মনের জোর বাড়াতে যা করবেন

মেজাজ ফুরফুরে রাখুন, মনের জোর বাড়বে। ছবি: অধুনা
মেজাজ ফুরফুরে রাখুন, মনের জোর বাড়বে। ছবি: অধুনা

কখনো কি ভেবে দেখেছেন, জীবনটা একেক দিনে একেক রকম হয় কেন? কখনো হতাশার, মন খারাপের আবার কখনো আনন্দের-অনুপ্রেরণার। আপনার একেকটা দিন একেক রকম কেন হচ্ছে? টাইম ম্যাগাজিনে মনোবিদ অ্যামি মরিন জানাচ্ছেন, ‘আমাদের দিন কেমন কাটবে, সেটা নির্ভর করছে মানসিক অবস্থা-মনের জোরের ওপর।’

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইকো সোশ্যাল কাউন্সেলর কাজী রুমানা হকের ভাষ্যও একই। আপনার মনের জোর যত হবে, দিনের ওপরে কিন্তু আপনার নিয়ন্ত্রণ তত বাড়বে।

ভালো থাকতে নিজের জন্য কয়েকটি অভ্যাস তৈরি করতে পারেন, যা কিনা মনের জোর বাড়াবে। টাইম ম্যাগাজিনে মনোবিদ অ্যামি মনের জোর বাড়ানোর কয়েকটি উপায় বাতলেছেন।

১. কৃতজ্ঞতাবোধ প্রকাশ করুন: আপনার গাড়ির চালক কিংবা ঘরের গৃহকর্মীকে শেষ কবে ধন্যবাদ জানিয়েছেন? মনে মনে কৃতজ্ঞ হওয়ার চেয়ে কৃতজ্ঞতাবোধ প্রকাশ করুন মুখে! অন্যকে ধন্যবাদ জানিয়ে, শুভেচ্ছা জানিয়ে দিন শুরু করুন। কৃতজ্ঞতাবোধের অভ্যাস করতে বেশি সময় কিন্তু লাগে না—দুই থেকে তিন মিনিটের মধ্যেই শুরু করা যায় কৃতজ্ঞতাবোধ প্রকাশ।

২. নিজের চেনা পরিবেশ থেকে বাইরে আসুন: প্রতিদিন একই কাজ করতে করতে আমাদের মধ্যে আলস্য ভর করে। িনজেই আলস্য কাটানোর উপায় তৈরি করতে পারেন। যে পথ ধরে প্রতিদিন বাজারে যান, অন্য পথে এখন থেকে বাজারে যাওয়ার অভ্যাস করতে পারেন। লিফটের বদলে সিঁড়ি দিয়ে হেঁটে চলার নতুন অভ্যাস করুন।

৩. নিজেকে একা সময় দিন: দৈনন্দিন জীবনের ব্যস্ততাকে একপাশে রেখে দিনের কোনো একটি সময় নিজেকে সময় দিন। মিনিট দশেক সময় দিন। একাকী এই সময়ে নিজের সঙ্গে নিজে কথা বলুন, নিজের সমস্যাগুলো কী কী, জীবন ১০ বছর পরে কোথায় যাবে, তা নিয়ে ভাবুন। ছুটির সময় টিভির সামনে সময় কম কাটিয়ে বই পড়ুন, কিংবা ছাদের এক কোণে নিজের জন্য একটু সময় দিন।

৪. নিজের দক্ষতা বাড়ান: ভালো প্রযুক্তি ব্যবহার জানেন, কিংবা অন্য কোনো কাজে দারুণ দক্ষ আপনি? এগুলোকে আপনি নিজের সুপারপাওয়ার ভাবতে পারেন। এগুলো আসলে সুপারপাওয়ার নয়! আপনি হয়তো খুব সকালে ঘুম থেকে ওঠেন, কিংবা যেকোনো সমস্যার গাণিতিক ও কার্যকর সমাধান নিয়ে ভাবতে পারেন—এসবই আপনার সুপারপাওয়ার। কী নিয়ে চিন্তা করতে হয়, তা না ভেবে কীভাবে চিন্তা করতে হয়, তা-ই জানা সুপারপাওয়ার। ছুটির সময় নিজের দুর্বলতা আর শক্তিগুলো একটি কাগজে লিখে আগামী ছয় মাস কীভাবে সুপারপাওয়ার বাড়াবেন, তা নির্ধারণ করুন।

৫. সমস্যাকে সুযোগ হিসেবে তৈরি করুন: অফিসে দেরি করে যান বলে বসের রাগ আপনার ওপর ঝরে? ঘুম থেকে দেরিতে ওঠেন বলেই তো দেরি হয়, আবার দেরি করে অফিসে গেলে কাজের চাপ, মনের চাপও বেশি থাকে। অফিসে প্রতিদিন নির্ধারিত সময়ের এক ঘণ্টা আগে আসুন, বাড়তি সময়টায় বই পড়ুন, পত্রিকা পড়ুন, সারা দিন কী কাজ করবেন, তা ঠিক করে নিন—এভাবে সমস্যা থেকে সুযোগ তৈরি করুন। ছুটির সময় প্রতিদিন ভোরে ঘুম ভাঙার অভ্যাস করুন।