এসআই পদে নিয়োগ শুরু হচ্ছে

সাব-ইন্সপেক্টর পদে নারী ও পুরুষ উভয় প্রার্থীই আবেদনের সুযোগ পাবেন। ছবি: সংগৃহীত
সাব-ইন্সপেক্টর পদে নারী ও পুরুষ উভয় প্রার্থীই আবেদনের সুযোগ পাবেন। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ পুলিশ বাহিনী পুলিশ সাব-ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) পদে জনবল নিয়োগ করার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। এ পদে নারী ও পুরুষ উভয় প্রার্থীই আবেদনের সুযোগ পাবেন। পুলিশের আটটি বিভাগীয় রেঞ্জে আগামী ১৩, ১৪ ও ১৫ ফেব্রুয়ারি সকাল ৯টায় শারীরিক মাপ ও পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এ সময় প্রার্থীদের শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদের মূল কপি, সর্বশেষ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান কর্তৃক প্রদত্ত চারিত্রিক সনদের মূল কপি, নাগরিকত্ব সনদের মূল কপি, জাতীয় পরিচয়পত্রের মূল কপি, সত্যায়িত ৩ কপি সদ্য তোলা পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবিসহ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখিত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সঙ্গে আনতে হবে।

আবেদনের যোগ্যতা: সাব-ইন্সপেক্টর পদে আবেদন করতে হলে আবেদনকারীকে ন্যূনতম স্নাতক পাস হতে হবে। পাশাপাশি কম্পিউটারে অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। সাধারণ প্রার্থীদের বয়স ০১-০১-২০১৮ তারিখে ১৯ থেকে ২৭ বছর এবং মুক্তিযোদ্ধা সন্তানদের ক্ষেত্রে একই তারিখে বয়স ১৯ থেকে ৩২ বছরের মধ্যে হতে হবে।

শারীরিক যোগ্যতার পুরুষ প্রার্থীদের ক্ষেত্রে উচ্চতা ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি, বুকের মাপ স্বাভাবিক অবস্থায় ৩০ ইঞ্চি এবং সম্প্রসারিত অবস্থায় ৩২ ইঞ্চি হতে হবে। অন্যদিকে, নারী প্রার্থীদের ক্ষেত্রে উচ্চতা কমপক্ষে ৫ ফুট ২ ইঞ্চি হতে হবে। উভয় প্রার্থীদের ওজন বয়স ও উচ্চতার সঙ্গে অনুমোদিত পরিমাপের হতে হবে। প্রার্থীদের অবশ্যই বাংলাদেশের নাগরিক এবং অবিবাহিত হতে হবে।

কবে কোন পরীক্ষা: নির্ধারিত তারিখে শারীরিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের প্রথমে লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হবে। লিখিত পরীক্ষা হবে তিনটি ধাপে মোট ২২৫ নম্বরে। আগামী ১৯ মার্চ ২০১৮ তারিখ সকাল ১০টা থেকে ১টা পর্যন্ত ইংরেজি, বাংলা রচনা ও কম্পোজিশন বিষয়ে ১০০ নম্বরের পরীক্ষা হবে। ২০ মার্চ ২০১৮ তারিখ সকাল ১০টা থেকে ১টা পর্যন্ত সাধারণ জ্ঞান ও পাটিগণিত বিষয়ে ১০০ নম্বরের পরীক্ষা হবে। ২১ মার্চ ২০১৮ তারিখ সকাল ১০টা থেকে সাড়ে ১০টা পর্যন্ত ২৫ নম্বরের মনস্তত্ত্ব পরীক্ষা হবে। লিখিত পরীক্ষার স্থান প্রার্থীদের পরবর্তী সময়ে জানানো হবে।

আবেদনপত্র সংগ্রহ ও জমা: শারীরিক মাপ ও শারীরিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের সংশ্লিষ্ট রেঞ্জের ডিআইজির কাছ থেকে ওই দিনই তিন টাকা নগদ মূল্য প্রদান করে আবেদনপত্রের ফরম ক্রয় করতে হবে। আবেদনপত্রের সঙ্গে সত্যায়িত সদ্য তোলা ৪ কপি পাসপোর্ট সাইজের রঙিন ছবি, শিক্ষাগত যোগ্যতার সব সনদের সত্যায়িত কপি, সর্বশেষ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান কর্তৃক প্রদত্ত চারিত্রিক সনদ, জাতীয় পরিচয়পত্র, সংশ্লিষ্ট রেঞ্জের ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল, বাংলাদেশ পুলিশের অনুকূলে যেকোনো রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংক থেকে পরীক্ষার ফি ৩০০ টাকা ১-২২১১-০০০০-২০৩১ নম্বর কোডে ট্রেজারি চালানের মাধ্যমে জমাপূর্বক চালানের মূল কপিসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংযুক্ত করতে হবে। প্রাথমিকভাবে শারীরিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের আবেদন ফরম সঠিকভাবে পূরণ করে ১৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে নিজ নিজ রেঞ্জ ডিআইজির কার্যালয়ে জমা দিতে হবে।

এ পেশার দায়দায়িত্ব: ২০১২ সালে সাব-ইন্সপেক্টর পদে নিয়োগ পান অপূর্ব কুমার বর্মণ। বর্তমানে তিনি মোহাম্মদপুর থানায় কর্মরত আছেন। তিনি বলেন, এ পেশা অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং ও দায়িত্বের। এ পেশাতে মানুষের কাছে গিয়ে কাজ করার সুযোগ পাওয়া যায় অনেক বেশি। মাঠপর্যায়ের যত অন্যায়, দাঙ্গা-হাঙ্গামা, সমাজবিরোধী কর্মকাণ্ড প্রতিরোধসহ যাবতীয় দায়িত্বে তাদের অংশগ্রহণ করতে হয়। এ পদটি এখন দ্বিতীয় শ্রেণি করাতে সুযোগ-সুবিধাও ভালো পাওয়া যায়। এ ছাড়া বিভিন্ন পরীক্ষার মাধ্যমে পদোন্নতি পেয়ে সাব-ইন্সপেক্টর থেকে ইন্সপেক্টর, অফিচার্জ ইনচার্জসহ পুলিশ বাহিনীর উচ্চপদস্থ পদে যাওয়া যায়।

বর্তমানে এয়ারপোর্টে ইমিগ্রেশন পুলিশে কর্মরত আছেন সাব-ইন্সপেক্টর শারমিন ইউসুফ। তিনি বলেন, কয়েক বছর ধরে নারীরা এই পদে বেশি আসছেন। এটি চ্যালেঞ্জিং একটি পেশা। অন্যান্য অনেক পেশা থেকে এই পেশা নারীদের জন্য ভালো বলে জানান তিনি। এই পেশায় আরও বেশি নারী আসা উচিত বলে মনে করেন তিনি। তিনি জানান, এখন সপ্তাহে দুই দিন রাতে দায়িত্ব পালন করতে হয় তাঁকে। এ ছাড়া পুরুষদের সঙ্গে মিলিয়ে কাজ করি আমরা। এই পেশা অনেক নিরাপদ ও কর্ম উপযোগী।

গত বছরে নিয়োগ পাওয়া নীলফামারী জেলার সৈয়দপুর সার্কেল অফিসের শিক্ষানবিশ সাব-ইন্সপেক্টর মো. সাইফুল ইসলাম। তাঁর মতে, এ পেশায় বিপদগ্রস্ত মানুষদের সরাসরি সেবা করা যায়। অপরাধ নিয়েই যেহেতু এখানে কাজ করতে হয়, তাই এ পেশায় ঝুঁকিও একটু বেশি। এ ছাড়া মামলার তদন্ত কর্মকর্তা হিসেবে তদন্ত প্রতিবেদন দিতে হয়।

চূড়ান্ত নির্বাচন ও সুযোগ-সুবিধা: লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের আবার মৌখিক পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে। মৌখিক পরীক্ষার স্থান, তারিখ ও সময় যথাসময়ে প্রার্থীদের জানিয়ে দেওয়া হবে। একইভাবে মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের সংশ্লিষ্ট রেঞ্জ ডিআইজিগণ কর্তৃক স্বাস্থ্য পরীক্ষার তারিখ, সময় ও স্থান জানিয়ে দেওয়া হবে।

নির্বাচনী বোর্ড কর্তৃক সুপারিশকৃত প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত স্বাস্থ্য পরীক্ষায় যোগ্য ও ভিআর সফলভাবে সম্পন্নের পর মৌলিক প্রশিক্ষণ গ্রহণের জন্য চূড়ান্তভাবে মনোনীত করা হবে। বহিরাগত ক্যাডেট হিসেবে নির্বাচিত প্রার্থীদের বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমি, সরাদা, রাজশাহীতে ১ বছর মেয়াদি মৌলিক প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণ করতে হবে। এই প্রশিক্ষণকালীন প্রার্থীদের বিনা মূল্যে আহার, বাসস্থান, ইউনিফর্ম, চিকিৎসাসেবা এবং মাসিক ১ হাজার টাকা হারে মাসিক ভাতা প্রদান করা হবে।

সফলভাবে মৌলিক প্রশিক্ষণ শেষে ২০১৫ সালের জাতীয় বেতন স্কেলের ১০ম গ্রেড অনুযায়ী ১৬ হাজার টাকা স্কেলে বেতন দেওয়া হবে। স্বল্প মূল্যে রেশন, বিনা মূল্যে পোশাক, চিকিৎসা সুবিধা, ঝুঁকি ভাতা প্রাপ্য হবেন। এ ছাড়া জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে যাওয়ার সুযোগ পাওয়া যাবে।

প্রকাশিত বিজ্ঞপ্তিটি পাওয়া যাবে http://www.police.gov.bd/en/recruitment_information  এই লিংকে।