ছুটির পর কাজে ফেরা

ছুটির পর ফুরফুরে মেজাজেই শুরু করুন কাজ। সহকর্মীদের সঙ্গে বিনিময় করুন শুভেচ্ছা। মডেল: রাইজা। ছবি: অধুনা
ছুটির পর ফুরফুরে মেজাজেই শুরু করুন কাজ। সহকর্মীদের সঙ্গে বিনিময় করুন শুভেচ্ছা। মডেল: রাইজা। ছবি: অধুনা

ই-মেইল, স্মার্টফোন আর মিটিংয়ের চাপে কদিন আগের ছুটির দিনগুলো যেন মনে হচ্ছে বহুদূরের স্মৃতি। বিশ্বাসই হচ্ছে না, এই তো তিন-চার দিন আগেও এই সময় কেটেছে সমুদ্রের ধারে রোদ পোহাতে পোহাতে। অফিস শেষে ক্লান্ত শরীরে যানজটে বসে মনে হচ্ছে, আরে, এমনই সন্ধ্যায় তো ছিলাম খোলা আকাশের নিচে আগুন জ্বালাতে ব্যস্ত, বারবিকিউয়ের আয়োজনে! ফোনের টুংটাং শব্দেই যেন বাড়ি পড়ছে মাথায়, কম্পিউটার মনিটরের দিকে তাকাতেই মন চাইছে না। নাহ, সেই স্মৃতিগুলো কাটিয়ে কাজে মনোযোগ দেওয়া তো কঠিনই। এর মানে এ-ও নয় যে, নিজের কাজটা আপনি ভালোবাসেন না। কিন্তু ছুটি তো সব সময়ের নয়। ছুটির আমেজ কাটিয়ে তো কাজে ফিরতেই হবে। কীভাবে?

রাতের বাসে ফিরেই সকালে অফিস, রেল স্টেশন বা বিমানবন্দর থেকে প্রথম গন্তব্য অফিস—এমনটা কিন্তু করা উচিত নয় বলেই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। যতটা বেশি সম্ভব ছুটিকে ব্যবহার করার ইচ্ছা থেকেই এমন হতে পারে। আপনি হয়তো চাইবেন, একদম শেষ দিন পর্যন্ত ঘুরে বেড়াতে। কিন্তু এতে আদতে আপনার মনঃসংযোগের ক্ষতিই হবে।
ছুটি শেষে এক দিন বাড়িতে বিশ্রাম নেওয়া ভালো। কারণ, ছুটিতে গেলে যাতায়াত, বেড়ানো এসব মিলে একটা ধকলও তো পোহাতে হয়। ছুটির পর বাড়ি ফিরে মনে মনে গুছিয়ে নেবেন অফিসের কাজগুলো। সেদিন নিজের বাসাতেই বিশ্রাম নেবেন। তারপর একদম ভাবনাহীন মনে পরদিন যাবেন অফিসে। বললেন করপোরেট কোচের প্রধান পরামর্শক যিশু তরফদার। আর ছুটিতে যাওয়ার আগেই কিছুটা প্রস্তুতি নিয়ে রাখা ভালো বলে তিনি মনে করেন। ‘একটা চেকলিস্ট বানিয়ে রাখা ভালো। কী কী কাজ ছুটির আগে সেরে যাচ্ছি আর ছুটি কাটিয়ে ফিরে কী কী করতে হবে, তার তালিকা রাখুন। এতে কাজগুলো সহজে সেরে ফেলা যাবে।’ বলেন তিনি।
ছুটির পরই হয়তো আপনার কাঁধে পড়ছে বড় কোনো কাজ। তার কিছুটা প্রস্তুতি আগেই নিয়ে রাখা ভালো। কাজটা কীভাবে করবেন, সেই পরিকল্পনা ছুটির আগেই করে রাখতে পারেন। তারপর ফিরে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিন।
ছুটির পর ফিরে আনন্দের স্মৃতিগুলো ভাগ করে নিতে পারেন সহকর্মীদের সঙ্গে। তাঁদের দেখাতে পারেন ছুটিতে তোলা ছবিগুলো, তবে এতে যেন কাজের সময় নষ্ট না হয়। কার সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা কেমন, সেটা বুঝেই আলাপ করবেন।

ছুটিতে থাকাকালে অনবরত ফোন আর ই-মেইলের উত্তর দিতে হলে কিন্তু ছুটির মজাটাই মাটি। সেখানে গিয়ে ফুরফুরে মেজাজে তো থাকতেই হবে; তবে আবার অফিসের কথাও একদম ভুলে গেলে চলবে না। ফোন হয়তো ধরলেন না, কিন্তু এসএমএসের উত্তর দিতে পারেন। দিনে একবার ই-মেইল চেক করতে পারেন।

যিশু তরফদার জানান, একটি স্বয়ংক্রিয় উত্তর তৈরি করে রাখতে পারেন ই-মেইলের। আপনি এখন ছুটি কাটাচ্ছেন, আপনার ইন্টারনেট সংযোগ সীমিত। কাজে ফিরেই আপনি ই-মেইলের জবাব দেবেন—এ ধরনের একটি বার্তা তৈরি করে রাখতে পারেন, যাতে কেউ আপনাকে ই-মেইল করলেই তাঁর কাছে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ই-মেইলটি চলে যায়। ই-মেইল ব্যবহার করার সব সফটওয়্যারেই এ সুবিধাটা আছে।ছুটি শেষ মানেই তো একেবারে শেষ নয়। এ রকম আরেকটি আনন্দময় ছুটি কাটানোর সুযোগ তো আপনি আবার পাবেন।

ডেস্কটপে ওয়ালপেপার করে রাখা সুন্দর ছবিটি দেখে নিয়ে কাজে মন দেওয়ার চেষ্টা করুন।