঘুমিয়ে। ঘুমানোর জায়গাটি যদি হয় পরিপাটি, গোছানো তাহলে ঘুমটাও যেন জমিয়ে আসে। শুধু আরামদায়ক হলেই হবে না, বিছানার ওপর বিছানো কাপড়টিও যেন টান টান সুন্দর থাকে, নজর দিন সেদিকেও।
আরামদায়ক বিছানার জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো তোশক বা ম্যাট্রেসটি ভালো হওয়া। কেননা তোশক ভালো না হলে ঘুম তো ভালো হবেই না, সেই সঙ্গে পিঠে-কোমরে ব্যথাও হতে পারে। এই ম্যাট্রেস বা তোশক যেহেতু ধোয়া যায় না তাই এর আলাদা কভার বানিয়ে নেওয়া যেতে পারে। যেটি পরে খুলে ধুয়ে নেওয়া যায়। এরপর আসে বিছানার চাদর। সাধারণত বাড়ির রং এবং জানালার পর্দার সঙ্গে মিলিয়ে বিছানার চাদর বিছানো হয়। হালকা রঙের চাদরই চোখে আর মনে প্রশান্তি এনে দেয়। কিন্তু বাড়িতে যদি ছোট শিশু থাকে তবে গাঢ় রঙের বড় প্রিন্টের চাদর ব্যবহার করলে কোনো দাগ পড়লে তা দেখা যাবে না। চাদরটি হতে হবে খাটের মাপমতো। খাটের ধরন অনুযায়ী চাদর ঝুলিয়ে বা তোশকের নিচে ঢুকিয়ে দিতে হবে।
বক্স খাট না হলে খাটের নিচে বেশ খানিকটা জায়গা থাকে। অনেকে সে জায়গাটুকুকে স্টোর হিসেবেও ব্যবহার করে থাকেন। চাইলে বিছানা থেকে চাদর ঝুলিয়ে দিয়ে ঢেকে দিতে পারেন। তবে খেয়াল রাখবেন নিচের দিকে যেন সমানভাবে চাদরটি ঝুলে থাকে। বক্স খাট হলে চাদর তোশকের নিচে গুঁজে দিন। চাদর গোঁজার সময় সমানভাবে চারদিক দিয়ে গোঁজার চেষ্টা করুন। এতে তোশকের ওপরে কুঁচকে থাকবে না।
এবার বালিশ সাজানোর পালা। মাথার বালিশ সিঙ্গেল খাটে কমপক্ষে দুটি, ডাবল খাটে চারটি রাখা উচিত। এ ছাড়া পছন্দমতো কুশন রাখা যেতে পারে। শিশুদের বিছানায় বিভিন্ন রকম পুতুল দিয়ে সাজিয়ে রাখলে খুবই ভালো লাগবে। এ ছাড়া প্রতিদিন বিছানা পরিষ্কার করার সময় হাত দিয়ে ভালো করে ফুলিয়ে নিন। এতে বালিশ দীর্ঘদিন আরামদায়ক থাকবে।

চাইলে বিছানার চাদরটি চারদিক দিয়ে গুঁজে দিতে পারেন। কৃতজ্ঞতা: পিটার ম্যাকেইন
চাইলে বিছানার চাদরটি চারদিক দিয়ে গুঁজে দিতে পারেন। কৃতজ্ঞতা: পিটার ম্যাকেইন


বাড়ির সব আসবাবের মাঝে বিছানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিছানার সঠিক যত্ন নেওয়া প্রয়োজন বলে জানান গার্হস্থ্য অর্থনীতি কলেজের সম্পদ ব্যবস্থাপনা ও এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ বিভাগের প্রভাষক তাসমিয়া জান্নাত। তিনি বলেন, ‘কক্ষের সঠিক স্থানে বিছানাটি রেখে বাড়ির রং ও পর্দার রঙের সঙ্গে মিলিয়ে চাদর বিছানো হলে দেখতে ভালো লাগবে। এ ছাড়া বিছানায় কয়েক দিন পরপরই চাদর পাল্টানো উচিত। আমরা অনেকেই নকশা করা বা এপ্লিক করা চাদর বিছানায় ব্যবহার করি, এটি বেড কভার। ঘুমানোর সময় এ জাতীয় চাদর না ব্যবহার করে সুতি একরঙা বা ছাপা চাদর ব্যবহার করা আরামদায়ক। নকশাদার চাদরগুলো দিনের বেলা বেড কভার হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে সারা দিনের ধুলাবালু, ক্ষতিকর জীবাণু মূল চাদরের ওপর পড়বে না, কিছুটা হলেও রোগজীবাণু থেকে দূরে থাকা যাবে।’
বিছানার চাদর সুন্দর ও পরিপাটি রাখতে পরামর্শ দেন ফোর পয়েন্টস বাই শেরাটন হোটেলের এক্সিকিউটিভ হাউসকিপার খোরশেদ আলম। তিনি জানান, চাদর যে ধরনেরই হোক না কেন তা যদি চারদিকে সমান রেখে, টান টান করে বিছানো হয় তাহলেই দেখতে ভালো লাগবে। চাদর মেঝে থেকে কমপক্ষে ছয় ইঞ্চি উঁচুতে রাখতে হবে। তিনি আরও জানান, একটি বিছানায় চারটি পর্যন্ত মাথার বালিশ রাখা যায়। এই বালিশগুলো শুইয়ে অথবা খাড়া করে রাখা যায়, সেই সঙ্গে পছন্দমতো কুশন ব্যবহার করা যায়। গরমের সময় নকশিকাঁথা বা বেড রানার পায়ের দিকে ভাঁজ করে রাখলে দেখতে ভালো লাগবে।