সাক্ষাৎকারে যা মনে রাখলে ভালো

সাক্ষাৎকারের সময় সরাসরি দৃষ্টিবিনিময় করুন। দৃষ্টিতে থাকবে আত্মপ্রত্যয় ও নমনীয় ভাব। প্রতীকী ছবি।
সাক্ষাৎকারের সময় সরাসরি দৃষ্টিবিনিময় করুন। দৃষ্টিতে থাকবে আত্মপ্রত্যয় ও নমনীয় ভাব। প্রতীকী ছবি।

চাকরি পাওয়া মোটেই হাতের মোয়া নয়। মেধা ও সনদ অনুকূলে থাকলেও অনেক সময় সামান্য কিছু বিষয়ে অজ্ঞতার জন্য সাক্ষাৎকার পর্বেই ফসকে যেতে পারে কাঙ্খিত চাকরিটি। এ জন্য সাক্ষাৎকার নিয়ে চাকরিপ্রার্থীকে আলাদা প্রস্তুতির পাশাপাশি সতর্কও থাকতে হয়।


চাকরির সাক্ষাৎকারে করণীয় ও বর্জনীয় কিছু বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের ব্যবসা ও ব্যবস্থাপনা বিষয়ক জনপ্রিয় লেখক, বিশ্লেষক ও বক্তা বার্নার্ড মার। এই পরামর্শগুলোকে চাকরির সাক্ষাৎ​কারের জন্য ধ্রুপদিই বলা যেতে পারে। এগুলো মনে রাখলে সাক্ষাৎকারে সহজেই মিলতে পারে সফলতা। মারের পরামর্শগুলো এখানে তুলে ধরা হলো।


সাক্ষাৎকারে যা করণীয়:

* চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে আগেই ভালোভাবে জেনে নিন।
* প্রত্যাশিত পদ এবং কাজ সম্পর্কে জানুন।
* সাক্ষাৎকারে সচরাচর যেসব প্রশ্ন করা হয়, তা নিয়ে ভাবুন; সম্ভাব্য উত্তর অনুশীলন করুন।
* প্রতিষ্ঠান ও প্রত্যাশিত পদের সঙ্গে মিল রেখে সাক্ষাৎকারের দিন পোশাক বাছাই করুন।
* সাক্ষাৎকারে যাওয়ায় আগে চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠানের অবস্থান ও সেখানে পৌঁছানোর পথঘাট জেনে নিন।
* সাক্ষাৎকারের দিন হাতে সময় রেখে রওনা দিন, নির্ধারিত সময়ের আগে উপস্থিত হন।
* যাওয়ার পথে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত কারণে বিলম্ব হলে, সাক্ষাৎকার আয়োজনের দায়িত্ব থাকা কর্মকর্তাকে ফোনে তা জানিয়ে দিন।
* সাক্ষাৎকার পর্বে জীবনবৃত্তান্তসহ প্রয়োজনীয় সনদ ও তথ্যপ্রমাণ সঙ্গে নিতে ভুলবেন না।
* অপেক্ষা ও সাক্ষাৎকার কক্ষে সবার সঙ্গে শান্ত, ভদ্র ও আন্তরিকভাবে কথা বলুন।
* সাক্ষাৎকারের সময় সরাসরি দৃষ্টিবিনিময় করুন। দৃষ্টিতে থাকবে আত্মপ্রত্যয় ও নমনীয় ভাব।
* কাঙ্ক্ষিত পদ ও প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে নিজের উৎসাহের বিষয়টি সাক্ষাৎকারে প্রকাশ করুন।
* নিজের অর্জন ও দক্ষতার বিষয়ে জোর দিন।
* প্রশ্ন অনুযায়ী সুনির্দিষ্ট ও বিস্তারিত উত্তর দিন।
* চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার কৌশল ব্যাখ্যা করুন।
* উত্তর দেওয়ার ক্ষেত্রে বুদ্ধিদীপ্ত হন, কিন্তু সৎ থাকুন।
* সাক্ষাৎকারের সময় তাড়াহুড়া নয়। ধীরে চিন্তা করে শান্তভাবে উত্তর দিন।
* প্রশ্ন না বুঝলে ‘দুঃখিত’ বলে তা আবার উল্লেখ করতে অনুরোধ করুন।
* বেতনের ব্যাপারটি আগেই ভেবে রাখুন, বুঝেশুনে প্রত্যাশিত বেতনের অঙ্ক বলুন।
* সাক্ষাৎকার শেষ হওয়ার অন্তত ২৪ ঘণ্টা পর কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানিয়ে একটি নোট দিতে পারেন।

সাক্ষাৎকারে যা বর্জনীয়:
* পোশাক বাছাইয়ে সতর্ক হন। অতি উজ্জ্বল, ঝকমকে, বিচিত্র রঙের পোশাক বর্জনীয়।
* অতিরিক্ত ও কটু সুগন্ধী ব্যবহার করবেন না। তামাকজাতীয় পদার্থের দুর্গন্ধের ব্যাপারে ধূমপায়ীদের সতর্ক থাকতে হবে।
* সাক্ষাৎকারে যেতে বিলম্ব কাম্য নয়।
* চাপ ও জড়তার কারণে সব প্রস্তুতি ব্যর্থ হয়ে যেতে পারে।
* বাবা-মা, আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু কাউকে সঙ্গে নেবেন না।
* চিউইংগাম জাতীয় কিছু মুখে নেবেন না। সঙ্গে বাহ্যিক জিনিসপত্র না নেওয়াই ভালো।
* সাক্ষাৎকারে কৌতুক বা কথার কথা বলবেন না।
* বিতর্কিত বিষয় না তোলাই ভালো।
* কথাবার্তা ও যুক্তিতে আক্রমণাত্মক হবেন না।
* অতি আত্মবিশ্বাস সর্বনাশ ডেকে আনে।
* হতাশা ও নেতিবাচক কথা বলবেন না।
* বর্তমান বা পুরোনো চাকরি নিয়ে নেতিবাচক কথা বলবেন না।
* কোনোভাবেই মিথ্যা বলা যাবে না।
* ওজর দেবেন না।
* প্রশ্ন না বুঝে উত্তর দেবেন না।
* শুধু ‘হ্যাঁ-না’ উত্তর দেবেন না।
* ব্যক্তিগত বা পারিবারিক সমস্যার প্রসঙ্গ টানবেন না।
* সাক্ষাৎকারকক্ষে মোবাইল ফোন ব্যবহার একেবারে বর্জনীয়।
* চাকরি পাওয়ার আগেই নিজ থেকে বেতন-ভাতার প্রসঙ্গ তুলবেন না।
* সাক্ষাৎকার শেষ হতে না হতেই ফোন দিয়ে ফল জানার চেষ্টা করবেন না। বারবার ফোন দেওয়াও উচিত না।