শর্করা খেয়েও ওজন বাড়বে না!

ওজন কমাতে অল্প পরিমাণে হলেও শর্করাজাতীয় খাবার খেতে হবে। মডেল: কারার ও জ্যোতি, স্থান: প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁ হোটেল, ছবি: অধুনা
ওজন কমাতে অল্প পরিমাণে হলেও শর্করাজাতীয় খাবার খেতে হবে। মডেল: কারার ও জ্যোতি, স্থান: প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁ হোটেল, ছবি: অধুনা

ডায়েট করছি তো শর্করা একদম বাদ—এই ধারণা একদম ঠিক না। বরং ডায়েটের সময় খাদ্যতালিকা থেকে শর্করা সম্পূর্ণ বাদ দিলে অসুস্থ হয়ে পড়ার সুযোগ থাকছে। ডায়েট করে সুস্থ থাকার জন্য তাই অল্প পরিমাণে হলেও শর্করা খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিলেন পুষ্টিবিদেরা। অনেকে শর্করা বলতে শুধু ভাত, রুটি বা আলুকেই চিহ্নিত করেন। তবে চিনি, গুড় বা মধুতেও শর্করা থাকে। যেটি ‘সিম্পল সুগার’ হিসেবে পরিচিত। বারডেম জেনারেল হাসপাতালের প্রধান পুষ্টিবিদ আখতারুন্নাহার আলো বলেন, ‘সম্পূর্ণ শর্করা বাদ দিয়ে কোনো মানুষই সুস্থ থাকতে পারে না। আর তাই যাঁরা ডায়েট করতে গিয়ে পুরোপুরি শর্করা বাদ দিয়ে ফেলেন তাঁরা দ্রুত অসুস্থ হয়ে যাবেন। সুস্থ থাকতে প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় কমপক্ষে তাই ৩০ শতাংশ শর্করা নিতে হবেই। এর চেয়ে কম নিলে এবং সেটা বেশি দিন স্থায়ী হলে শরীরে নানা ধরনের সমস্যা দেখা দেবে।’
খাবারের তালিকায় শুধু প্রোটিন বা ফ্যাট রেখে ওজন কমাতে চাইলে সেটা হবে বোকামি। তার চেয়ে বরং ক্যালরি কমানোর মাধ্যমে ওজন নিয়ন্ত্রণে আনার পক্ষে মত দিলেন পুষ্টিবিদেরা। ভাত, রুটি, আলু, খই, মুড়ির মতো খাবারে জটিল শর্করা আছে। যা ‘কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট’ হিসেবে পরিচিত। এ ধরনের খাবার একেবারে বাদ না দিয়ে পরিমাণটা কমিয়ে দিতে পারেন। তাহলেই সুস্থ থেকে মাসে তিন থেকে চার কেজি ওজন ঝেড়ে ফেলতে পারেন। খাদ্য তালিকা বা ডায়েট চার্ট মেনে খাবার গ্রহণের আগে অবশ্যই পুষ্টিবিদদের কাছে ওজন মেপে পরামর্শ নিতে হবে। তাহলেই পাওয়া যাবে সঠিক খাবার তালিকা। কেমন হবে অল্প কার্বোহাইড্রেট নিয়ে ডায়েটের দিনগুলোর খাবার, তাঁর একটা নমুনা অধুনার পাঠকদের জানিয়ে দিলেন আখতারুন্নাহার আলো।
উচ্চতা অনুযায়ী স্বাভাবিক যে ওজন থাকার কথা তার চেয়ে যাঁদের ওজন ২০ থেকে ২৫ শতাংশ বেশি তাঁদের জন্য খাবার তালিকাটা হবে এমন—
সকাল: একটা রুটি, সেদ্ধ ডিম, কম তেলের সবজি দিয়েই সকালের নাশতাটা সেরে নিতে পারেন। পানিযুক্ত সবজি বেশি করে খেতে পারেন।
দুপুর: দুপুরে আধা কাপ ভাত (৫০ গ্রামের মতো), বেশি পরিমাণে ডাল, সবজি ও সালাদ খাবেন। তবে মাছ বা
মাংসের একটা পদ থাকতে হবে। সেটা ৩০ গ্রাম পরিমাণে।
রাত: রাতে রুটি খাওয়াটাই ভালো। রুটি হলে দুইটা খাবেন। চাইলে এক কাপ ভাতও খেতে পারেন। এর সঙ্গে সবজি, ডাল আর মাছ বা মাংসের এক পদ। তবে স্বাদবদলের জন্য দুপুরে মাছ খেলে রাতে মাংস বেছে নিতে পারেন। আর রাতের খাবার অবশ্যই নয়টার মধ্যে শেষ করে ফেলতে হবে। সে ক্ষেত্রে যতটা আগে সম্ভব খেতে পারেন।
যেসব খাবারে ক্যালরি বেশি সেসব এড়িয়ে চলতে হবে। দাওয়াতে যাওয়ার আগেও ভাবতে হবে যাবেন কি না। দিনে ২০ মিলিলিটারের বেশি তেল খাওয়া যাবে না। তাহলেই আপনার ওজন কমবে শরীর ফিট রেখেই।