জলপাই তেলে ত্বক সুস্থ, চুল সুন্দর

শীতে ত্বক ভালো রাখবে জলপাই তেল। ছবি: নকশা
শীতে ত্বক ভালো রাখবে জলপাই তেল। ছবি: নকশা

চুল ও ত্বকের যত্নে শীতে জলপাই তেলের জুড়ি মেলা ভার। শুধু শুষ্ক ও স্বাভাবিক ত্বকের জন্যই নয়, তৈলাক্ত ত্বকের জন্য এই তেল সমান কার্যকর।

হার্বস আয়ুর্বেদিক স্কিন অ্যান্ড হেয়ার কেয়ার ক্লিনিকের রূপবিশেষজ্ঞ শাহীনা আফরিন জানালেন, চুলের যত্নেও রয়েছে জলপাই তেলের জাদুকরি ক্ষমতা। ত্বকের বেলায় এর ধরন বুঝে জলপাই তেল ব্যবহার করতে হবে। জলপাই তেল দিয়ে ঘরেই বানানো যায় কিছু প্যাক, স্ক্র্যাবার বা ময়েশ্চারাইজার। এগুলো ব্যবহারে ত্বক থাকবে সতেজ ও সুস্থ।

শুষ্ক ত্বকের জন্য

প্যাক: অতিরিক্ত শুষ্কতার কারণে যঁাদের ত্বকে বলিরেখা পড়ে তাঁরা জলপাই তেলের প্যাক ব্যবহার করতে পারেন। এ জন্য ১ চা-চামচ জলপাই তেলের সঙ্গে একটি ডিমের কুসুম এবং দেড় চা-চামচ ছোলার ডালের বেসন মিশিয়ে পুরো মুখে লাগাতে হবে। ১৫ মিনিট পর মুখ ভালোভাবে ধুয়ে ফেলতে হবে। সপ্তাহে তিন থেকে চার দিন এই প্যাকটির ব্যবহার ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়াতে সাহায্য করবে।

স্ক্র্যাবার: আধা চা-চামচ জলপাই তেলের সঙ্গে ২ টেবিল চামচ কফি, ১ টেবিল চামচ মধু, ১ টেবিল চামচ ব্রাউন সুগার ভালো করে মিশিয়ে পুরো শরীরে লাগাতে পারেন। সপ্তাহে ১ দিন এই স্ক্র্যাবারটি ব্যবহার করতে হবে।

ময়েশ্চারাইজার: ১ কাপ অ্যালোভেরা জেল ২ কাপ গরম পানিতে ১০ থেকে ১৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখতে হবে। এবার পানিটুকু ছেঁকে জেলটুকু বের করে নিন। এতে অ্যালোভেরা জেলে থাকা ব্যাকটেরিয়াগুলো মরে যাবে। অ্যালোভেরা জেলের সঙ্গে ২ টেবিল চামচ জলপাই তেল, ২টি ই ক্যাপ এবং এক টেবিল চামচ গ্লিসারিন মিশিয়ে ভালো করে ব্লেন্ড করে নিতে হবে। এই মিশ্রণটি ১ মাস সংরক্ষণ করা যাবে। যাদের ত্বক অনেক বেশি শুষ্ক তারা টানা তিন মাস প্রতিদিন এই ময়েশ্চারাইজারটি ব্যবহার করলে পরে আর ত্বকের শুষ্কতায় ভুগবেন না।

তৈলাক্ত ত্বকের জন্য

প্যাক: যাঁদের ত্বক তৈলাক্ত তাঁরা শুধু শীতকালে এই প্যাকটি ব্যবহার করবেন। গরমকালে তৈলাক্ত ত্বকে জলপাই তেল ব্যবহার না করাই ভালো। তুলসী পাতা ও পুদিনা পাতার পেস্ট ১ চা-চামচ, মটর ডালের বেসন ১ চা-চামচ, আধা চা-চামচ গ্রিন টি পেস্ট করে আধা চা-চামচ জলপাই তেলের সঙ্গে মিশিয়ে নিন। সপ্তাহে ১ দিন ১৫ মিনিট করে এই প্যাকটি ব্যবহার করতে পারেন।

স্ক্র্যাবার: ১ টেবিল চামচ জলপাই তেলের সঙ্গে তিন টেবিল চামচ চিনি, ৩ টেবিল চামচ চালের গুঁড়া মিশিয়ে সপ্তাহে ১ দিন ১০ মিনিট করে এটি ব্যবহার করতে পারেন।

তৈলাক্ত ত্বকে ময়েশ্চারাইজারের প্রয়োজন নেই।

স্বাভাবিক ত্বকের জন্য

প্যাক: ১ চা-চামচ জলপাই তেল, আধা চা-চামচ মধু, আধা চা-চামচ ডিমের সাদা অংশ একসঙ্গে মিশিয়ে ত্বকে লাগাতে পারেন। ১৫ থেকে ২০ মিনিট পর মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে।

ময়েশ্চারাইজার: আধা কাপ জলপাই তেলের সঙ্গে আধা কাপের অর্ধেক গ্লিসারিন আর আধা চা-চামচ প্রাকৃতিক কর্পূর মিশিয়ে ত্বকে লাগাতে পারেন। এটি সারা বছর সংরক্ষণ করা যাবে।

স্ক্র্যাবার: আধা কাপ চিনি, আধা কাপ জলপাই তেল একসঙ্গে মিশিয়ে সপ্তাহে একদিন স্ক্র্যাবার হিসেবে ব্যবহার করতে পারবেন।


চুলের যত্নে

জলপাই তেল মাথার ত্বকে খুব ভালো মানের ময়েশ্চারাইজার হিসেবে কাজ করে। যাঁদের মাথার ত্বক শুষ্ক তাঁরা ২ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল, ১টি মাঝারি আকারের পেঁয়াজ, অর্ধেক কলা, সামান্য মসুর ডালের বেসন, দেড় চামচ মধু একসঙ্গে ব্লেন্ডারে ভালো করে ব্লেন্ড করে নিন। এবার মিশ্রণটি মাথার তালুতে লাগিয়ে এক ঘণ্টা অপেক্ষা করুন। এরপর ভালোভাবে চুলগুলো ধুয়ে নিন। এভাবে একটানা তিন দিন ব্যবহারের পর চুল শ্যাম্পু করে ধুয়ে নিন।

তৈলাক্ত ত্বক যাদের তারা ২ টেবিল চামচ জলপাই তেল, ২ টেবিল চামচ লেবুর রস, অ্যালোভেরা জেল, ১ টেবিল চামচ ছোলার ডালের বেসন ও দেড় টেবিল চামচ মেথি গুঁড়া ভালোভাবে ব্লেন্ডারে ব্লেন্ড করে নিন। চুলে লাগানোর এক থেকে দেড় ঘণ্টা পর ভালোভাবে শ্যাম্পু করে নিন। এভাবে সপ্তাহে দুই দিন এটি ব্যবহার করবেন।