ইশকুল খুলেছে

নতুন বছর মানেই শিশুর নতুন ক্লাস, নতুন বই। পুরোনো ইউনিফর্মটাও বদলে নেওয়া। স্কুলব্যাগের আকার পরিবর্তনের সঙ্গে জুতা বা টিফিন বক্সও বদলে যাওয়ার সময়। শিশুদের বাড়ন্ত বয়সের কারণে স্কুলের পোশাক বা জুতাটা ছোট হয়ে যেতে পারে। তাই নতুন বছরের শুরুতেই স্কুল পড়ুয়াদের এসব দিকে নজর দিতে পারেন অভিভাবকেরা।

স্কুলের পোশাক

সব স্কুলেই নির্ধারিত পোশাক থাকে শিক্ষার্থীদের জন্য। নোটিশ দিয়ে নতুন বছরের শুরুতেই সেটা জানিয়ে দেয় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। অধিকাংশ স্কুলেই স্কুল ড্রেসের পোশাকের রং বলে দেওয়া হয়। আর বানানোর দায়িত্ব থাকে অভিভাবকের। স্কুল থেকে লোগো ও টাই কিনতে হয়। তবে স্কুলের আশপাশে দরজির দোকান থেকে স্কুল ড্রেস তৈরি করাই ভালো বলে জানান শিক্ষার্থী কাজী জাফির জামানের মা দিলরুবা সুমী। তিনি বলেন, ‘এতে কাপড়ের রং ও নকশা একই থাকে।’ রাজধানীর বিভিন্ন স্কুল ঘুরে দেখা গেছে, কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান নির্দিষ্ট দামে শিক্ষার্থীদের পোশাক বানিয়ে দেয়। ঠিক করা থাকে নির্দিষ্ট দরজিও। এতে ঠকে যাওয়ার ভয় কম। তবে স্কুল ড্রেসের বিষয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের কোনো নির্দেশনা না থাকলে অভিভাবকেরা যেকোনো দোকান থেকে রং মিলিয়ে তৈরি করে নিতে পারেন। এ ক্ষেত্রে মান ও দামের ভিন্নতা থাকে। রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর মায়ের দোয়া টেইলার্সের স্বত্বাধিকারী শাহ আলম বলেন, ছেলেদের স্কুল ড্রেস ৫০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা পর্যন্ত হয়। আর মেয়েদের ড্রেস ৭০০ থেকে ২ হাজার টাকার মধ্যে তৈরি করে দেওয়া হয়।

নতুন ব্যাগ

পুরোনো ব্যাগটা ছিঁড়ে গেলে বা বইয়ের সংখ্যা বাড়লে বদলে দিতে পারেন শিশুর স্কুলব্যাগ। বছরের অন্য সময়ের তুলনায় এই সময়ে ব্যাগের বেচাকেনা বেশি হয়। দোকানিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, সদ্য স্কুলে যাচ্ছে এমন ছেলেমেয়েরা কার্টুন আঁকা ব্যাগ বেশি পছন্দ করছে। এ ছাড়া উজ্জ্বল রঙের ব্যাগের চাহিদা বেশি। নিউমার্কেটের শরীফ ব্যাগ ঘরের স্বত্বাধিকারী শরীফ মাহমুদ বলেন, স্কুলব্যাগে কতটা জায়গা আছে সেটাই বেশি দেখেন ক্রেতারা। ব্যাগের মানের ওপর এর দাম নির্ভর করে। ছোট আকারে দেশে তৈরি ব্যাগের দাম ১৫০ থেকে ৫৫০ টাকা। বড় ব্যাগের দাম ২৫০ থেকে ৮০০ টাকার মধ্যে। বর্তমানে বিদেশ থেকে আমদানি করা ব্যাগও বাজারে পাওয়া যাচ্ছে। আকারভেদে এর দাম ৪০০ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত। স্কুলব্যাগ পাওয়া যাবে নিউমার্কেট, বসুন্ধরা সিটি মার্কেট, যমুনা ফিচার পার্ক, গুলশান ডিসিসি মার্কেটে, মিরপুর, যাত্রাবাড়ী, মোহাম্মদপুরসহ সব এলাকায়। এ ছাড়া বিভিন্ন জেলা শহরে স্কুলব্যাগ পাওয়া যাবে।

জুতা

অনেকগুলো ব্র্যান্ডের দোকানেই শিক্ষার্থীদের জন্য আলাদা জুতার সংগ্রহ থাকে। বাটা, অ্যাপেক্স, পেগাসাসের মতো ব্র্যান্ড শহরের বিভিন্ন স্কুলের নির্দেশনা জেনে জুতা তৈরি করে। পাশাপাশি ননব্র্যান্ডের দোকানেও পাবেন স্কুল জুতা। ব্র্যান্ডের দোকান ছাড়াও ঢাকার মধ্যে ভালো জুতা পাবেন এলিফ্যান্ট রোড, নিউমার্কেটে, গুলিস্তান, মৌচাক মার্কেট, মিরপুর, যাত্রাবাড়ীর মার্কেটে। ব্র্যান্ডের জুতার দাম তো ঠিক করাই থাকে। তবে দামাদামি করতে হবে ননব্র্যান্ডের জুতা কেনার সময়। স্কুলের জুতার দাম ৪৫০ থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে।

টিফিন বক্স ও পানির বোতল

শিশুর নতুন উপকরণ কেনার সময় মাথায় রাখতে পারেন তার টিফিন বক্স বা পানির বোতলের কথাও। দেখতে সুন্দর এবং টেকসই দুটোই খোঁজেন অভিভাবকেরা। নিউমার্কেটের গ্রিন ভিউ স্টেশনারি স্বত্বাধিকারী মুকুল হোসেন বলেন, বিভিন্ন কার্টুন চরিত্র যেমন—বারবি, স্পাইডারম্যান, ব্যাটম্যান, পোকেমন, টম অ্যান্ড জেরি, মিকি মাউসের টিফিন বক্স বেশি চলছে। পানির পাত্রগুলো দুই রকমের। পানি ঠান্ডা-গরম রাখার ব্যবস্থাও থাকে। প্লাস্টিক, স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি পানির পাত্র দেখা গেল বাজারে। আকার ও মান অনুযায়ী পানির পাত্র বা টিফিন বক্সের দাম ৫০ থেকে ৩৫০ টাকা। এ ছাড়া হরেক রকম পেনসিল বক্সের চাহিদাও আছে। পেনসিল বক্স পাওয়া যাচ্ছে ৬০ থেকে ৩০০ টাকায়।