আপেল নাকি নাশপাতি?

আপেল ও নাশপাতি দেশে পরিচিত দুটো ফল। ঢাকার বারডেম জেনারেল হাসপাতালের খাদ্য ও পুষ্টি বিভাগের প্রধান ও প্রধান পুষ্টিবিদ শামসুন্নাহার নাহিদ জানালেন আপেল ও নাশপাতির গুণাগুণ।

আপেল
• আপেল রোগ প্রতিরোধক ও পুষ্টিকর একটি ফল, যা সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
• এতে আছে শর্করা, ভিটামিন, খনিজ লবণ, আঁশ, পেকটিন ও ম্যালিক অ্যাসিড। ভিটামিনের মধ্যে আছে ভিটামিন-এ এবং ভিটামিন-সি।
• আপেলের খোসায় ভেতরের থেকে প্রায় পাঁচ গুণ বেশি ভিটামিন-এ আছে।
• আপেল ব্রেস্ট ক্যানসার প্রতিরোধে সহায়তা করে। আপেলের মধ্যে পেকটিন-জাতীয় একটি উপাদান থাকে, যা শরীরকে কোলন ক্যানসার থেকে দূরে রাখে। ফুসফুসের ক্যানসার ও লিভার ক্যানসার প্রতিরোধেও আপেলের ভূমিকা আছে।
• হৃদ্‌রোগের ঝুঁকি কমায়।
• আপেল খেলে মেদ জমে না।
• এটি দাঁতের মাড়ির জন্য উপকারী। আপেলের রস দাঁতের জন্য ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ধ্বংস করে। ফলে দাঁত ভালো থাকে।
• প্রতিদিন আপেল খেলে হজমের জন্য উপকারী ব্যাকটেরিয়া তৈরি করে পেটে। ফলে হজমশক্তি বাড়ে।
• শরীরের জন্য সবুজ আপেল সবচেয়ে ভালো।

নাশপাতি
• নাশপাতিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, বি, বি ২, ই, ফলিক অ্যাসিড ও নিয়াসিন নামের পুষ্টিকর উপাদান। ক্যালসিয়াম, পটাশিয়াম, কপার, আয়রনসহ অন্যান্য মিনারেলেরও উৎকৃষ্ট উৎস।
• নারীদের বিভিন্ন রোগসহ মেনোপোজ-পরবর্তী বিভিন্ন জটিলতা কাটাতে নাশপাতির জুড়ি নেই। কারণ, দাঁতের মাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হলে নাশপাতির রস ও অল্প ফিটকিরি মিশিয়ে রেখে সকালে খেলে মাড়ির ক্ষয় পূরণ হয়।
• খুশকি ও মাথার চুল পড়ে গেলে নাশপাতির রস ১০-১৫ দিন খেলে চুল পড়া ও খুশকি দূর হয়। করোনারি, থ্রম্বোসিস, হার্ট ব্লক, মাইয়োকার্ডিয়াল সংক্রমণ ইত্যাদি রোগে প্রতিদিন দু-তিন টুকরো নাশপাতি খেলে খুবই উপকার হয়।
• কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে নাশপাতির জুড়ি নেই। বিকেলে বা রাতে খাওয়ার পর নাশপাতি খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।
• পানীয় হিসেবে নাশপাতির জুস শরীরের জন্য খুবই কার্যকর।
• ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করে। রক্তে শর্করার পরিমাণ কমায়।
• নাশপাতি অ্যালার্জির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কমায়। যারা প্রায়ই হালকা জ্বর এবং অ্যালার্জি সমস্যায় ভোগে, তাদের জন্য নাশপাতি খুবই উপকারী।
• উচ্চ মাত্রায় মিনারেল থাকার কারণে শরীরে ক্যালসিয়ামের জোগান দেয়। এটি হরমোন উৎপাদন এবং হাড়ের ক্ষয়রোধ করে। নাশপাতিতে আছে হাড়ের জন্য অত্যাবশ্যকীয় ‘ভিটামিন-কে’।
গ্রন্থনা: তারিকুর রহমান খান