বইয়ের শহর নিউইয়র্ক

যদি কেউ বলেন, ‘বইয়ের শহর হলো নিউইয়র্ক’—কথাটি খুব একটা বাড়িয়ে বলা হবে না। এই নিউইয়র্ক শহরের প্রতিটি অলিগলিতে শোভা পাচ্ছে বিভিন্ন স্বাদের আর বিভিন্ন মেজাজের অসংখ্য বইয়ের দোকান আর সারি সারি পাঠাগার। আর সে কারণেই হয়তো ফ্রান্সিস বেকন বলেছিলেন, ‘Some books are to be tasted, others to be swallowed, and some few to be chewed and digested’। সত্যিই তাই। বলিহারি নতুন-পুরোনো আর দুষ্প্রাপ্য বই পেতে হলে নিউইয়র্কের কোনো জুড়ি নেই। সনাতনী ধাঁচের গুরুগম্ভীর চেহারায় দাঁড়িয়ে থাকা পাঠাগারগুলো আর বই এই শহরের বুকে এক বিশাল জায়গা দখল করে আছে। আর সে কারণেই প্রাত্যহিক গার্হস্থ্য-জীবনের হাজার ব্যস্ততার মধ্যেও এখানকার বইপ্রেমীরা বই পড়েন সাবওয়েতে বাদুড় ঝুলতে ঝুলতে, স্যান্ডউইচে কামড় বসাতে বসাতে অথবা স্রেফ নির্জন পার্কের কোণে বেঞ্চে বসে অলস সময় কাটাতে কাটাতে। বইয়ের সঙ্গে প্রাত্যহিক জীবনের এই লেনদেন আছে বলেই নিউইয়র্কবাসী বইকে ভালোবাসেন, বইয়ের সঙ্গে একটা আত্মিক সখ্য গড়ে তুলে বইকে জীবনের অন্যতম অংশ করে নেন।

ফরাসিরা একসময় বিশ্বাস করত, কোনো নির্দিষ্ট এলাকার মানুষের মনন আর রুচির উৎকর্ষ নির্ণীত হয় সেই এলাকায় কতগুলো পাঠাগার আছে, তার ওপর। নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের এমন কোনো ছোট শহর নেই যেখানে পাঠাগার নেই। নিউইয়র্ক নগরের পাঁচটি বোরোর প্রতিটির আনাচকানাচে অসংখ্য পাঠাগার ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। শুধু কুইন্স বোরোতেই কুইন্স লাইব্রেরির শ খানেক শাখা রয়েছে। বিভিন্ন বয়সী পাঠকের সমাবেশে সপ্তাহের প্রায় প্রতিদিন এই পাঠাগারগুলোতে ভিড়বাট্টা লেগেই থাকে। তবে পড়াশোনার পাশাপাশি এই পাঠাগারগুলো সমাজের উন্নয়নমূলক নানা কাজের সঙ্গেও যুক্ত থাকে। কমিউনিটির সাংস্কৃতিক চর্চা, বয়স্ক শিক্ষাব্যবস্থা (যেমন ইংরেজি শিক্ষা, কম্পিউটার শিক্ষা ইত্যাদি), বিভিন্ন রকম সামাজিক আন্দোলন, যেমন মাদকমুক্ত সমাজ, এইডস, ক্যানসার প্রতিরোধসহ বিভিন্ন গণসচেতনতামূলক কাজে কমিউনিটির পাঠাগারগুলো সক্রিয়ভাবে যুক্ত থাকে। জ্যঁ ফ্রিৎস বলেছিলেন, ‘When I discovered libraries, it was like having Christmas everyday...’ সম্ভবত একই কারণে পাঠাগারবিহীন, অর্থাৎ বইবিহীন কোনো শহরের কথা এই নিউইয়র্কের বাসিন্দারা ভাবতেই পারেন না। সে জন্যই নিউইয়র্ক শহরের কর্মব্যস্ত প্রত্যেক মানুষের কাছে বই হলো বিনোদনের জন্য একচিলতে শান্তির আশ্রয়, প্রতিদিনের বিশুদ্ধ বায়ুসেবনের এক তৃষ্ণার্ত আহ্বান।
পৃথিবীর যেকোনো ব্যস্ত শহরের মতো এই নিউইয়র্কের মানুষও জীবনের প্রতিটি সময় খরচ করেন খুব হিসাব-নিকাশ করে, মেপে মেপে। শুধু এলাকার নিজস্ব পাঠাগার অথবা ঘরের ছিমছাম পড়ার টেবিলে সাজিয়ে রাখা বইয়ের স্তূপে নিজেদের আটকে না রেখে এসব মানুষ তাঁদের চলমান অথচ স্বল্প সময়টাকে পুরোপুরিভাবে উপভোগ করতে চান। আর সে কারণেই বাসে, ট্রেনে, পার্কে, ফুটপাতে সময় আর সুযোগমতো কোলের ওপর একটা বই রেখে সুন্দর সময় পার করে দিতে সিদ্ধহস্ত বইপাগল মানুষেরা। ইদানীং স্টার বক্স নামের জনপ্রিয় কফি শপে কফির চুমুকের সঙ্গে সঙ্গে বই পড়া খুব জনপ্রিয় একটা চল হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেদিন নিউইয়র্কের সাবওয়েতে নাকবরাবর ঝুলে থাকা ছোট্ট একটা বিজ্ঞাপনের ওপর হঠাৎ করেই চোখ আটকে গেল। যাঁরা বই পড়েন না বা পড়ার সময় পান না, তাঁদের আবার বইয়ের মোহনীয় জগতে ফিরিয়ে নিয়ে আসাই ছিল বিজ্ঞাপনটির মোক্ষম উদ্দেশ্য। বিজ্ঞাপনটির শিরোনাম ছিল 14 Ways to Cultivate a lifetime Reading Habit| এ ধরনের শিরোনাম দেখে স্বাভাবিকভাবেই আগ্রহের মাত্রাটা আরও বেড়ে যাওয়ারই কথা! ভাবলাম, কী সেই ১৪টি পথের অচেনা গলি, যা মাড়ালে একজন বইবিমুখ মানুষকেও বইপ্রেমী করে তুলে দিতে পারে! পাঠক, চলুন দেখা যাক সেই ১৪ উপায়।
এক: সময় তৈরি করুন। প্রতিদিন নিদেনপক্ষে ৫ থেকে ১০ মিনিট পড়ার সময় তৈরি করতে হবে। মানসিকভাবে আপনাকে এমনভাবে তৈরি করতে হবে যে শত ব্যস্ততার মধ্যেও আপনি এই ৫-১০ মিনিট প্রতিদিন বইয়ে সময় দেবেন। যাঁদের বই পড়ার মতো এমন বাজে কাজে একেবারেই সময় নেই, তাঁদের জন্য সবচেয়ে ভালো সময় হলো সকালের নাশতা অথবা দুপুরের খাবারের সময়। এ সময়টায় আপনি বই পড়ে বোঝেন আর না-ই বোঝেন, শুধু ৫ থেকে ১০ মিনিট যদি নিয়ম করে বইয়ের ওপর চোখ বুলিয়ে যেতে পারেন, তাহলে এই আপনিই যে খুব শিগগির একজন ভালো পড়ুয়া হবেন, এ কথা দিব্যি দিয়ে বলা যায়।
দুই: যেখানেই যান, বই সঙ্গে রাখুন। আপনি যেভাবে আপনার ঘরের চাবি, ড্রাইভিং লাইসেন্স সঙ্গে রাখেন, ঠিক সেভাবেই ঘর থেকে বের হওয়ার সময় আপনি আপনার প্রিয় বইটি সঙ্গে নিয়ে নিন।
তিন: আপনি যে ধরনের বই পছন্দ করেন, তার একটা তালিকা তৈরি করুন। এই তালিকাটি আপনি আপনার ব্যক্তিগত নোটবুক, ডায়েরি অথবা জার্নালে টুকে রাখতে পারেন। এভাবে যখনই আপনি আপনার প্রিয় কোনো বইয়ের নাম শুনবেন, বইটির শিরোনাম টুকে নিন আর জুড়ে দিন আপনার প্রিয় বইয়ের তালিকায়। যেসব বই আপনার পড়া হয়ে যাবে, সেখানে একটা ক্রস চিহ্ন দিয়ে আপনি আপনার তালিকাকে প্রতিদিনই আপডেট করতে পারেন।
চার: নিরিবিলি একটা জায়গা নির্বাচন করুন। প্রচুর বন্ধুবান্ধব, হই-হট্টগোলের মধ্যে বই পড়া সম্ভব হয় না। সে কারণেই আপনি আপনার পছন্দমতো একটা নিরিবিলি জায়গা নির্বাচন করতে পারেন, যেখানে আশপাশে অন্তত কোনো টেলিভিশন, ইন্টারনেট বা এ ধরনের বিনোদনমূলক কোনো ব্যবস্থা থাকবে না।
পাঁচ: টেলিভিশন-ইন্টারনেটকে জয় করুন। মনে রাখবেন, বই পড়ার সবচেয়ে বড় শত্রু হলো টেলিভিশন। অবশ্যই নিয়মিত টেলিভিশন দেখবেন, তবে মনে রাখতে হবে, এ নেশা যেন পেয়ে না বসে। কোনোভাবেই টেলিভিশন আর ইন্টারনেটে আসক্ত যেন না হন, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। জীবনের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলো একটা মেধাহীন টিভি সিরিয়ালের ওপর হাঁ করে বসে থেকে সময় নষ্ট করবেন না।
ছয়: সন্তান ও বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে বই নিয়ে আলোচনা করুন, তাদের বই উপহার দিন আর বইবিষয়ক বিভিন্ন ধরনের মজাদার তর্কে নিজেকে জড়িয়ে রাখুন। দেখবেন, আপনি নিজেই এই তর্কে সবচেয়ে বেশি লাভবান হচ্ছেন।
সাত: বইয়ের একটা লগবুক তৈরি করুন। আপনি যেসব বই পড়ছেন, তার আদ্যোপান্ত একটা ছোট্ট ইতিহাস (কখন পড়তে শুরু করলেন, কবে শেষ হলো, বইটির ওপর আপনার মন্তব্য ইত্যাদি) এই লগবুকে টুকে রাখুন।
আট: বইয়ের দোকানে ঢুঁ মারুন। আপনার প্রিয় বইয়ের খোঁজে বিভিন্ন বইয়ের দোকানে ঢুঁ মারুন। মনে রাখবেন, শুধু বই কেনার জন্যই আপনাকে বইয়ের দোকানের শরণাপন্ন হতে হবে, তা নয়। বরং দেখবেন, আপনার বইয়ের দোকানে আসা-যাওয়াকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ধরনের বইয়ের সঙ্গে আপনি আত্মিকভাবে পরিচিত হয়ে উঠবেন। একজন বই পড়ুয়ার জন্য কাজটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
নয়: স্থানীয় পাঠাগারের সদস্য হোন। যদি সদস্য হওয়া সম্ভব না হয়, তাহলে নিদেনপক্ষে সপ্তাহে অন্তত এক দিন হলেও পাঠাগারটিতে যাওয়ার চেষ্টা করুন।
দশ: আপনার পছন্দসই বই পড়ুন। যে বই পড়লে আপনার ভালো লাগে, শুধু সেই বইগুলোই পড়ার চেষ্টা করুন। আপনার যদি বিজ্ঞান পড়তে ভালো লাগে, তাহলে সাহিত্যের পাতা না উল্টিয়ে আপনি বিজ্ঞানবিষয়ক আপনার পছন্দমতো বিভিন্ন রকম বই-পুস্তক পড়তে পারেন। মনে রাখবেন, আপনার যে বিষয়টি ভালো লাগে, সেটিই হওয়া উচিত আপনার প্রথম বিবেচ্য ও অগ্রগণ্য।
এগারো: আনন্দের সঙ্গে পড়ুন। আপনার পড়ার সময়টাকে যত সম্ভব উপভোগ করার চেষ্টা করুন। চা-কফি সঙ্গে রেখে, প্রিয় চেয়ারে হেলান দিয়ে, কম্বল জড়িয়ে অথবা যেভাবেই আপনি নিজেকে স্বতঃস্ফূর্ত মনে করেন, ঠিক সেই আনন্দের মানসিকতা নিয়ে বই পড়ার চেষ্টা করুন।
বারো: আপনি নিজের জন্য একটা অনলাইন ব্লগ তৈরি করতে পারেন। এই ব্লগে আপনি আপনার পঠিত পুস্তক নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা করতে পারেন। ব্লগে আপনি আপনার বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজনের সবাইকেই আমন্ত্রণ জানাতে পারেন।
তেরো: বই পড়ার জন্য একটি ঈপ্সিত লক্ষ্য তৈরি করুন। প্রতিবছর আপনি ৫০টি বই পড়বেন, এমন একটি ঈপ্সিত লক্ষ্য তৈরি করুন। বছরান্তে আপনি আপনার সাফল্য আর ব্যর্থতার একটা খতিয়ান তৈরি করে আপনি আপনার কাজের মূল্যায়ন করতে পারেন।
চৌদ্দ: প্রতিদিন পড়ুন। প্রতিদিন বই পড়ার চেষ্টা করুন। অতিরিক্ত কর্মব্যস্ততা, পারিবারিক দায়িত্ব, আতিথেয়তা ইত্যাদি বিষয়গুলো আমাদের গার্হস্থ্য-জীবনের অন্যতম এক বড় অংশ। মনে রাখবেন, এই ব্যস্ততার মধ্যে আপনি যদি বইয়ের একটি পাতা না-ও পড়তে পারেন, তবু অন্তত চোখ বুলিয়ে যান। তারপরও প্রতিদিন বই পড়ার জন্য সময় ব্যয় করুন।
বলতে দ্বিধা নেই, নিউইয়র্কের প্রাণচঞ্চল একটি সাবওয়েতে বইয়ের ওপর এ ধরনের গণসচেতনামূলক বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে সেখানকার মানুষের বইয়ের প্রতি শুধু ভালোবাসা আর নিষ্ঠারই প্রমাণ মেলে।
নিউইয়র্কের মানুষের এই বইপ্রীতির আড়ালে যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি মন্ত্রের মতো কাজ করে তা হলো নিউইয়র্কের রাস্তায় বিভিন্ন ধরনের বইয়ের দোকান। নিউইয়র্ক নগর তো বটেই, আশপাশের প্রতিটি শহরেই বইয়ের দোকানগুলো নিউইয়র্কের সাংস্কৃতিক পাড়ার অন্যতম অলংকার ও অহংকার। এই বইয়ের দোকানগুলোর মধ্যে বার্নস অ্যান্ড নোবেল, স্ট্র্যান্ড, বোর্ডার্স, নিউ ভয়েস বুক স্টোর, ট্রিনিটি বুক স্টোর, ম্যানহাটন বুক স্টোর, ম্যাগাজিন ক্যাফে ইত্যাদির নাম উল্লেখযোগ্য। আমেরিকার সব বড় বড় শহরেই বার্নস অ্যান্ড নোবেল, বোর্ডার্সসহ এ ধরনের বিভিন্ন ধরনের বইয়ের দোকানের অস্তিত্ব রয়েছে। তবে এই বড় বড় বইয়ের দোকানগুলোর পাশাপাশি নিউইয়র্কের রাস্তার দুপাশ ছাপিয়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে অসংখ্য ছোট ছোট বার্গেন বুক স্টোর। কপাল ভালো থাকলে এসব বইয়ের দোকান থেকে মাত্র ৫০ সেন্টস কিংবা এক ডলারে ভালো কোনো বই পাওয়া যেতে পারে। তবে এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে এগিয়ে রয়েছে সস্তা বইয়ের জন্য বিখ্যাত বইয়ের দোকান স্ট্র্যান্ড।
১৯২৭ সালে নিউইয়র্কের ৪ অ্যাভিনিউ বুক রো, গ্রিনউইচ ভিলেজে প্রথম স্ট্র্যান্ড নামের বইয়ের দোকানটির জন্ম দেন বেনিয়ামিন বস নামের এক ভদ্রলোক। পরে ১৯৫৬ সালে ছেলে ফ্রেড বস দোকানটি স্থানান্তর করে নিয়ে যান ১২ স্ট্রিট, ব্রডওয়েতে, যা এখনো সেই একই ঠিকানায় গর্বের সঙ্গে দাঁড়িয়ে আছে। এই স্ট্র্যান্ডে রয়েছে অসংখ্য নতুন-পুরোনো, দুষ্প্রাপ্য আর সস্তা দরের বই। স্ট্র্যান্ড দাবি করে, তাদের বই পাশাপাশি ইটের মতো সারিবদ্ধ করে সাজালে তা হবে ১৮ মাইলের চেয়ে বেশি লম্বা। অন্যদিকে বার্নস অ্যান্ড নোবেল, বোর্ডার্সসহ বড় বড় বইয়ের দোকানের মনন আর মেজাজের দিক থেকে রয়েছে কিছুটা ভিন্নতর ছাপ। বার্গেন বুক স্টোরের মতো এদের বই এতটা সস্তা না হলেও প্রতিটি বইয়ের দাম পাঠকের কেনার নাগালে রয়েছে। বার্নস অ্যান্ড নোবেল প্রায় সময়ই জনপ্রিয় লেখকদের দিয়ে অটোগ্রাফের আয়োজন করে থাকে। বলা বাহুল্য, উৎসাহী পাঠকেরা দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে তাঁদের প্রিয় লেখকের অটোগ্রাফ নিয়ে তবেই বাড়ি ফেরেন। সন্দেহ নেই, গোটা বিষয়টাই বই ব্যবসায়ীদের জন্য বাড়তি আয়ের একটা পথ প্রশস্ত করে দেয় কিন্তু এই উৎসবকে কেন্দ্র করে লেখক-পাঠকের যে আত্মিক মিলন ঘটে, তাকে ছোট করে দেখার সুযোগ নেই। এখানে আরেকটা বিষয় না বললেই নয়। প্রতিটি বড় বড় বইয়ের দোকানের রয়েছে নিজস্ব ওয়েবসাইট। যাঁরা সময় বাঁচিয়ে ঘরে বসে বই পেতে চান, তাঁরাই সাধারণত অনলাইনে বইয়ের ক্রয়াদেশ দেন। এ ক্ষেত্রে বার্নস অ্যান্ড নোবেল, স্ট্র্যান্ড, আমাজন ডট কমের নাম বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। নতুন, পুরোনো আর দুষ্প্রাপ্য সব ধরনের বই আপনার হাতের নাগালে পৌঁছে দিতে এই বই প্রতিষ্ঠানগুলো দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
শেষ কথা হলো, একটা ভালো বই যেমন একটা মননশীল মানুষ তৈরি করে দিতে সাহায্য করে, উন্নত রুচিবোধের খোরাক জোগায়, আবার একটা সভ্য জাতিও তৈরি করে দেয়। পুরোনো একটা চীনা প্রবাদে বলা হয়েছে, ‘যে শহরে কোনো ভালো লাইব্রেরি নেই, সে শহরের মানুষেরা অন্ধ।’ কিন্তু নিউইয়র্ক অন্ধ নয়। কারণ, নিউইয়র্কের বাসিন্দারা বই পড়েন, বই কেনেন ও বই নিয়ে তর্কে মেতে ওঠেন।