জামাই আদরে জম্পেশ খাওয়া

>বাঙালির বিয়েতে ‘ফিরানি’র রীতি রয়েছে। বিয়ের অনুষ্ঠানের পর কনে চলে যায় বরের বাড়ি। বৌভাতের পর বরসহ মেয়েকে নিজেদের বাড়িতে নিয়ে আসেন মা-বাবা। এই ফিরানিতে চলে জামাই আদর। জামাইয়ের খাওয়ার পাতে কত-কী দেওয়া যায় তাই নিয়ে চলে ভাবনা। জামাই আদরের জম্পেশ কিছু খাবারের রেসিপি দিয়েছেন কল্পনা রহমান

আলুবোখারায় বাদশাহি মাটন

উপকরণ

খাসির মাংস ১ কেজি, ঘি আধা কাপ, সয়াবিন তেল আধা কাপ, গোলমরিচ গুঁড়া ২ চা-চামচ, পেঁয়াজ কুচি ২ কাপ, রসুন কুচি ২ টেবিল চামচ, সবুজ কাঁচা মরিচ ৪টা, লাল কাঁচা মরিচ ৪টা, টকদই ২ কাপ, আলুবোখারা ২ কাপ, আদা বাটা ২ চা-চামচ, রসুন বাটা ১ চা-চামচ, জয়ফল, জয়ত্রী বাটা, এলাচ ও দারুচিনি ১ চা-চামচ, পোস্ত দানা বাটা ১ চা-চামচ, কিশমিশ বাটা ১ চা-চামচ, বাদামি চিনি (ব্রাউন সুগার) ১ টেবিল চামচ ও লবণ প্রয়োজনমতো।

প্রণালি

খাসির সিনার মাংস পছন্দমতো টুকরো করে লোম ও চর্বি পরিষ্কার করে ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিন। আদা বাটা ও রসুন বাটা দিয়ে আধা সেদ্ধ করে নিতে হবে। আধা সেদ্ধ মাংস গোলমরিচ, পোস্তদানা, কিশমিশ ও বাদাম বাটা দিয়ে ১০ মিনিট মেরিনেট করে রাখুন। এবার একটি পাত্রে ঘি ও তেল গরম করে পেঁয়াজ, রসুন কুচি সোনালি করে ভেজে সেদ্ধ মাংস দিয়ে ভালোভাবে কষাতে হবে। কষানো হলে টকদই, জয়ফল, জয়ত্রী বাটা ও বাদামি চিনি একসঙ্গে ফেটে মাংসে দিতে হবে। মাঝারি আঁচে রান্না করতে হবে। একটু পর আলুবোখারা দিয়ে দিন।

মাংস সেদ্ধ হয়ে যখন গ্রেভি চকচকা হবে তখন কাঁচা মরিচ ও পাকা দুই রঙের মরিচ দিয়ে দুই মিনিট দমে রেখে পরিবেশন করুন।

চাটিনাট সারপ্রাইজ চিকেন

উপকরণ

মুরগি ১টা (সোয়া কেজি), কারিপাতা ১০টা, হলুদ গুঁড়া ১ চা-চামচ, গোটা ধনে ২ টেবিল চামচ, আস্ত ও শুকনো মরিচ ৪টা, দারুচিনি ২ টুকরো, গোটা জিরা ১ টেবিল চামচ, লবঙ্গ ও গোলমরিচ ১০টা করে, নারকেল কোরানো ১ কাপ, আদা কুচি ১ টেবিল চামচ, তেঁতুলের মাড় সিকি কাপ, আধা সেদ্ধ বাসমতী চাল ১ কাপ, মাশরুম ৪টা, মাখন ১ টেবিল চামচ, সয়াবিন তেল আধা কাপ, মধু ৪ টেবিল চামচ, লবণ পরিমাণমতো ও আস্ত বাদাম ২ টেবিল চামচ।

প্রণালি

গোটা সব মসলা তাওয়ায় টেলে ব্লেন্ড করে নিতে হবে। এবার এই ব্লেন্ড করা উপকরণের সঙ্গে তেঁতুলের মাড় ও মধু মেলাতে হবে। এতে তৈরি হয়ে যাবে চাটিনাট মসলা। মাশরুম স্লাইজ করে মাখনে ভেজে আধা সেদ্ধ বাসমতী চাল চাটিনাট পেস্ট দিয়ে নেড়ে স্টাপিংয়ের জন্য রেডি করে নিতে হবে। এবার গোটা মুরগি ভালোভাবে পরিষ্কার করে পাতলা সুতির কাপড় দিয়ে মুছে নিতে হবে। এখন ২ টেবিল চামচ মধু ও চাটিনাট মসলা মুরগির গায়ে ভালোভাবে মাখিয়ে ১ ঘণ্টা রেখে দিতে হবে।

ভেজে রাখা রাইস দিয়ে মুরগির পেটের ভেতর স্টাফিং করে পা দুটি বেঁধে রাখতে হবে। এখন প্যানে তেল দিয়ে মোটা কাটা পেঁয়াজ ভেজে গোটা রসুন এবং চিকেন দিয়ে সামান্য পানি দিয়ে ঢেকে অল্প আঁচে ৩০-৩৫ মিনিটি রান্না করতে হবে। যখন মুরগি সুন্দর সেদ্ধ হয়ে মসলা ঘন হয়ে আসবে তখন ১ টেবিল চামচ মাখন দিয়ে ফোড়ন দিতে হবে। এরপর পরিবেশন করুন।

জামাই আদরে আস্ত কোরাল

উপকরণ

কোরাল মাছ দেড় কেজি, টমেটো সস, বাদাম বাটা ১ টেবিল চামচ, নারকেল দুধ দেড় কাপ, সয়াসস ১ টেবিল চামচ, ফিসসস ১ টেবিল চামচ, জিরা বাটা ১ চা-চামচ, লেবুর রস ১ টে, চামচ, কর্নফ্লাওয়ার ১ কাপ, পেঁয়াজ কুচি ১ কাপ, রসুন কুচি ১ টেবিল চামচ, টমেটো কুচি ১ কাপ, চিনি ১ চা-চামচ, গোলমরিচ গুঁড়া সিকি চামচ, পেঁয়াজ বাটা ৪ টেবিল চামচ, রসুন বাটা ১ চা-চামচ, মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, মরিচের গুঁড়া ১ চা-চামচ, সয়াবিন তেল আধা কাপ, লবণ পরিমাণমতো ও আদা বাটা দেড় চা-চামচ।

প্রণালি

মাছ পরিষ্কার করে লবণ ও লেবুর রস দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে ভালোভাবে। এবার মাছটিকে তেরছা তেরছা করে ৪-৫টি ভাগে কাটতে হবে দুই পিঠে। নিচের দিকটা সামান্য চিরে চিরে নিতে হবে। এতে মাছটি সোজাভাবে বসবে।

এবার আধা চা-চামচ লবণ, সয়াসস ও ফিসসস দিয়ে মেরিনেট করে আধা ঘণ্টা রেখে দিতে হবে। ৩০ মিনিট পর মাছটিকে কর্নফ্লাওয়ার মাখিয়ে ডিপফ্রাই করতে হবে। প্যানে তেল গরম করে রসুন কুচি সামান্য ভেজে পেঁয়াজ দিতে হবে। পেঁয়াজ বাদামি হলে আদা, রসুন, জিরা, পেঁয়াজ বাটা ও শুকনা মরিচ গুঁড়া দিয়ে কষিয়ে টমেটো কুচি দিতে হবে। এবার ক্রমান্বয়ে বাদাম বাটা, টমেটো সস অল্প অল্প করে নারকেলের দুধ দিয়ে কষাতে হবে। বাকি নারকেলের দুধ, লেবুর রস ও চিনি দিয়ে ৫ মিনিট চুলায় রেখে নামাতে হবে। একটি সার্ভিং পাত্রে মাছ ভাজা রেখে তার ওপর গরম সস ঢেলে দিতে হবে।

নারকেল দুধে চিংড়ি মটর পোলাও

উপকরণ

১. পোলাওয়ের চাল ৫০০ গ্রাম, নারকেল দুধ চালের দেড় গুণ, ঘি সিকি কাপ, তেজপাতা ২টি, এলাচ ও দারুচিনি ৩টি করে, চিনি ১ চা-চামচ, পেঁয়াজ বেরেস্তা আধা কাপ, কাজু পেস্তা কুচি ২ টেবিল চামচ, ঘি (ওপরে দেওয়ার জন্য) ১ টেবিল চামচ ও লবণ পরিমাণমতো।

২. চিংড়ি মাছ মাঝারি ৫০০ গ্রাম, টকদই আধা কাপ, পেঁয়াজ বাটা আধা কাপ, রসুন বাটা ১ চা-চামচ, আদা বাটা ২ চা-চামচ, এলাচ ও দারুচিনি গুড়া ১ চা-চামচ, চিনি ১ চা-চামচ, মিহি নারকেল বাটা ২ টেবিল চামচ, সোয়াবিন তেল সিকি কাপ, শুকনা মরিচ ভেজে গুড়া ১ টেবিল চামচ, সেদ্ধ মটরশুঁটি ১ কাপ, বুন্দিয়া আলু ১ কাপ ও লবণ পরিমাণমতো।

প্রণালি

১. পাত্রে ঘি দিয়ে তেজপাতা, এলাচ ও দারুচিনি ফোড়ন দিয়ে ভেজানো পোলাওয়ের চাল দিতে হবে (পোলাওয়ের চাল ১০ মিনিট আগে ভিজিয়ে রাখতে হবে)। এবার ৩-৪ মিনিট ভেজে চালের দেড় গুণ নারকেলের দুধ দিয়ে পোলাও রান্না করে নিতে হবে। প্রয়োজন বোধে রাইস কুকারেও পোলাও রান্না করা যায়। বুন্দিয়া আলু সেদ্ধ করে খোসা ছাড়িয়ে হালকা ভেজে চিংড়ি মাছের সঙ্গে রান্না করে রাখতে হবে।

২. খোসা ছাড়িয়ে চিংড়ি ধুয়ে পানি ঝরিয়ে নিতে হবে। এবার সব উপকরণ দিয়ে মাছ মাখিয়ে ১০ মিনিট পর চুলায় উঠে এলে নামিয়ে পোলাওয়ের ২টি লেয়ারে রান্না চিংড়ি, বেরেস্তো, কাজু পেস্তা দিয়ে ওপরে ১ টেবিল চামচ ঘি ছড়িয়ে ১০ মিনিট দমে রেখে পরিবেশন করুন।