আপনি কি নিউমোনিয়ার ঝুঁকিতে আছেন?

নিউমোনিয়া মানে ফুসফুসের প্রদাহ। যে কারও নিউমোনিয়া হতে পারে। তবে পাঁচ বছরের কম বয়সীদের নিউমোনিয়ার ঝুঁকি বেশি। যেসব বিষয় নিউমোনিয়ার ঝুঁকি বাড়ায় সেগুলো হচ্ছে: অপুষ্টি, কম ওজনে জন্ম নেওয়া শিশু, যেসব শিশু মায়ের দুধ পান করেনি, যারা ঠিকমতো সব টিকা দেয়নি, অস্বাস্থ্যকর স্যাঁতসেঁতে পরিবেশে বাস করা, বড়রা ধূমপান করে এমন পরিবেশে বাস করা ইত্যাদি। আবার দীর্ঘ রোগে ভোগা ও বয়স্ক ব্যক্তি, যাদের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কম, এমন ব্যক্তিরাও এ রোগের ঝুঁকিতে আছেন। হঠাৎ অতিরিক্ত ঠান্ডায় অবশ্য তরুণ, কম বয়স্ক স্বাস্থ্যবান লোকেরও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হওয়া বিচিত্র নয়। ধূমপায়ী, ফুসফুসে আঘাত পাওয়া, কেমোথেরাপি বা কোনো ওষুধের কারণে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কমে যাওয়া ও অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিসের রোগীদের সাবধান হতে হবে। পক্ষাঘাতগ্রস্ত ব্যক্তিকে নল দিয়ে বা মুখে খাওয়ানোর সময় হঠাৎ খাবার বা পানি ফুসফুসে গেলেও নিউমোনিয়া হতে পারে। একে অ্যাসপিরেশন নিউমোনিয়া বলে।

নিউমোনিয়ার লক্ষণের মধ্যে রয়েছে জ্বর, কাশি, কাঁপুনি, বুকে ব্যথা, শ্বাস–প্রশ্বাসে কষ্ট ইত্যাদি। ওপরের ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের এ ধরনের উপসর্গ দেখা দিলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত। নিউমোনিয়া হলে বিশ্রাম নিতে হবে, প্রচুর পানি পান করতে হবে এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী সঠিক অ্যান্টিবায়োটিক সঠিক মাত্রা ও মেয়াদে গ্রহণ করতে হবে। জ্বর–কাশি হলে অনেকে নিজে নিজে কিনে অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করেন, এতে জীবাণু আরও শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারে। সমস্যাও জটিল হয়ে উঠতে পারে। মনে রাখবেন, নিউমোনিয়া ঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে রক্তে সংক্রমণ ছড়িয়ে গিয়ে জীবন বিপন্ন হতে পারে।

 প্রতিরোধ

ধূমপান করবেন না। সুষম খাদ্য গ্রহণ করুন। স্বাস্থ্যকর পরিবেশে বাস করুন। বাইরে থেকে ফিরে ভালো করে হাত ধোবেন। হাঁচি–কাশি দেওয়ার সময় রুমাল বা টিস্যু ব্যবহার করুন। শিশুদের টিকাগুলো সময়মতো দিন। বয়স্ক ও রোগাক্রান্ত ব্যক্তিরা ইনফ্লুয়েঞ্জা টিকা দিয়ে নিতে পারেন। নবজাতককে মাতৃদুগ্ধ ছাড়া আর কোনো খাবার দেবেন না এবং ছয় মাস পর্যন্ত মায়ের দুধই চলবে। কারণে–অকারণে জ্বর–কাশি হলেই অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করবেন না।

ডা. মো. আজিজুর রহমান, বক্ষব্যাধি বিশেষজ্ঞ