রোগের নাম ময়া ময়া

জাপানি ভাষায় ‘ময়া ময়া’ শব্দের অর্থ ধোঁয়ার কুণ্ডলী। ময়া ময়া রোগে মস্তিষ্কের রক্তনালি ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যায়। রক্তনালিগুলোকে ধোঁয়ার কুণ্ডলীর মতো দেখায় বলে এর নাম ময়া ময়া। নামটা অপরিচিত শোনালেও আমাদের দেশে ময়া ময়া রোগী শনাক্ত হয়েছে। চিকিৎসাও করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত জাতীয় নিউরোসায়েন্স ইনস্টিটিউট হাসপাতালে ৩০টি ময়া ময়া রোগীর সফল বাইপাস অপারেশন সম্পন্ন হয়েছে। অন্যান্য দেশের বিভিন্ন হাসপাতালের তুলনায় এ সাফল্যের হার অনেক বেশি।

রোগের প্রাথমিক অবস্থায় শিশু খেলাধুলা করার সময়, খাবার খাওয়ার পর বা কান্নাকাটি করার পর হঠাৎ শরীরের এক দিক দুর্বল হয়ে যায়। বিশ্রাম নিলে আবার কিছুক্ষণ পর ঠিক হয়ে যায়। যখন রক্তনালি কিছুটা সংকুচিত হয় তখন মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ ব্যাহত হয়, দৌড়ঝাঁপ করা, খাওয়া বা কান্না করার সময় মস্তিষ্কে রক্তের চাহিদা বেড়ে গেলে সংকুচিত রক্তনালি যথেষ্ট রক্ত সঞ্চালন করতে পারে না। ফলে শরীরের বিপরীত দিকে দুর্বলতা দেখা দেয়। একে বলে ট্রানজিয়েন্ট হেমিপেরেসিস বা সাময়িক পক্ষাঘাত। মায়েরা অভিযোগ করেন, শিশু স্কুলে গিয়ে খেলাধুলা করলে এক দিক অবশ হয়ে যায়, বাড়িতে ফিরে এলে আবার ভালো হয়। অনেকে ভাবেন বিষয়টি শিশুর ভণিতা, স্কুলে না যাওয়ার অজুহাত। গ্রামে মনে করা হয় জিন-ভূতের আছর। খুব একটা পরিচিত রোগ না হওয়ায় চিকিৎসকেরাও অনেক সময় বিভ্রান্তির মধ্যে পড়েন। 

ডা. সুদীপ্ত কুমার মুখার্জি