ঈদের রং তাঁদের শাড়িতেও

জমিনে চলুক না কাঁথা ফোঁড়ের গল্প
জমিনে চলুক না কাঁথা ফোঁড়ের গল্প

লাল, কমলা, ম্যাজেন্টা, টিয়া, হলুদ ইত্যাদি রঙের শাড়ি কেনা যাবে না। নকশাতেও ধরাবাঁধা নিয়ম। মায়ের জন্য শাড়ি কিনতে গেলে বিপদেই পড়তে হয় আমাকে। আবার ঠিক উল্টোটা হয় দাদুর জন্য শাড়ি কিনতে গেলে। রং বা নকশার ক্ষেত্রে কোনো ধরাবাঁধা নেই। খুব হালকা রঙের না হলেই হলো। তবে দুজনের শর্তই একটি—শাড়ি হতে হবে আরামদায়ক।

৬০ বছর হলেই কি বুড়িয়ে যান মায়েরা। হালকা রঙের শাড়ি পরেই কি ঘুরতে হবে? শাড়িতে একটু রঙের ছোঁয়া এলেই অনেকে অস্বস্তিবোধ করেন। পাশ্চাত্যের দিকে তাকাই। লাল টুকটুকে লিপস্টিক লাগিয়ে ঠিকই কিন্তু ঘুরতে বের হয়ে যান গ্র্যান্ডমারা (নানি-দাদি)। ঈদের সময় ছোট থেকে বড় সবারই নতুন পোশাক লাগে, তাই ফ্যাশন ডিজাইনাররা বয়স্কদের জন্যও শাড়ি তৈরি করেন। সেসব শাড়িতেও আছে রং নকশার নতুনত্ব। দেখা যাক এবারের ঈদ উৎসবে কেমন শাড়ি রয়েছে মা–খালা বা নানি–দাদিদের জন্য।

উৎসবের শাড়ি মানেই একটু জমকালো। শাড়িতে থাকে চুমকি, জরি বা হাতের কাজ। তবে বাজারে গিয়ে বয়স্কদের শাড়ি বাছতে গেলে কোনগুলো দেখা হয়? ঢাকার এক বাজারে শাশুড়ির জন্য শাড়ি কিনতে আসা শারমিন নাহার জানালেন, একটু হালকা রঙের শাড়িই চোখে পড়ে বেশি। শারমিন বললেন, বয়স্করা একটু হালকা রং পরবেন এটাই যেন স্বীকৃত। একটু চিন্তা করে দেখুন, অনেক তরুণীও কিন্তু ম্যাটম্যাটে রঙের শাড়ি পছন্দ করেন। বেছে নেন হালকা নকশা।

ভেতরে থাকুক হালকা নকশা। শাড়ি: বিবি প্রোডাকশনস
ভেতরে থাকুক হালকা নকশা। শাড়ি: বিবি প্রোডাকশনস

বিশেষজ্ঞরা কিন্তু রং বেছে নেওয়ার ক্ষেত্রে সব বাধা–নিষেধ উঠিয়ে নিয়েছেন। তবে হ্যাঁ, নকশার বেলায় কিছুটা বাছবিচার থাকতে পারে। ডিজাইনার লিপি খন্দকার বলেন, ফ্যাশনে রং কোনো বিষয় না। একটু সাহস করে পরে ফেললেই হলো। তবে রংগুলো শাড়ির ওপর কীভাবে আছে, সেটা বিষয়। কয়েকটা উজ্জ্বল বা কড়া রং এক শাড়িতে না থাকাই ভালো। জরি বা চুমকির ভারী কাজ থাকলে বয়স্করাও আরামবোধ করেন না। এ বয়সের নিজস্ব একটা সৌন্দর্য আছে। নকশায় যেন সেটা ঢাকা পড়ে না যায়, সেদিকটায় একটু খেয়াল রাখা ভালো।

বড় বিষয় হলো যে শাড়িটা পরছেন, তার রং, নকশা বহন করতে পারছেন তো? ঈদের সময় শাড়িতে হাতের কাজ থাকতেই পারে। চওড়া পাড়ের বদলে একটু চিকন পাড় মানায় বেশি এ বয়সে বলে মনে করেন রঙ বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী শৌমিক দাস। পাড়ে হালকা জরির কাজ থাকতে পারে। তিনি জানান, বয়স্কদের অনেকেই সবার সামনে নিজেকে খুব একটা প্রকাশ করতে চান না। এ কারণেই হালকা বা কোমল রং বেছে নেন। টাঙ্গাইলের শাড়ি, বালুচরি শাড়ি, জামদানি, কাঁথা ফোঁড়ের শাড়ি, ছোট পাড়ের এক রঙা শাড়ি, ব্লকপ্রিন্ট ইত্যাদির মধ্য থেকে বয়স্কদের জন্য শাড়ি কিনতে পারেন।

শাড়ি হতে পারে উজ্জ্বল রঙেরও। মডেল: এলিজা ও শামীম আরা রহমান, ছবি: সুমন ইউসুফ
শাড়ি হতে পারে উজ্জ্বল রঙেরও। মডেল: এলিজা ও শামীম আরা রহমান, ছবি: সুমন ইউসুফ

টিয়া রঙা শাড়িতেও কিন্তু অভিজাত ও রুচিশীল ভাব প্রকাশ পায়। শাড়ির জমিনের কাজটা হতে পারে হালকা বুটি বা কাঁথা ফোঁড়ের। পুরো শাড়িতে কোনো কাজ না থেকে শুধু পাড় বা আঁচলে থাকতে পারে সুন্দর, গোছানো নকশা।

ম্যাটম্যাটে বা গাঢ় রং পড়তে না চাইলে হালকা গোলাপি, হালকা নীল, মিষ্টি আলো ছড়ানো হলুদ, বাঙ্গি, হালকা বেগুনি রং তো আছেই। গরমে এসব রঙের শাড়ি পরে আরামও পাবেন।