নতুন কাট সালোয়ারে প্যান্টে

চাপা অথবা গোড়ালি থেকে একটু উঁচু, সালোয়ার ও প্যান্টের নকশায় এমনই ভিন্নতা। মডেল: স্পৃহা ও আফরিন, পোশাক: ড্রেসিডেল ও ক্যাটস আই, সাজ: পারসোনা, ছবি: কবির হোসেন
চাপা অথবা গোড়ালি থেকে একটু উঁচু, সালোয়ার ও প্যান্টের নকশায় এমনই ভিন্নতা। মডেল: স্পৃহা ও আফরিন, পোশাক: ড্রেসিডেল ও ক্যাটস আই, সাজ: পারসোনা, ছবি: কবির হোসেন

আবারও পোশাকে পরিবর্তন। বলা ভালো, পোশাকের একটা অংশে। ফ্যাশনের মজাই এখানে। এক ধারা যেতে না-যেতেই চলে আসে আরেকটি। ফ্যাশনের চলতি ধারা হিসেবে এখন বিভিন্ন ধরনের সালোয়ার ও প্যান্ট দেখা যাচ্ছে। নিজের স্টাইলের সঙ্গে মিলিয়ে ক্রেতারা সেখান থেকে বেছে নিচ্ছেন মানানসই সালোয়ারটি। চাপা কাট বেশি দেখা যাচ্ছে ফ্যাশন হাউসগুলোর নকশায়। তবে ভিন্নতাও চোখে পড়ে।
সাধারণ কাটের সালোয়ারের চল এখন কমে গেছে অনেকটাই। একটা সময় ছিল যখন চুড়িদার পরা কাউকে দেখলেই প্রশংসা করা হতো। সাধারণ কাটের সালোয়ারের বাইরে চুড়িদার, সারারা বেশ আলোড়ন তুলেছিল। এরপর এল পাতিয়ালা। তারপর ধুতি। নিচে চওড়া মুহুরি দেওয়া সালোয়ারের চলও ছিল কিছুদিন। পালাজ্জোর নকশায়ও এসেছে পরিবর্তন। প্রথম প্রথম নিচের দিকটা অনেক চওড়া ছিল। এখন নিচের চওড়া অনেক কমে এসেছে। সারারা থেকেই ধারণাটি এসেছে। লিনেন, নরম সুতি, নিটওয়্যার দিয়ে তৈরি পালাজ্জোর নিচের ঝুলটা (ফল) খুব ভালো হয়। নিচের দিকে ত্রিভুজের মতো কাট চলে এসেছে। যোগ করা হচ্ছে লেস ও সুতার কাজ। পালাজ্জোতে ছাপা কাপড় ব্যবহার করা হচ্ছে। এর সঙ্গে একরঙা কুর্তা বা কামিজ ভালো মানাবে। ক্যাজুয়াল ট্রাউজারও চলছে। স্কার্ট ধাঁচের প্যান্টও দেখা যাচ্ছে। ওরেভ বা বায়াস ছাঁটে এখন পালাজ্জো, সালোয়ারের কাপড় কাটা হয়। এ কারণে কাপড়ের ঝুলটা খুব সুন্দর করে পড়ে। ফ্যাশন ডিজাইনার এমদাদ হক এভাবেই তুলে ধরলেন গত কয়েক বছরের সালোয়ারের ধারা। মাঝখানের কয়েক বছর টাইটসও জনপ্রিয় ছিল। এখনো অনেকে পরছেন। সম্প্রতি ইউরোপে নাকি আবার টাইটস ফ্যাশনে চলে এসেছে। তাহলে ধারণা করা যাচ্ছে যে কিছুদিন পর আমাদের এখানেও সেই ধারা আবার জমে উঠবে।

নিটওয়্যারের তৈরি টাইটস বেছে নিচ্ছেন অনেকে। পালাজ্জোর নিচে দেওয়া হচ্ছে সুতার কাজ
নিটওয়্যারের তৈরি টাইটস বেছে নিচ্ছেন অনেকে। পালাজ্জোর নিচে দেওয়া হচ্ছে সুতার কাজ

পেনসিল প্যান্ট, সিগারেট প্যান্ট, চাপা ও লম্বায় ছোট কাটের পালাজ্জো, নি লেংথ ট্রাউজার, স্কিনি জিনস, স্কিনি ক্যাজুয়াল প্যান্ট, স্কার্ট প্যান্ট, ধুতি সালোয়ার, বেলুন প্যান্টের সমারোহ এখন বেশি। এর বাইরেও যে অন্য কোনো কাট দেখা যাচ্ছে না, তা নয়। তবে এই কাটগুলো আগামী কয়েক মাস বেশি দেখা যাবে। পোশাকের নিচের অংশে এখন বেশ কয়েক রকমের কাটছাঁট দেখা যাচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ক্রেতারা এখন ফ্যাশন-সচেতন। নতুন নতুন ধারা অনুসরণ করতে চান। এ কারণেই এ বছর সালোয়ার বা প্যান্টে একসঙ্গে বিভিন্ন কাট দেখা যাচ্ছে।

.
.

সালোয়ার ও প্যান্টের চলতি ধারা নিয়ে ফ্যাশন ডিজাইনার মাহিন খান বলেন, ‘যে কাটগুলো এখন সালোয়ারে পাওয়া যাচ্ছে, তার মধ্যে একটি হলো স্কিনি ফিটিংস। স্কিনি জিনসগুলোতে সুতা ওঠানো থাকে। রিপড লুক পাওয়া যাবে। আরেকটি হচ্ছে, সত্তরের দশকের মতো ফ্লেয়ার থাকছে। পোশাকের নিচের অংশটিতে বেল বটমের বিভিন্ন স্টাইল দেখা যাচ্ছে। ওপরের দিকে চাপা হয়ে নিচের দিকে ঢিলে হচ্ছে।’ কোমরের একটু ওপরে পরার ট্রেন্ডটা অচিরেই চলে আসবে। এ কারণে টপগুলো একটু ছোট হয়ে যাবে লম্বায়। চাপা কাটের প্যান্টের সঙ্গে একটু ফ্লেয়ার দেওয়া টপ ভালো লাগবে। স্কিনি জিনসের সঙ্গে কুচি দেওয়া অথবা ঢিলে টপ বেছে নিলে ভালো। অনেক লেয়ারের মাধ্যমে তৈরি করা টপও মানাবে। বেল বটম স্টাইলের প্যান্টের সঙ্গে বুক পর্যন্ত চাপা হয়ে ছেড়ে দেওয়া টপ পরতে পারেন। নি লেংথ ট্রাউজারের সঙ্গে লম্বা কামিজ পরতে পারেন।

.
.

এখন সবচেয়ে বেশি চলছে সিগারেট ও পেনসিল কাটের সালোয়ার। দুটোই চাপা কাটের, তবে পেনসিল প্যান্টটা বেশি চাপা। ফ্যাশন ডিজাইনার মায়া রহমান বললেন, ‘সিগারেট প্যান্টের ওপরের দিকটি একটু ঢিলে থাকে। নিচের দিকে মুহুরিটাও একটু চওড়া থাকে। ঢিলে থাকে। পেনসিল প্যান্টের ওপরে ও নিচে দুই দিকেই চাপা থাকে। সিগারেট প্যান্ট তুলনামূলক কম লম্বা। সিগারেট প্যান্ট এখন কামিজের সঙ্গেও পরছেন অনেকে। পেনসিল প্যান্ট কিশোরীরা বেশি পছন্দ করছে। তবে যাঁদের স্বাস্থ্য ভালো, তাঁরা এই প্যান্ট না পরলেই ভালো।’ এই প্যান্টগুলোর সঙ্গে লম্বা কামিজই পরা হচ্ছে। কামিজের ঘের কমে গেছে। ধুতির সঙ্গে লম্বায় ছোট কামিজ পরলে ভালো। নিচের দিকে ওভাল শেপ পরতে পারেন। কাপড়ের তৈরি চুড়িদারের জনপ্রিয়তা এখনো আছে। পাশাপাশি নিট কাপড়ের তৈরি চুড়িদার বেছে নিচ্ছেন অনেকে। এসব টাইটসের কুচিগুলো পড়ে ভালোভাবে।
সাধারণভাবে বানানো সালোয়ারে এখন ১২ ইঞ্চি মুহুরি দেওয়া হচ্ছে। ধুতির মুহুরিতে ১০ দিলেই ভালো। সাড়ে তিন গজের মতো কাপড় লাগবে। তবে ধুতিতে বেশি কুচি চাইলে বেশি কাপড় লাগবে। ধুতির জন্য একটু নরম কাপড় ভালো। সিগারেট প্যান্টের জন্য একটু মোটা কাপড় ব্যবহার করলে ভালো। পেনসিল প্যান্টের জন্য একটু স্ট্রেস করে এমন কাপড় ব্যবহার করতে পারলে ভালো। পালাজ্জোতে জর্জেট কাপড় ব্যবহার করলে নিচে ভয়েল কাপড় লাগিয়ে নিন।