ঈদবাজার

রাজধানীর রাপা প্লাজায় গতকাল পছন্দের পোশাক বেছে নিচ্ছেন এক ক্রেতা  ছবি: প্রথম আলো
রাজধানীর রাপা প্লাজায় গতকাল পছন্দের পোশাক বেছে নিচ্ছেন এক ক্রেতা ছবি: প্রথম আলো

কামিজের ঝুল কমেনি। এবারের ঈদেও গতবারের মতোই লম্বা ঝুলের কামিজ পছন্দ তরুণী ক্রেতাদের। তবে নিচে হেমের কাটিং বৈচিত্র্য দেখা গেছে। কোনাকুনি, ফিশ কাট ও একটু লম্বাটে কাটের কামিজ কিনছেন তরুণীরা। নিচের দিকে কয়েক স্তরের কাপড় দেওয়া কামিজও দেখা যাচ্ছে। আড়ংয়ের কামিজেও দেখা গেছে লম্বা ঝুলের প্রাধান্য। কামিজের সঙ্গে রং মিলিয়ে সাধারণ কাটের সালোয়ার, লেগিংস ও চুড়িদার বেশি কিনছেন তরুণীরা। গতকাল সোমবার রাজধানীর বিপণিবিতানগুলো ঘুরে দেখা গেল, দেশি সুতি পোশাকের চাহিদাই তুলনামূলক বেশি।

ধানমন্ডি ২৭ থেকে ৩২ নম্বরসংলগ্ন মিরপুর রোডের পাশে জেনেটিক প্লাজা, রাপা প্লাজা, সানরাইজ প্লাজা, প্লাজা এ আর এবং মেট্রো শপিং সেন্টারে দেখা গেছে দেশি পোশাকের পাশাপাশি ভারতীয় থ্রিপিস, টুপিস। এসব পাওয়া যাচ্ছে এক হাজার ৫০০ থেকে ১০ হাজার টাকায়। ভারতের আশিকি-২, দাবাং-২, মার্ডার-৩, শ্রেয়া ঘোষাল, গঙ্গা, বিপাশা বসু, কারিনা ডল-বলিউডের এসব সিনেমা ও তারকার নামের পোশাক দিয়ে পরিপূর্ণ এবারের ঈদের বাজার। আর এগুলো কিনতে হলে ক্রেতাকে গুনতে হবে ১৫ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা।

রাপা প্লাজার ডায়ানা দোকানের স্বত্বাধিকারী মিলন কুমার বলেন, এবারের ঈদে তাঁরা ভারত থেকে জমকালো ডিজাইনের পোশাক আমদানি করেছেন। এসবের মধ্যে আড়াই লাখ টাকা দামের মাসাককালি, আশিকি-২ ও পানকৌড়ি নামের পোশাকও রয়েছে। অভিজাত বিপণিবিতানগুলোতে এসব পোশাকের বিপুল সমারোহ থাকলেও ক্রেতাদের ভিড় তুলনামূলক কম।

এবার কামিজের কাটে ভিন্নতা এসেছে ফ্যাশন হাউস দেশী দশের পোশাকে। বসুন্ধরা সিটিতে রয়েছে রঙ, সাদাকালো. দেশাল, নগরদোলা, অঞ্জন’স, প্রবর্তনা, বিবিআনা, নিপুণ, কে-ক্র্যাফট ও বাংলার মেলার বিক্রয়কেন্দ্র। একসঙ্গে এক জায়গা থেকে কেনাকাটা করার সুবিধা থাকায় এখানে তরুণীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। এখানে মিরপুর থেকে পোশাক কিনতে এসেছেন নিশিতা আক্তার। তিনি জানান, এখানকার পোশাকে রয়েছে দেশীয় আমেজ। তবে পোশাকের মান অনুযায়ী দাম বেশি বলে মনে হয়েছে তাঁর কাছে।

রঙের স্বত্বাধিকারী বিপ্লব সাহা প্রথম আলোকে বলেন, ‘এবার ঈদ হচ্ছে বর্ষায়। তাই আমরা পোশাকে উজ্জ্বল রঙের ব্যবহার করেছি। দিনে পরার জন্য সুতি ও রাতের জন্য সিল্কের থ্রিপিস তৈরি করা হয়েছে। এগুলো পাওয়া যাচ্ছে এক হাজার ৮০০ থেকে সাত হাজার টাকার মধ্যে।’ এ ছাড়া ধানমন্ডির আনাম র‌্যাংগস প্লাজা, অরচার্ড পয়েন্ট, নন্দন কুটির, বিবিয়ানাসহ বিভিন্ন বিপণিবিতান ও ফ্যাশন হাউসেও ক্রেতাদের ভিড় ছিল।

গতকাল বেইলি রোডে অঞ্জন’সের বিক্রয়কেন্দ্রে নতুন দম্পতি হিফজুর হোসেন ও ফারিয়া হোসেনকে দেখা গেল একই ধরনের রং ও নকশার পোশাক মিলিয়ে কিনতে। তাঁরা বলেন, ‘বিয়ের পর প্রথম ঈদ। এ জন্য দুজন মিলিয়ে পোশাক কিনলাম।’

পোশাকে বাঙালিয়ানার ছাপ পাওয়া যাবে আজিজ সুপার মার্কেটে। এখানকার প্রধান ক্রেতা তরুণ প্রজন্ম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলার ছাত্রী সিনথিয়া আফরিন জানান, তিনি তিন হাজার টাকায় শাড়ি কিনেছেন নিত্য উপহার থেকে। নিত্য উপহারের স্বত্বাধিকারী বাহার রহমান জানান, এবার ঈদ উপলক্ষে শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরীর নকশা করা নতুন তিন ধরনের শাড়ি তৈরি করা হয়েছে। শাড়িগুলোর প্রতিটির দাম এক হাজার ২০০ থেকে তিন হাজার টাকা।

আকাশে মেঘ কেটে গিয়ে রোদ উঠেছিল কাল। ঝলমলে দিনে মহানগরের বিপণিবিতানগুলোতে ঘুরে স্বস্তিতেই কেনাকাটা করেছেন ক্রেতারা।