সর্বক্ষেত্রে বিভক্তি সৃষ্টি করেছেন শেখ হাসিনা

যুবদলের অনুষ্ঠানে সংগঠনের নেতা–কর্মীরা
যুবদলের অনুষ্ঠানে সংগঠনের নেতা–কর্মীরা

বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির প্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশাররফ হোসেন অভিযোগ করেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশে নানা ধরনের সমস্যা জনগণের ওপর চাপিয়ে দিয়েছেন। জাতীয় ঐক্যের পরিবর্তে বিভাজন সৃষ্টি করেছেন। এই বিভক্তি বন্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।
৩০ অক্টোবর রোববার রাতে জ্যাকসন হাইটসের একটি রেস্টুরেন্টে আয়োজিত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী যুবদলের ৩৯ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী এবং যুক্তরাষ্ট্র জাতীয়তাবাদী যুবদলের রজত জয়ন্তী উদ্‌যাপন উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তিনি মোশাররফ এই অভিযোগ করেন।

প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উদ্‌যাপন কমিটির আহ্বায়ক আবদুল বাতিনের সভাপতিত্বে এবং সদস্যসচিব আমানত হোসেন আমন ও সোহরাব হোসেনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানের শুরুতে পবিত্র কোরআন থেকে তিলাওয়াত করেন কয়েস আহমেদ।
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ও আমেরিকার জাতীয় সংগীত পরিবেশিত হয়। এর আগে বেলুন উড়িয়ে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করা হয়।

বহু উপদলে বিভক্ত বিএনপি এবং অঙ্গ সংগঠনগুলো বহু বছরের মধ্যে এই প্রথমবারের মতো ঐক্যবদ্ধভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করায় বৃষ্টি এ কনকনে শীত উপেক্ষা করে বিপুলসংখ্যক নেতা কর্মী এতে অংশ নেন।

মঞ্চে উপবিষ্ট অতিথিদের মধ্যে বক্তব্য দেন আবদুল লতিফ সম্রাট, সোলাইমান ভূঁইয়া, গিয়াস আহমেদ, জিল্লুর রহমান জিল্লু, মোস্তফা কামাল পাশা বাবুল, অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন, সৈয়দ কামাল সাইদ মোহন, কাজি সাখাওয়াত হোসেন আজম, জাকির এইচ চৌধুরী, আবু সাইদ আহমেদ, সাইদুর রহমান সাইদ, পারভেজ সাজ্জাদ, মোহাম্মদ বাবর উদ্দিন, অ্যাডভোকেট কাইউম চৌধুরী প্রমুখ।

অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন আলী ইমাম শিকদার, রেজাউল আজাদ ভূঁইয়া, ছিদ্দিক হোসেন রুবেল, মাজহারুল ইসলাম, শেখ হায়দার আলী, খলকু রহমান খলকু, কাওসার আহমেদ কাউসার, মাইনুল হোসেন মোহিত, বিএম বাদশা, নাজিম আহমেদ, শামীম মাহমুদ শামীম, সোহেল হাওলাদার মাকসুদ চৌধুরী, আহবাব হোসেন খোকন, শাহ আলম, হাবিবুর রহমান সেলিম রেজা, আবু তাহের, নেছার উদ্দিন শিশির, সৈয়দ এস এম রেজা, কামরুজ্জামান বাবু প্রমুখ।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে মুক্তিযোদ্ধা এবং যুবদলের প্রতিষ্ঠাকালীন ২১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটির অন্যতম সদস্য সৈয়দ কামাল উদ্দিন সাইদ মোহন স্বদেশে প্রবাসে বিএনপিকে সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের প্রেরণাকে লালন করে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।

প্রধান অতিথির ভাষণে এ বি এম মোশাররফ হোসেন বলেন, শেখ হাসিনা বাংলাদেশের নানা ধরনের সমস্যা চাপিয়ে দিয়েছেন। জাতীয় ঐক্যের পরিবর্তে বিভাজন সৃষ্টি করেছেন। সামাজিক অনৈক্য এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, কোনো বিয়ে বা অন্য কোনো অনুষ্ঠানে বিএনপির কোনো সমর্থককে দাওয়াত দিলে আওয়ামী লীগ সমর্থকেরা ওই অনুষ্ঠানে যান না। আবার আওয়ামী লীগকে দাওয়াত দিলে বিএনপির লোকেরাও যেতে চান না। এ ধরনের বিভাজন জাতির জন্য মোটেই মঙ্গলজনক নয়। সর্বক্ষেত্রে সৃষ্ট এ বিভক্তি বন্ধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। অন্যথায় কোনো জাতীয় সংকট মোকাবিলা করা কঠিন হবে। তিনি বলেন গণতান্ত্রিক পরিবেশের অভাবে বিএনপির পক্ষে কোনো আন্দোলনই গড়ে তোলা সম্ভব হচ্ছে না।

বিএনপিকে কেমন চাপে রাখা হয়েছে তার ইঙ্গিত দিয়ে বিএনপির তিনি বলেন, বেগম জিয়ার বিরুদ্ধে ২৯টি, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বিরুদ্ধে ১৫৬টি, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের বিরুদ্ধে ২১৮টি মামলাসহ মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর থেকে শুরু করে গ্রাম পর্যায়ে এমন কোনো বিএনপির নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে ২৮ হাজারের বেশি মামলায় আট লাখের বেশি কর্মীকে আসামি করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ৯২ হাজারের বেশি বিএনপি নেতা কর্মী কারারুদ্ধ হন। ৫০০ নেতা কর্মী গুমের শিকার হয়েছেন। তিন হাজার নেতা কর্মী খুন হয়েছেন।
অনুষ্ঠান চলাকালীন যুবদল কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ঢাকা থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বেগম খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমানের পক্ষ থেকে যুক্তরাষ্ট্র যুবদলের অনুষ্ঠানের সবাইকে অভিনন্দন জানান। প্রবাসী জনমত তৈরি করতে যুবদল নেতা-কর্মীদের আরও সক্রিয় ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকার পরামর্শ দেন। আলোচনা শেষে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশ নেন তুহিন, মনিকা দাস, নাজিয়া লীনা, কৃষ্ণা তিথি, শাহ মাহবুব, নুরুজ্জামান লালটু প্রমুখ।