অব্যবস্থাপনার অভিযোগ, সাবেক সংগঠকদের ক্ষোভ প্রকাশ

সিলেট বিশ্ব সম্মেলন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা অতিথিরা
সিলেট বিশ্ব সম্মেলন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা অতিথিরা

নিউইয়র্কে ১৬ ও ১৭ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত জালালাবাদ বিশ্ব সম্মেলন সফল দাবি করলেও নানা অব্যবস্থাপনায় অসন্তোষ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া অনেক ব্যক্তি। বিশেষ করে নিউইয়র্কের বৃহত্তম সংগঠন হিসেবে পরিচিত জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের কিছু কর্মকর্তা ও সিলেটের নানা জেলা ও থানাভিত্তিক সংগঠনের নেতারা মনে করেন, এ সম্মেলন আরও সফল হতে পারত। শুধু নেতৃত্ব ধরে রাখার জন্য বা অন্য কোনো রহস্যজনক কারণে সিলেট অঞ্চলের সব পক্ষকে এই বিশ্ব সম্মেলনে সম্পৃক্ত করা হয়নি বলে তাঁরা মনে করেন।
নিউইয়র্কে জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সংগঠক হিসেবে পরিচিত ব্যক্তিদের মধ্যে অনেকেই কথা বলেছেন প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার সঙ্গে। সংগঠনের সাবেক সভাপতি ও নিউইয়র্ক বাংলাদেশ সোসাইটির সভাপতি কামাল আহমেদ, সাবেক সভাপতি এম এ কাইয়ুম, আজমল হোসেন কুন, সৈয়দ শওকত আলী, এম এ বাসেত নিউইয়র্কে দীর্ঘদিন থেকে জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। বিশ্ব সম্মেলন নিয়ে তাদের ক্ষোভ বেরিয়ে আসে কামাল আহমেদের কথার মধ্য দিয়ে। এরই মধ্যে অনেকেই নিজের প্রাণের সংগঠন নিয়ে প্রকাশ্য বিরোধ নিয়ে জনসমক্ষে কিছু বলতেও অনিচ্ছুক। তারপরও তাদের ক্ষোভের কথা জানালেন কামাল আহমেদ।
কামাল আহমেদ বলেন, বিশ্ব সম্মেলনের আয়োজনের নামে জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনকে অপমান করা হয়েছে। থানাভিত্তিক অন্তত ৬০টি সংগঠন রয়েছে নিউইয়র্কে। কারও সঙ্গে কোনো পরামর্শ করা হয়নি বলে তিনি অভিযোগ করেন। ফলে দেখা গেছে নানা অব্যবস্থাপনা। আমন্ত্রিত অতিথিদের সামান্য দেখভাল করা হয়নি। অনেক সেমিনারের আয়োজন করা হলেও এসব পরিচালনা বা ব্যবস্থাপনায় কোনো প্রস্তুতি কারও ছিল না। দায়সারা ভাব ছিল সর্বত্র। সবাইকে সম্পৃক্ত না করে এমন আয়োজন যে সফল হতে পারে না, তার প্রমাণ সিলেট বিশ্ব সম্মেলন। তিনি বলেন, ভবিষ্যতে এর জের ধরে জালালাবাদ অ্যাসোসিয়েশন সাংগঠনিক সংকটে পড়তে পারে বলে তিনি মনে করেন।
সংগঠনের সাবেক সভাপতি এম এ কাইয়ুম বলেন, সম্মেলনের নামে একটি আহ্বায়ক কমিটি করা হয়েছে যা গঠনতন্ত্র বিরোধী। সাবেক কর্মকর্তাদের সম্পৃক্ত করা হয়নি। নিউইয়র্কের সবচেয়ে বড় এই সংগঠনের এমন খেয়ালি আচরণের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের জবাবদিহির কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।
অব্যবস্থপনার নানা চিত্র তুলে ধরে সাবেক অনেক সংগঠক এই প্রতিবেদককে সম্মেলন কেন্দ্রের মাঠের চিত্র তুলে ধরার আহ্বান জানান। তবে নানা অব্যবস্থাপনা আর ক্ষোভ নিয়ে প্রথম আলো উত্তর আমেরিকার সঙ্গে কথা হয় জালাবাদ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জেড চৌধুরী জুয়েলের। তিনি বলেন, অনেক বিরোধিতার পরও সম্মেলন সফল হয়েছে। নানা অব্যবস্থাপনা ও ভুল ত্রুটির কথা স্বীকার করে জুয়েল বলেন, ‘আমরা একাধিকবার সবাইকে সম্পৃক্ত করার উদ্যোগ নিয়ে ব্যর্থ হয়েছি। তারপরও যাদের সহযোগিতায় এমন একটি সম্মেলন সফলভাবে করা গেছে, তাদের সবার প্রতি তিনি কৃতজ্ঞতা জানান।
জালালাবাদ সিলেট বিশ্ব সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে বিশাল সবুজ মাঠে তাঁবু খাঁটিয়ে হিজাব ও বোরকা বিক্রির আয়োজন করেছিলেন ফারুক আহমেদ। মাথায় হাত দিয়ে তিনি বলেন, আম গেছে-ছলাও গেছে। কোনো বেচা-বিক্রি নাই। লোক সমাগম নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করলেন এলিনা রহমান নামের এক নারী। জামা-কাপড় ও কসমেটিকসের পসরা নিয়ে বসেছিলেন এক নারী। জানালেন, ‘দিনটা মাটি অই গেলো রে ভাই। ঘরে হুতিলেও লাভ আছিল।’
তবে মঞ্চের কাছাকাছি খাবারের দোকানে ছিল উপচে পড়া ভিড়। যারাই বিশ্ব সম্মেলনে এসেছিলেন, একবার ঢুঁ মেরেছেন। ভাপা পিঠা আর চা মুড়ির পসরা নিয়ে যিনি বসেছিলেন, তাঁর কোনো অভিযোগ ছিল না। জানালেন, শেষের দিন বিক্রি অনেক ভালো হয়েছে।