পরিপাটি কাজের টেবিল

গোছানো টেবিলে কাজে আনন্দ বেশি। ছবি: নকশা, কৃতজ্ঞতা: মাইন্ড ট্রি
গোছানো টেবিলে কাজে আনন্দ বেশি। ছবি: নকশা, কৃতজ্ঞতা: মাইন্ড ট্রি

এক গাদা ফাইল, খুচরো কাগজের ছড়াছড়ি, এদিক-ওদিক থেকে উঁকি মারছে ক্যালেন্ডার, কলমদানি, টেলিফোন ইত্যাদি। কর্মক্ষেত্রের টেবিল বলে কথা। টেবিল ভর্তি জিনিস না থাকলে কাজ করছি—এটা বোঝানো যায় না। এই চিন্তাধারার মধ্যে আটকে গেলে কাজেও অসুবিধা তৈরি হবে। অগোছালো টেবিল কাজের প্রতি অনীহা বাড়ায়, মনোযোগ কেড়ে নেয়, অস্বাস্থ্যকরও বটে। সপ্তাহে পাঁচ থেকে ছয় দিন আট-দশ ঘণ্টা কাটানো হয় কর্মক্ষেত্রেই। নতুন বছরে একখানা নতুন ক্যালেন্ডার ও ডায়েরি এরই মধ্যে চলে এসেছে। বছরের শুরু থেকেই আপনার কাজের জায়গাটি অর্থাৎ ডেস্কটি নতুনভাবে গুছিয়ে নিন। সুন্দর পরিপাটি, গোছানো জায়গায় কাজে সহজেই মনোযোগ আসে, সেই সঙ্গে কাজের মানও ভালো হয়।
নতুন বছর শুরু হওয়া মানে নতুনভাবে সবকিছু শুরু করা। আমরা সবাই চাই নতুন বছরটি গুছিয়ে শুরু করতে—জানান সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির স্থাপত্য বিভাগের প্রভাষক লতিফা সুলতানা। নতুন বছরে মন প্রফুল্ল রাখতে আশপাশের সবকিছু পরিপাটি রাখুন। সেটা কর্মক্ষেত্রেই হোক অথবা বাড়ি। অফিসে দিনের অনেকটা সময় কাটানো হয়। তাই কাজের পরিবেশ বজায় রাখতে নিজের ডেস্কটি গুছিয়ে রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে জানান তিনি।

নতুন বছরের ক্যালেন্ডার
অফিসের ডেস্কে একখানা ক্যালেন্ডার তো থাকেই। জরুরি কাজ আছে এমন দিনগুলোর ওপর দাগ দিয়ে রাখলে ভালো হয়, জানান লতিফা সুলতানা। মনমতো ক্যালেন্ডার না পেলে কোনোটাই আপনার মনের মতো না হলে গুগল থেকে নামিয়েও প্রিন্ট করে নিতে পারেন। তবে ক্যালেন্ডার যেটাই হোক না কেন, সেটা রাখা উচিত এমন জায়গায় যাতে সহজেই চোখে পড়ে। ক্যালেন্ডারটি রাখুন আপনার ডেস্কের আকারের অনুপাতে। যাতে খুব বেশি বড় বা ছোট না হয়।

স্বস্তি দেবে এক টুকরো সবুজ
স্থপতি লতিফা সুলতানা আর জানান, ডেস্ক যত ছোটই হোক না কেন, সবুজ কোনো গাছ রাখার চেষ্টা করুন। মানিপ্ল্যান্ট অথবা বনসাই এ ক্ষেত্রে মানানসই হবে। মাটি বা সিরামিকের তৈরি ছোট টব টেবিলের এক কোণে রাখতে পারেন অনায়াসেই। গাছ আপনাকে প্রাণবন্ত ও সতেজ রাখতে সাহায্য করবে। বাজারে কলমদানির সঙ্গেই গাছের ছোট টব কিনতে পাওয়া যায়। এগুলো খুব বেশি জায়গা নেয় না, ফলে যেকোনো স্থানে রাখা যায়।

কাজের জায়গা হওয়া চাই নান্দনিক
কাজের জায়গা হওয়া চাই নান্দনিক

পানি পানে ক্লান্তি দূর
অতিরিক্ত কাজের চাপে অনেকেই অফিসে পানি পান করতে ভুলে যান। ডেস্কের এক কোনায় রাখা যেতে পারে দৃষ্টিনন্দন পানির বোতল। কাচের বা প্লাস্টিকের সুন্দর বোতলগুলো পেয়ে যাবেন যেকোনো দোকানে। এ ছাড়া রাখতে পারেন পানির মগ। সিরামিক, কাচ কিংবা কাঠের তৈরি মগ ডেস্কের সৌন্দর্যই বাড়াবে। তবে মগের ক্ষেত্রে অবশ্যই ঢাকনা ও কোস্টার ব্যবহার করুন। পানির মগ বা বোতলটি, প্রয়োজন মেটানোর সঙ্গে সঙ্গে আপনার ব্যক্তিত্বেরও বহিঃপ্রকাশ ঘটাবে।

হাতের কাছেই টিস্যু বক্স
অফিসে যেকোনো সময়ই টিস্যু প্রয়োজন হতে পারে। রাখুন আপনার হাতের নাগালের মধ্যেই। বাঁশের, কাপড়ের টিস্যু বক্স রাখতে পারেন ডেস্কে। বক্স না রাখতে চাইলে পছন্দমতো টিস্যু হোল্ডার ব্যবহার করতে পারেন।

সবকিছু সঠিক জায়গায়
মানসিক ও শারীরিক সুস্থতার জন্য চারপাশ পরিচ্ছন্ন রাখা খুবই জরুরি। অফিসের ডেস্ক গুছিয়ে রাখতে যে জিনিসটা যেখানে রাখা হয়, কাজ শেষে সেখানেই রাখুন। এতে একবারে বেশি ঝামেলা হবে না। দৈনিক কাজগুলো লিখে রাখতে স্টিকি নোট প্যাড ব্যবহার করতে পারেন। পুরোনো কাগজগুলো ফাইলবন্দী করুন। এতে গোছানো লাগবে টেবিলটি। স্ট্যাপলার, পাঞ্চ মেশিন, কলম ইত্যাদি ছোট ছোট জিনিস ছড়িয়ে না রেখে কলমদানিতে রাখুন। বাক্সবন্দী করে ড্রয়ারেও রাখতে পারেন।

সঙ্গে থাকুক প্রিয়জন
টেবিলে রাখতে পারেন প্রিয়জনের ছবি। প্রিয়জন অথবা পরিবারের সঙ্গে কাটানো সুন্দর কোনো মুহূর্তের ছবি সহজেই ক্লান্তি দূর করে দিতে পারে। খুব বেশি বড় ফ্রেম নয়, ছোট আকারের ফ্রেমে আপনজনের ছবি আপনার কাজের স্পৃহা বাড়াতে সাহায্য করবে।
ডেস্কে আরও যা যা থাকতে পারে—
 কাজের তালিকা
• যন্ত্রের চার্জার
• হালকা খাবার