ট্রাম্পের বর্ষপূর্তিতে নারীদের বিক্ষোভ

ট্রাম্পের ক্ষমতায় আসা আর তার প্রতিবাদে বিশ্বব্যাপী নারীদের বিক্ষোভের বর্ষপূর্তিতে শনিবার ওয়াশিংটনের শিয়াটলে নারীদের পদযাত্রা l ছবি: এএফপি
ট্রাম্পের ক্ষমতায় আসা আর তার প্রতিবাদে বিশ্বব্যাপী নারীদের বিক্ষোভের বর্ষপূর্তিতে শনিবার ওয়াশিংটনের শিয়াটলে নারীদের পদযাত্রা l ছবি: এএফপি

২০ জানুয়ারি। দিনটি ছিল ডোনাল্ড ট্রাম্পের যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনের প্রথম বার্ষিকী। এদিন, অর্থাৎ গত শনিবার থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল সরকারের কাজকর্ম কার্যত অচল হয়ে গেল। আর মার্কিন নারীরা দিনটি কাটালেন প্রতিবাদ ও বিক্ষোভে। তাঁদের সঙ্গে যোগ দেন অনেক পুরুষও।

বাজেট বরাদ্দ প্রশ্নে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে কোনো সমঝোতা না হওয়ায় শনিবার থেকে ফেডারেল সরকারের অধিকাংশ দৈনন্দিন কাজ বন্ধ। তবে ছুটির দিন হওয়ায় এই বন্ধের প্রতিক্রিয়া পুরোপুরি বোঝা যায়নি। এদিকে এক বছর আগে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের দায়িত্ব গ্রহণের প্রতিবাদে নারীদের আহ্বানে দেশজুড়ে এক অভূতপূর্ব পদযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। শনিবার যুক্তরাষ্ট্র ট্রাম্পের দায়িত্ব গ্রহণের প্রথম বার্ষিকী নয়, সেই পদযাত্রার প্রথম বার্ষিকী উদ্‌যাপন করল বিক্ষোভে, মিছিলে, গণজমায়েতে, গানে আর কবিতায়।

‘নারী পদযাত্রা’ শিরোনামে যুক্তরাষ্ট্রের অধিকাংশ বড় শহরেই শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের আয়োজন হয়। লস অ্যাঞ্জেলেসে আয়োজিত স্মরণকালের বৃহত্তম বিক্ষোভে প্রায় পাঁচ লাখ নারী-পুরুষ অংশ নেন। নিউইয়র্ক আর ওয়াশিংটনে আয়োজিত বিক্ষোভে ছিল লাখের বেশি জনতার সমাগম।

নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত পদযাত্রার কেন্দ্রস্থল ছিল ম্যানহাটনের সেন্ট্রাল পার্কের পশ্চিম পাশের কলম্বাস সার্কেলে। ঠিক এখানেই রয়েছে একটি ‘ট্রাম্প হোটেল’। দিনের প্রথমার্ধের অনুষ্ঠানে উল্লেখযোগ্যসংখ্যক নারী নেত্রী ২০১৮ সালের মধ্যবর্তী নির্বাচনের কথা স্মরণ করিয়ে দেন এবং নারীদের ওই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় উৎসাহিত করেন। বেলা দুইটা থেকে শুরু হয় পদযাত্রা। নারীদের অনেকে সংহতির প্রতীক হিসেবে পাটল বর্ণের (ইটের মতো রং) টুপি পরে এসেছিলেন। প্রায় প্রত্যেকের হাতেই ছিল ট্রাম্পবিরোধী পোস্টার। বেশ কয়েকটি ঢোলবাদক দল বিক্ষোভে অংশ নেয়, খালি গলায় সমস্বরে কোরাস গাওয়ার লোকেরও অভাব ছিল না।

এদিকে ওয়াশিংটনে ক্যাপিটল হিলে কংগ্রেসের কোনো কক্ষেই সরকারি কার্যক্রমের অচলাবস্থা থামানোর ব্যাপারে অর্থপূর্ণ আলোচনা হয়নি। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যথারীতি টুইটারে নানাভাবে ডেমোক্র্যাটদের দোষারোপের চেষ্টা করেন। হোয়াইট হাউস থেকে জানানো হয়েছে, অচলাবস্থা তুলে না নেওয়া পর্যন্ত ডেফারড অ্যাকশন ফর চাইল্ডহুড অ্যারাইভালস (ডাকা) কর্মসূচিভুক্ত আট লাখ অভিবাসী তরুণ-তরুণীর বৈধতার প্রশ্নে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সমঝোতা করবেন না। এদিকে ডেমোক্র্যাটরা বলেছেন, ‘ডাকা’ প্রশ্নের সমাধান ছাড়া চলতি অচলাবস্থা অবসানের কোনো সম্ভাবনা তাঁরা দেখেন না।

জানা গেছে, একটি দ্বিদলীয় প্রতিনিধিদল সমঝোতার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। রিপাবলিকান সিনেটর সুসান কলিন্সের নেতৃত্বে ১৯ জন রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেটিক সিনেটর এবং কংগ্রেসম্যানের ওই দলটি শনিবার দুপুরে একবার মিলিত হয়। সিনেটে রিপাবলিকান নেতা মিচ ম্যাককনেলের সঙ্গে মতবিনিময় করেন তাঁরা। একটি সূত্র বলেছে, সরকার সচল রাখতে তিন সপ্তাহের জন্য বাজেট বরাদ্দের একটি প্রস্তাব ম্যাককনেল আজ সোমবার দুপুরে সিনেটে উত্থাপন করতে পারেন।

রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেটিক উভয় দল থেকেই দাবি করা হয়েছে, তারা ‘সরকার বন্ধের’ বিপক্ষে। কিন্তু তা সত্ত্বেও কেউই নিজেদের অনড় অবস্থান বদলাতে প্রস্তুত নয়।