সজল আশফাকের একগুচ্ছ ছড়া

ফিলোসফি

আলি এবং ঢালি—
দুজন মিলে ফোটায় গোলাপ
একবাগানের মালি।
গোলাপ ফুলে মুগ্ধ আলি
মুগ্ধ যেমন সবাই
কিন্তু কাঁটার খোঁচায় আঙুল
একটুখানি জবাই
হলেই পরে তিক্ত খেদে
বলে যে তার মন,
ফুলের সাথে কাঁটার আবাস
খুব কি প্রয়োজন?

অন্যদিকে নিত্য ঢালির
কণ্টকিত প্রাণ
কাঁটার ভিড়ে তৃপ্ত পেয়ে
গোলাপ ফুলের ঘ্রাণ।
ফুলের মধ্যে কাঁটা নাকি
কাঁটার ভিড়ে ফুল?
ঢালির কাছে গোলাপ সুখের
আলির কাছে হুল।

আলি-ঢালির আড্ডা জমে
সন্ধ্যাবেলায় কফিতে
দুই বন্ধুর মিলের মাঝে
অমিল ফিলোসফিতে।

খুনসুটি নয় গান

টুনি বলে টোনা—
গান গেয়ে তুই শোনা,
টোনা বলে টুনি
তুই গা আগে শুনি।

টোনাটুনির খুনসুটিতে
জাগল সকল ফুলে,
ফুলের কানে সুরের কাঁপন
মনটা ওঠে দুলে।

খুনসুটি কই? টোনাটুনির
যুগল গানের সুরে
মেতে ওঠে আকাশ বাতাস
যায় ছড়িয়ে দূরে।

এত ভালো, ভালো নয়

ঘুমায়ে ছিলাম ভালো ছিলাম,
উইঠা দেখি রাস্তা নাই
তুষার ঘেরা এই সকালে
পথ চলিতে আস্থা নাই।

বুটের ভেতর দুটি মোজা
জামার নিচে গেঞ্জি গোঁজা,
চার পরতের কাপড় গায়ে
তার বাইরে জ্যাকেট,
ক্যাপ, গ্লাভসের আড়াল দিয়ে
নিজকে বানাই প্যাকেট।
থারমাল সেট ছাড়াই গায়ে
ড্রেস সংখ্যা বারো,
সেলসিয়াসে মাইনাস টেন,
নামবে পারদ আরো।

তুষার মানে ঠান্ডা এবং
আশঙ্কা দেয় উঁকি
পথ চলতে আছে আবার
পিছলে পড়ার ঝুঁকি।

সাদা মানে ভালো তবে
এত ভালো, ভালো নয়,
তুষার সাদা দেখলে কেমন
মনে জাগে শীতল ভয়।

তুষার ফুল
(লেখক আহমাদ মাযহার-এর ফেসবুক লাইভ থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে)

বাড়ি ছেড়ে আকাশ জুড়ে
মেঘের ওড়াউড়ি,
মেঘের বাড়ি তুলোধুনো
করছে কি ধুনুরি?
ভাঙা মেঘের কণাগুলোই
যেন পালক ঘুড়ি,
পাপড়ি হয়ে উড়ছে হাজার
সাদা তুষারকুঁড়ি।

এদিক সেদিক উড়ে শেষে
বসছে গাছের চুলে
পাপড়িগুলোই দল বেঁধে রূপ
নিচ্ছে তুষার ফুলে।

থোকা থোকা নরম সাদা
দু’হাতে নিই তুলে,
তুষার ফুলে মুগ্ধ হয়ে
শীতকে গেলাম ভুলে।