অবাধ্য ছোট চুল

টেনে চুল বাঁধার আগে বুদ্ধি করে বশে আনতে হবে ছোট ছোট চুল। মডেল: মৌসুমী, সাজ: হেয়ারোবিক্স ব্রাইডাল, ছবি: খালেদ সরকার
টেনে চুল বাঁধার আগে বুদ্ধি করে বশে আনতে হবে ছোট ছোট চুল। মডেল: মৌসুমী, সাজ: হেয়ারোবিক্স ব্রাইডাল, ছবি: খালেদ সরকার

চুল বাঁধার ছলাকলা দেখতে দেখতে অনেকের আয়না ভাঙলেও অনেক সময় ছলাকলা শুরু করে স্বয়ং চুলই। তাতে কখনো কখনো নষ্ট হয়ে যায় সৌন্দর্য।

এই যেমন ‘বেবি হেয়ার’। চুল টেনে বাঁধলে বা পনিটেইল করলেই ছোট ছোট অনেক চুল খাড়া হয়ে দাঁড়িয়ে যায়। এগুলোই ‘বেবি হেয়ার’, যাকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে চুলের স্টাইলই নষ্ট হয়ে যায়। অনেকে কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না এই চুল। এই চুলকে রূপবিশেষজ্ঞ তানজিমা শারমিন তাই ‘চুলের দুষ্টুমি’ হিসেবেই উল্লেখ করলেন।

কী এই বেবি হেয়ার? কারও কারও ক্ষেত্রে এগুলো মূলত সদ্য গজানো কিছু চুল, আবার কারও কারও ক্ষেত্রে ভেঙে যাওয়া চুলের অবশিষ্টাংশ। কারও কারও ক্ষেত্রে বেবি হেয়ারগুলো সব সময় একই রকম থাকে। একবার পড়ে গেলে আবার গজায়, এমনও আছে।

তা সে যা–ই হোক, সমস্যা তৈরি করতে এরা বেশ পটু। তানজিমা শারমিন বললেন, এই ছোট ছোট চুলগুলো সাধারণত চুল খোলা থাকলে সেভাবে টের পাওয়া যায় না। কিন্তু পনিটেইল করে বাঁধলেই তারা নিজের উপস্থিতি জানান দেয়। তবে মূল সমস্যাটা দেখা দেয় যখন চুল সেট করতে যান। হঠাৎ করেই দেখা যায়, ছোট ছোট চুলগুলো দাঁড়িয়ে থাকে। ফলে পুরো চুল সেট করা বেশ কঠিন হয়ে পড়ে।

সমাধানে কী করা যায়? তানজিমা শারমিন বলেন, কোথাও পার্টিতে যাওয়ার সময় একটু হেয়ার স্প্রে বা ওয়্যাক্স জেল ব্যবহার করে চুল সেট করে নেওয়া যেতে পারে। তবে সেটা নিয়মিত করা কোনোভাবেই ঠিক হবে না। ওয়্যাক্স অনেকটা জেলের মতোই, তবে আঠালো ও ওয়াটার কালার, তাই লাগালে বোঝা যায় না। তবে বেশি দিলে বোঝা যাবে।

এ ক্ষেত্রে চুলের কাটের দিকে নজর দিলেও খানিকটা সমাধান আসবে। সামনের চুলগুলো যদি ব্যাংস করে কেটে রাখা হয়, তাহলে চুলগুলো আর দেখা যায় না।

জাভেদ হাবিব অ্যাট স্বপ্ন কেয়ারের হেয়ার এক্সপার্ট মিলন খান এটাকে একটা সমস্যা হিসেবেই উল্লেখ করলেন। জানালেন, চুলে প্রোটিনের অভাবে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। প্রোটিন কম হলে চুল কিছুটা গজিয়ে আবার ভেঙে যায়। তা ছাড়া অনেকে একেবারে চুলের গোড়া থেকে কন্ডিশনার দেয়। এর ফলে স্ক্যাল্পে খুশকির সমস্যা দেখা দেয়। তখন এই সমস্যাগুলো আরও বেড়ে যেতে পারে।

পার্টিতে যাওয়ার সময়ে স্প্রে ব্যবহার করলে ৪ থেকে ৬ ঘণ্টার ভেতরে আবার চুল ধুয়ে ফেলতে হবে। নিয়মিত ব্যবহার করলে সমস্যা আরও বাড়বে।

গোড়া থেকে সমাধান চাইলে তিনটি বিষয়ে নজর দেওয়ার কথা বললেন তিনি।

এক. সঠিকভাবে কন্ডিশনার ব্যবহার। অনেকে চুলের গোড়ায় কন্ডিশনার লাগায়। তাতে চুল পড়া আরও বাড়ে। চুলের গোড়ার দিকে ৪ থেকে ৬ ইঞ্চি বাদ দিয়ে সপ্তাহে দুই দিন কন্ডিশনার ব্যবহার করতে হবে।

দুই. প্রোটিন ট্রিটমেন্ট নিতে হবে বা ওষুধ হিসেবে খেতে চাইলে ই-ক্যাপ (৪ মিলি) খেতে হবে।

তিন. জলপাই তেল বাড়িতে গরম করে ম্যাসাজ করতে হবে। পারলারে এসেও জলপাই তেলের ট্রিটমেন্ট নিতে পারেন।

একটু যত্ন নিলেই নিয়ন্ত্রণ করা যাবে বেবি হেয়ারের দুষ্টুমি। তখন আর চুল সেট করতে গিয়ে বাড়তি নজর দিতে হবে না।