আয়কর রিফান্ড নিয়ে সক্রিয় জালিয়াত চক্র

আয়কর দাখিলের মাধ্যমে মোটা অঙ্কের অর্থ জালিয়াতির ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কারণ, আমেরিকার করদাতাদের কর বিবরণী বা ট্যাক্স ফাইলিং নিয়ে জালিয়াত চক্র ফের সক্রিয় হয়ে উঠেছে। অভ্যন্তরীণ রাজস্ব সেবাপ্রতিষ্ঠান বা আইআরএস জালিয়াত চক্রের ব্যাপারে মার্কিন নাগরিকদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে। একই সঙ্গে ঘটনার শিকার নাগরিকদের দ্রুত আইআরএসকে বা পুলিশকে জানাতে বলেছে। 

আইআরএস থেকে করদাতাদের জন্য ফেরত (রিফান্ড) হাজার হাজার ডলার আত্মসাতের ঘটনা চলতি বছরের আয়কর দাখিলের শুরুর প্রথম সপ্তাহেই ধরা পড়ে। করদাতাদের সামাজিক নিরাপত্তা নম্বর (সোশ্যাল সিকিউরিটি নম্বর), তাঁদের ওপর নির্ভরশীল পরিবারের সদস্যদের তথ্য এমনকি ব্যাংকের তথ্যাবলি সংগ্রহ করে কিছু জালিয়াত চক্র করদাতাদের পক্ষ থেকে অর্থ ফেরতের লক্ষ্যে আয়কর দাখিল করে। এভাবে তারা কয়েক দিনের মধ্যে আসল করদাতাদের হাজার হাজার ডলার হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
আইআরএস জানে না, ঠিক কত করদাতা শেষ পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে ১৩ ফেব্রুয়ারি আইআরএস আয়কর প্রস্তুতকারীদের উদ্দেশ্যে দ্বিতীয়বারের মতো প্রজ্ঞাপন জারি করে সাবধান করেছে আইআরএস। আয়করের প্রস্তুত করা কোনো ফাইলের তথ্য কোনোভাবে ফাঁস হয়ে গেলে ঘটনার শিকার ব্যক্তি যেন বিষয়টি দ্রুত আইআরএস, এফবিআই, স্থানীয় পুলিশ ও তাদের সেবাগ্রহণকারীদের জানান।
আইআরএসের পক্ষ থেকে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে দ্রুত অবহিত করার পরামর্শ দিয়ে বলা হয়েছে, নাগরিকদের কাছ থেকে তথ্য পেলে আইআরএস দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে। প্রকৃত গ্রাহকের নামে পাঠানো অর্থ জালিয়াতির মাধ্যমে আত্মসাৎ-প্রক্রিয়া বন্ধ এবং এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করতে পারবে। 

আইআরএস থেকে পাঠানো অর্থ করদাতার ব্যাংক হিসাবে জমা হয়। জালিয়াত চক্র ফোনের মাধ্যমে করদাতার সঙ্গে যোগাযোগ করে। নিজেদের আইআরএস এজেন্ট কিংবা কালেকশন এজেন্ট হিসেবে পরিচয় দিয়ে এই চক্রের সদস্যরা ব্যাংকে জমা দেওয়া অর্থ ফেরত দেওয়ার জন্য চাপ দেয়। তারা জালিয়াতির মাধ্যমে পাঠানো অর্থঋণ সংগ্রহকারী সংস্থায় ফেরত দেওয়ার দাবি করে। অর্থ ফেরত না দিলে তাঁদের গ্রেপ্তার করার কিংবা তাঁদের সোশ্যাল সিকিউরিটি নম্বর কালো তালিকাভুক্ত করার হুমকি দেয়।
আইআরএস কাউকে ফোন না করলে করদাতা তাঁর ব্যাংক হিসাবে অসদুপায়ে জমা হওয়া বাড়তি অর্থ ব্যাংক থেকেই আইআরএস তহবিলে ফেরত দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। এ ব্যাপারে ব্যক্তিবিশেষ হলে আইআরএসের ৮০০-৮২৯-১০৪০ এবং ব্যবসার ক্ষেত্রে ৮০০-৮২৯-৪৯৩৩ নম্বরে যোগাযোগ করার জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি কেউ মনে করেন, তিনি প্রত্যাশার চেয়ে বেশি অর্থ ফেরত পেয়েছেন, তাহলে তাঁর উচিত হবে, সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা। পরিস্থিত বুঝে প্রয়োজনে তিনি তাঁর ব্যাংক হিসাব বন্ধ করে দিতে পারেন। কারণ, ওই ব্যক্তির ব্যাংকের সব তথ্য জালিয়াত চক্রের কাছে রয়েছে। আর চেকের মাধ্যমে কোনো করদাতা প্রত্যাশার চেয়ে বেশি মাত্রায় আয়কর রিফান্ড পেলে ওই চেকে ভয়েড লিখে তা দ্রুত ফেরত পাঠাতে হবে। তবে চেকের সঙ্গে লিখে জানাতে হবে, তিনি জালিয়াত চক্রের কবলে পড়েছেন বলে মনে হচ্ছে। আর কেউ যদি ব্যাংক হিসাব থেকে ভুলে জমা হওয়া অতিরিক্ত অর্থ তুলে ফেলেন তাহলে তিনি ব্যক্তিগত চেকের মাধ্যমে আইআরএসকে সেই অর্থ ফেরত দিতে পারেন। এটিই হবে তাঁর জন্য উত্তম সিদ্ধান্ত। নইলে তিনি আইনি জটিলতায় পড়ে যেতে পারেন।