শীতের ত্বকে আর্দ্রতা

গোসলের পর লোশন ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখবে।  মডেল: সুষ্মি, ছবি: নকশা
গোসলের পর লোশন ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখবে। মডেল: সুষ্মি, ছবি: নকশা

শীতের কনকনে হাওয়ার নাচন কেবল আমলকীর ডালেই নয়, প্রভাব ফেলছে শরীরজুড়েও। ত্বক হয়ে পড়ছে শুষ্ক, সাদা খড়খড়ে। তাতে টান টান ভাব, চামড়া মরে যাচ্ছে, আরও কত কী!

শীতে বাতাসে জলীয় বাষ্প কম থাকায় ত্বক প্রয়োজনীয় আর্দ্রতা পায় না। ফলে সবারই ত্বক কমবেশি শুষ্ক হয়ে পড়ে। তখন এর থেকে রক্ষা পাওয়ার একমাত্র উপায় হলো ময়েশ্চারাইজার বা লোশনের ব্যবহার; যা ত্বকের আর্দ্রতা ফিরিয়ে ত্বককে করে তোলে প্রাণবন্ত ও সজীব—এমনটাই জানালেন হার্বসের ত্বকবিশেষজ্ঞ আফরিন মৌসুমি। লোশন বা ময়েশ্চারাইজারে থাকা ভিটামিন, তেল, পানিসহ নানা উপাদান ত্বকের যথাযথ পুষ্টি জুগিয়ে প্রকৃতির সঙ্গে ত্বকের ভারসাম্য বজায় রাখে। মৌসুমি আফরিন আরও জানালেন কেমন ত্বকে কেমন লোশন ব্যবহার করা উচিত।

অতিরিক্ত শুষ্ক ত্বক

অতিরিক্ত শুষ্ক ত্বকে আর্দ্রতা ধরে রাখতে তেল এবং ভিটামিন ‘ই’যুক্ত ভারী লোশন ব্যবহার করতে হবে। যাতে শুষ্কতা কমে ত্বকে ফুটে উঠে সতেজ ভাব।

তৈলাক্ত ত্বক

তৈলাক্ত ত্বকে পানিযুক্ত লোশন ব্যবহার করতে হবে। এর ব্যবহারে ত্বকে চকচকে ভাব হবে না। দ্রুত ত্বক এটি শোষণ করে ঝরঝরে ভাব আনবে। এই ধরনের ত্বকে লোশন ব্যবহারের সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন লোশনের উপাদানে কোনো ধরনের অ্যালকোহল না থাকে। এতে ত্বকের সমস্যা হতে পারে।

সাধারণ ত্বক

সাধারণ ত্বকে গ্লিসারিনযুক্ত লোশন ব্যবহার করতে হবে। এতে ত্বক পূর্ণ আর্দ্রতা ধরে রেখে মসৃণ সুন্দর রাখতে সহায়তা করবে।

বাজারের কেনা লোশন বা ময়েশ্চারাইজারের পাশাপাশি প্রাকৃতিক উপায়ে ঘরে বসেও বানিয়ে নিতে পারেন আপনার ত্বক উপযোগী ময়েশ্চারাইজার। এ জন্য এক কাপ ঘৃতকুমারীর জেলে দুই টেবিল চামচ গ্লিসারিন, আধা কাপ বিস্টল ওয়াটার এবং তিন ভাগ গোলাপজল একসঙ্গে মিশিয়ে সারা গায়ে এবং মুখেও মাখা যাবে। এই ময়েশ্চারাইজার সব ধরনের ত্বকেই সুরক্ষা দেবে। এক কাপ নারকেল কুরিয়ে গরম পানিতে দিয়ে দুধ বের করে নিন। এবার চুলায় দুই মিনিট ধরে ফুটিয়ে নিতে হবে। আধা কাপ গ্লিসারিন এবং খানিকটা লেবুর খোসা কুচি একসঙ্গে মিশিয়ে শিশিতে তুলে রাখতে হবে। চাইলে এর সঙ্গে দুটি ভিটামিন ‘ই’ ক্যাপসুলও মেশানো যেতে পারে।

শীতে যাঁদের হাত-পা ফেটে যায়, তাঁরা এই ময়েশ্চারাইজারটি ব্যবহার করতে পারেন। এক কাপ ঘন গ্লিসারিনে চার টেবিল চামচ আপেল সাইডার ভিনেগার এবং পরিমাণমতো গোলাপজল মিশিয়ে ব্যবহার করুন। হাত-পা ফাটা রোধ করবে, সঙ্গে রোদে পোড়া ভাব, কালচে ছোপ দাগও দূর করবে। লোশন বা ময়েশ্চারাইজার ত্বকের এনজাইমকে ঠিক রেখে প্রয়োজনীয় উপাদান জুগিয়ে ত্বকের সুরক্ষা দিয়ে থাকে। গোসল সেরে বা প্রতিবার মুখ ধোয়ার পরপরই ত্বক ভেজা ভেজা থাকা অবস্থায় লোশন ব্যবহার করা উচিত বলে মনে করেন আফরিন মৌসুমি।