১১ মিলিয়ন লোকের বৈধতা

আমেরিকার প্রেসিডেন্টদের ক্ষেত্রে একটি অলিখিত ও অনানুষ্ঠানিক রেওয়াজ আছে। সেটি হলো, প্রেসিডেন্ট যদি কোনো বিষয়ে কোনো উদ্যোগ বা পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দেন তাহলে সাধারণত সেটা বাস্তবায়িত হয়। প্রেসিডেন্ট তাঁর জবান ঠিক রাখতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে থাকেন। বড় ধরনের কোনো ঘটনা না ঘটলে প্রেসিডেন্টের ঘোষণায় কোনো নড়চড় হয় না।
কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্প সেই রেওয়াজ ভেঙে ফেলেছেন। প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের কথায় মানুষের আস্থা খুবই কম। এর প্রধান কারণ তিনি দ্রুত তাঁর অবস্থান থেকে সরে আসেন। আজ যে কথা বলেন, কাল ঠিক তার উল্টোটা বলে বসেন। অভিবাসন ও মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল তোলাসহ অভ্যন্তরীণ বেশ কিছু ইস্যুতে তিনি একের পর এক দোদুল্যমান সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
অভিবাসন নিয়ে প্রথম থেকেই ট্রাম্প কড়া নীতিতে আছেন। যাঁরা আমেরিকায় অবস্থান করছেন, কিন্তু বৈধতা পাননি তাঁদের মধ্যে ইতিমধ্যেই তীব্র আতঙ্ক ধরিয়ে দিয়েছেন। বহু লোককে ইতিমধ্যেই বহিষ্কার করা হয়েছে।
এর মধ্যে নিউইয়র্ক টাইমস একটি সুখবর দিয়েছে। তারা বলেছে, ট্রাম্প প্রায় ১১ মিলিয়ন অবৈধ অভিবাসীকে বৈধতা দেওয়ার একটি প্রস্তাবে মৌন সম্মতি দিয়েছেন। এ বিষয়ে তাঁর চিন্তাভাবনা ইতিবাচক। সম্প্রতি ট্রাম্প, তাঁর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এবং ডেমোক্র্যাটসহ ২৬ জন সিনেটর সম্প্রতি বৈঠক করেছেন। সেখানে রিপাবলিকান সিনেটর লিন্ডসে গ্রাহাম বলেন, ১১ মিলিয়ন মানুষকে নাগরিকত্ব দেওয়ার বিধান প্রণয়ন করে এর একটা ইতি টানলে সেটা মানবিক হতে পারে। সেটা আমলে নিয়ে ট্রাম্প বলেন, ‘আপনারা সবাই মিলে যদি আমার দিকে উত্তাপ ঠেলে দেন, আমিও সেটা নিতে পারব।’ ট্রাম্পের বলার ধরনটা এমন যে, তিনি এতে সর্বাংশে রাজি নন। কিন্তু যেহেতু সবাই চাইছেন তাই তিনি আপাতত মেনে নিচ্ছেন। এটি অভিবাসীদের আপাতত কিছুটা স্বস্তি দিয়েছে। তবে যেহেতু ট্রাম্প আগের অনেক কথা রাখেননি, সে কারণে এ কথায় তাঁরা পুরোপুরি আশ্বস্ত হতে পারছেন না।
যেহেতু আমেরিকা অভিবাসীর দেশ; যেহেতু অভিবাসীরাই আমেরিকার রাষ্ট্র কাঠামোর সৌন্দর্য; সেহেতু অবৈধদের বিষয়ে ট্রাম্পের দ্রুত স্পষ্ট ঘোষণা দেওয়া উচিত। প্রেসিডেন্ট যাতে সুস্পষ্ট ঘোষণা দেন সে জন্য অভিবাসীদের পক্ষ থেকে জোর চেষ্টা তদবির চালানো উচিত। ট্রাম্পের মুখ থেকে এ বিষয়ে প্রকাশ্য ঘোষণা এলে, অন্তত এই ইস্যুতে তাঁর পিছু হটা কঠিন হবে।