নিউইয়র্কবাসীকে সুসংবাদ

খারাপ খবরের ভিড়ে ভালো কিছু শুনলে যে কারও মনটা আনন্দে নেচে ওঠে। ওঠাটাই স্বাভাবিক। আর সে খবর যদি প্রাত্যহিক দিনযাপনের সঙ্গে জড়িয়ে থাকে, আর্থিক সুযোগ-সুবিধা জড়িত থাকে তাহলে তো কথাই নেই। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নতুন কর আইনে নিম্ন আয়ের মানুষ, মধ্যবিত্ত সবাই কিছু না কিছু বাড়তি সুবিধা পেয়েছে। এই ফেডারেল সুবিধা তো থাকছেই। এর সঙ্গে রাজ্য সরকার ও নগর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে বেশ কিছু সুবিধা পাচ্ছেন নিউইয়র্ক নগরবাসী।
২০১৮ সালের শুরু থেকে ন্যূনতম মজুরি বাড়বে, যা নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষের জীবনে একটু হলেও স্বস্তি নিয়ে আসবে। সঙ্গে যোগ হচ্ছে কর ছাড়ের সুযোগ। এই দুইয়ের সংগতি প্রবাসের যাপিত জীবন একটু হলেও আরাম ও স্বস্তির হয়ে উঠবে, এমনটা ভাবা ভুল হবে। বাংলাদেশ থেকে দেশ, মাটি, স্বজনের বন্ধন, মায়া কাটিয়ে আমেরিকায় যাঁরা থিতু হয়েছেন, তাঁদের জন্য এটা বড় প্রাপ্তি। কারণ, নিজেদের কথা না ভেবে শুধু সন্তান বা পরের প্রজন্মের জন্য দিনাতিপাত করেন, তাঁদের সামান্য স্বস্তি, বিশেষ করে আর্থিক বিষয়ে অনেক বড় ব্যাপার। কারণ আমেরিকায়ও সন্তানকে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত করতে হলে খরচ অনেক। আর দেশের চিরায়ত ঐতিহ্য মেনে সে খরচ মা–বাবা বহন করে থাকেন। নিজেরা বিশ্রামের সুযোগ না পেলেও সন্তানের গলায় উচ্চশিক্ষার মালা পরানোর সঙ্গে সঙ্গে মাথায় ঋণের মুকুট চাপিয়ে দিতে রাজি নন প্রবাসী বাঙালি অভিভাবকেরা।
আর্থিক সুবিধাদির পাশাপাশি ১ জানুয়ারি থেকে নিউইয়র্কের কর্মজীবীরা বছরে অসুস্থ পরিবার বা স্বজনকে দেখভাল করার জন্য আট সপ্তাহের পারিবারিক সবেতন ছুটি পাবেন। কোনো কর্মী ৬ মাস চাকরির পর পারিবারিক ছুটির জন্য আবেদনের যোগ্যতা অর্জন করবেন। পরবর্তী চার বছরে নিউইয়র্কে সবেতন পারিবারিক ছুটি বছরে ১২ সপ্তাহের জন্য বৃদ্ধি করার কর্মসূচি রয়েছে। এই ছুটির সময়েও কর্মীর চাকরি ও স্বাস্থ্যবিমা অব্যাহত থাকবে। ওবামা কেয়ার তুলে দিয়ে ফেডারেল সরকার মেডিকেইড ও মেডিকেয়ার কর্মসূচি সংকুচিত করার পদক্ষেপ নিয়েছে, যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন নিম্ন ও মধ্য আয়ের লোকজন। এখন নিউইয়র্কের এই সবেতন পারিবারিক ছুটির ঘোষণা তাঁদের কিছুটা হলেও স্বস্তি দেবে।
চারপাশের তীব্র চাপের মধ্যে এইটুকু স্বস্তি মনকে ভালো করে দেয়। প্রবাসীরাও বর্তমান নিয়মের সুযোগ নিয়ে পরিবারসহ ভালো থাকবেন, বয়স্ক স্বজনদের দেখবেন, সন্তানদের উপযুক্ত মানুষ করে তুলবেন এবং এরই মাধ্যমে বৃহত্তর মার্কিন সমাজে অঙ্গীভূত হবেন, এই প্রত্যাশাই প্রথমে চলে আসে। এই বৃহত্তর মার্কিন সমাজের জন্য খারাপ, ক্ষতিকর বিষয়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। কোনো কুযুক্তি দিয়ে অন্যায়কে প্রশ্রয় দেওয়া যাবে না।