ঘুমের বড়ি ঘুমাতে সাহায্য করে না!

আমেরিকার ন্যাশনাল স্পিপ ফাউন্ডেশনের হিসেব মতে প্রতি তিনজনের একজন কমপক্ষে পরিমিত মাত্রার হলেও নির্ঘুম সমস্যায় ভুগছেন। এসব লোক ঘুমের বড়ির ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার স্নায়ুবিজ্ঞান ও মনোবিজ্ঞানের অধ্যাপক ম্যাট ওয়াকার মনে করেন ঘুমের বড়ি ঘুমের ব্যাপারে সাহায্য করে না। ‘দ্য কাট’কে তিনি বলেন, ঘুমের ওষুধ খেয়ে যে ধরনের ঘুম হয় তা স্বাভাবিক ঘুম নয়। ‘হোয়াই উই স্লিপ’ বইয়ের লেখক ওয়াকার বলেন, ঘুমের বড়ি হলো বেদনা নাশক সম্মোহক পদার্থ, যা আপনাকে ঘুমের শক্তি না দিয়ে ঘুম পাড়িয়ে দেয়।

ওয়াকার বলেন, ঘুমের বড়ি মস্তিষ্কের কিছু কোষকে প্রলুব্ধ করে তাদের মূলত নিষ্ক্রিয় করে। এগুলো কোষের বহিরাবরণে আক্রমণ করে সেগুলোকে চেতনাবিহীন অবস্থায় নিয়ে যায়। ওয়াকার বলেন, একদল বিশেষজ্ঞ ঘুমের বড়ি বা ওষুধের ওপর ৬৫টি গবেষণা পর্যালোচনা করে দেখতে পেয়েছেন ঘুমের ক্ষেত্রে ঘুমের বড়ির ভূমিকা খুবই নগণ্য।

এমন পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্টদের ঘুম হওয়ার জন্য ঘুমের বড়ির পরিবর্তে ওয়াকার এর্ব আমেরিকান কলেজ অব ফিজিসিয়ান্স’ সিবিটি-১ (ওয়ান) নামক ‘কগনিটিভ থেরাপি’ পরামর্শ দেন। এটা সনাতন থেরাপি যা কেবলমাত্র ঘুমঘুম ভাব আসলেই প্রয়োগ করতে হবে। কীভাবে ভালোভাবে ঘুমানো যায় তেমন অভ্যাস গড়তে হবে।

ওয়েবসাইটে ওয়াকার লিখেছেন বিছানায় যাওয়ার ২০ মিনিটের মধ্যে ঘুম না হওয়াটা ভালো লক্ষণ নয়। তারপর বিছানা থেকে উঠে পড়ুন এবং কম আলো জ্বালিয়ে বই পড়ুন। ঘুম ঘুম ভাব অনুভব করলে আবার আগের কক্ষে এসে ঘুমান।

আরেকটি পরামর্শ হতে পারে, ঘুমে কোনো ধরনের বিঘ্ন ঘটনায় না এমন বিশ্বাস আপনার থাকলেও বিকেলের দিকে ক্যাফিন (চায়ের পাতা এবং কফি-বীজে বিদ্যমান জৈব যৌগ) গ্রহণ কমিয়ে দিন। ওয়াকার বলেন, ক্যাফিন আপনার মস্তিষ্কের চারপাশে ঘুরতে থাকে বিধায় আপনি ঘুমানো সত্ত্বেও গভীর ঘুমে ক্যাফিন বিঘ্ন ঘটায়। বিষয়টি এমন যে আপনি অনুভবই করবেন না ক্যাফিন গ্রহণের কারণে এমনটি হয়েছে।