ফ্লু কী?

এই শীতে থাকুন সুস্থ সুন্দর। ছবি: অধুনা
এই শীতে থাকুন সুস্থ সুন্দর। ছবি: অধুনা

ফ্লু আসলে কী, যে কাউকে জিজ্ঞেস করলেই বলতে পারবে এই রোগে কী হয়। মাথা ব্যথা, নাক দিয়ে পানি পড়া ইত্যাদি। ফ্লু বলতে আমরা যা বুঝি তা কিন্তু ফ্লু নয়, সাধারণ সর্দি-জ্বর। তাহলে ফ্লু কী? ফ্লু বা ইনফ্লুয়েঞ্জার জটিলতা সম্পর্কে বলার আগে আমাদের জানা প্রয়োজন সাধারণ সর্দি-জ্বর আর ফ্লুর তফাত। সাধারণ সর্দি-জ্বর ঋতু পরিবর্তনকালীন সময়গুলোতে হয়ে থাকে, যার প্রাথমিক লক্ষণগুলো হচ্ছে বন্ধ নাক, গলা ব্যথা, সঙ্গে মৃদু জ্বর এবং খুসখুসে কাশি থাকতে পারে। এই জ্বর ভাইরাসজনিত কারণে হলেও এর কারণে কোনো মারাত্মক জটিলতা হয় না। সর্বোচ্চ সাত দিনের মধ্যেই রোগী সুস্থ হয়ে যেতে থাকে। অন্যদিকে ফ্লু হলে হঠাৎ করেই তীব্র জ্বর ওঠে, যা ৩ থেকে ৪ দিন মেয়াদি হয়ে থাকে। রোগীর সারা গায়ে এবং মাথায় তীব্র ব্যথা থাকতে পারে। ফ্লুর আরেকটি বৈশিষ্ট্য হলো আক্রান্ত ব্যক্তি প্রচণ্ড ক্লান্তি বোধ করেন এবং তাঁর দৈনন্দিন কর্মকাণ্ড মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়। আর যদি রোগী শিশু বা বয়স্ক ব্যক্তি হন অথবা রোগীর অন্যান্য দীর্ঘস্থায়ী স্বাস্থ্যগত সমস্যা যেমন ডায়াবেটিস, হৃদ্‌রোগ বা হাঁপানি থেকে থাকে, তাহলে জটিলতা মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে।

ফ্লু একটি ভাইরাস-জনিত রোগ, যার প্রকোপ বাংলাদেশে সাধারণত শীত ও বর্ষাকালে বেশি দেখা যায়। এর কারণে শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ দেখা দেয়, যা যথোপযুক্ত চিকিৎসা না করালে ফুসফুসেও ছড়িয়ে যেতে পারে। প্রতিবছর বিশ্বে ৫-১০ শতাংশ পূর্ণবয়স্ক ব্যক্তি এবং ২০-৩০ শতাংশ শিশু এই রোগে আক্রান্ত হয়। আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচি-কাশি থেকে বা তাঁর ব্যবহৃত জিনিসপত্র স্পর্শ করলে ফ্লু ছড়াতে পারে। ফ্লু হলে প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ করাটাই উত্তম পন্থা।

ফ্লুর টিকা বাংলাদেশসহ বিশ্বের অধিকাংশ দেশেই সহজলভ্য। এই টিকার কার্যকারিতা পরীক্ষিত এবং প্রমাণিত। তবে প্রতিবছর এই জীবাণুর ধারা পরিবর্তিত হয়। আর তাই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রতিবছরই ফ্লুর সর্বশেষ ভাইরাসগুলো চিহ্নিত করে টিকায় ব্যবহারের অনুমতি দেয়।

ফ্লুর বিরুদ্ধে সর্বোত্তম প্রতিরোধ গড়তে প্রতিবছরই ফ্লুর মৌসুম শুরুর আগে এই টিকা নেওয়া প্রয়োজন। এই শীতে যেন আমরা ফ্লুতে আক্রান্ত না হই।

অধ্যক্ষ, ঢাকা মেডিকেল কলেজ