যুক্তরাজ্যে যাচ্ছেন না ডোনাল্ড ট্রাম্প

ডোনাল্ড ট্রাম্প
ডোনাল্ড ট্রাম্প

নানা আপত্তি ও সমালোচনার পর যুক্তরাজ্য সফর বাতিল করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাজ্যে নতুন মার্কিন দূতাবাস উদ্বোধনের লক্ষ্যে আগামী মাসে এই সফর হওয়ার কথা ছিল।

মার্কিন প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার এক বছর পরও এখনো যুক্তরাজ্যে রাষ্ট্রীয় সফরে যাননি ট্রাম্প। তাঁর বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে যুক্তরাজ্যের রাজনীতিবিদ ও নাগরিকেরা ক্ষুব্ধ। তিনি যুক্তরাজ্যে গেলে বড় ধরনের বিক্ষোভের আশঙ্কা করা হচ্ছিল।

যুক্তরাজ্য মার্কিন দূতাবাস স্থানান্তরে সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার প্রশাসনের সিদ্ধান্তে আগে থেকেই নাখোশ ছিলেন ট্রাম্প। এবার লন্ডন সফর বাতিলের পেছনে সেই কারণই সামনে আনলেন ট্রাম্প। দূতাবাসের আগের স্থানটি সবচেয়ে ভালো ছিল। ভালো স্থান থেকে ‘কমদামি’ স্থানে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ওবামা প্রশাসন, বৃহস্পতিবার রাতে টুইট করে এমনটাই অভিযোগ করেছেন ট্রাম্প। তাই তিনি নতুন দূতাবাস উদ্বোধন অনুষ্ঠানে থাকবেন না বলে জানিয়েছেন।

তবে ওবামা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের দাবি ছিল, লন্ডনের গ্রসভেনর এলাকা থেকে টেমস নদীর দক্ষিণ তীর এলাকায় দূতাবাস স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল ২০০৮ সালে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের জমানায়।

ট্রাম্পের সঙ্গে অনেক ব্রিটিশ রাজনৈতিকের সম্পর্ক বেশ ভালো না। নির্বাচিত হওয়ার আগে একবার তিনি লন্ডনের মেয়র সাদিক খানের সঙ্গে মুসলমানদের প্রবেশ করতে না দেওয়া নিয়ে বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন।

গত জানুয়ারিতে ট্রাম্পের যুক্তরাজ্য ভ্রমণ বাতিলের দাবি জানিয়ে ব্রিটিশ সরকারের উদ্দেশে আবেদন করেছিলেন দেশটির সাধারণ জনগণ। এতে সই পড়েছিল ১০ লাখেরও বেশি। অভিবাসন বিষয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের বিতর্কিত পদক্ষেপের প্রতিক্রিয়ায় তাঁকে দেশটিতে ঢুকতে দেওয়ায় নারাজি জানিয়েছিলেন ব্রিটিশ নাগরিকেরা।

তবে ওই পিটিশন নিয়ে খুব একটা আগ্রহ দেখাননি থেরেসা মে। আর ট্রাম্প দায়িত্ব নেওয়ার পর রাষ্ট্রীয় সফরে প্রথম বিশ্বনেতা হিসেবে হোয়াইট হাউসে গিয়েছিলেন থেরেসা। দুই নেতা দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের নতুন দিগন্ত উন্মোচনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। কিন্তু গত নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে থেরেসা মেকে উদ্দেশ্য করে টুইটারে ট্রাম্পের সমালোচনামূলক মন্তব্যে বেশ উত্তপ্ত হয়েছিল যুক্তরাজ্যের রাজনীতি। দেশটির রাজনীতিকদের অনেকেই তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে পাল্টা টুইট করেন। ট্রাম্পের রাষ্ট্রীয় সফর বাতিলের দাবি উঠেছিল যুক্তরাজ্যের রাজনীতিবিদদের পক্ষ থেকে।

নতুন দূতাবাস নির্মাণে খরচ হয়েছে ১০০ কোটি ডলারের বেশি। 

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ইনডিপেনডেন্ট জানিয়েছে, ট্রাম্পের যুক্তরাজ্য সফর বাতিলের ঘোষণায় হতাশা ব্যক্ত করেছেন দেশটির অভিবাসনবিরোধী কট্টরপন্থী দলের নেতা নাইজেল ফারাজ। তাঁর সঙ্গে ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী প্রচারকালেই প্রকাশ পায়। তিনি গতকাল শুক্রবার মন্তব্য করেন, ব্রিটিশ লেবার নেতা জেরেমি করবিন ও লন্ডনের মেয়র সাদিক খান ট্রাম্পবিরোধী মনোভাব ও বিক্ষোভ উসকে দিয়েছিলেন।